ঢাকা: খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেডের এমভি সৃজনী লঞ্চ বিক্রিতে দুর্নীতির অভিযোগে কোম্পানিটির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
রোববার (১৪ জুলাই) দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মাহমুদুল হাসান শুভ্র বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
দুদক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। মামলার আসামিরা হলেন—খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেডের সাবেক কমান্ডার ও জেনারেল ম্যানেজার (ফাইনান্স) মোহাম্মদ মতিউর রহমান, সাবেক কমান্ডার ও ভারপ্রাপ্ত জেনারেল ম্যানেজার (অ্যাডমিন) এ এম রানা, সাবেক ক্যাপ্টেন ও জি এম (প্রোডাকশন) আনিছুর রহমান মোল্লা, সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক, শওকত ইমরান এবং মেসার্স এস. বি কনস্ট্রাকশনের স্বত্বাধিকারী মো. সাইদুজ্জামান সাইদ।
মামলার বিবরণীতে বলা হয়, আসামিদের বিরুদ্ধে নীতিমালা/নিয়ম বহির্ভূতভাবে, প্রতারণা, কারচুপি ও পরস্পর যোগসজাশে অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেডের এমভি সৃজনী লঞ্চটি দাখিলকৃত সর্বোচ্চ দর ৩৫ লাখ ৮৫ হাজার ৫৫০ টাকায় বিক্রি না করে সংশোধিত দর ২৫ লাখ ১০ হাজার টাকায় বিক্রি করে ১০ লাখ ৭৫ হাজার ৫৫০ টাকা আত্মসাৎ করার অপরাধে দণ্ডবিধির ৪২০/৪০৯/১০৯ ধারা তৎসহ ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় একটি মামলা রুজু করা হয়।
অনুসন্ধান প্রতিবেদন ও সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেডের নিজস্ব ক্রয়/বিক্রয়/টেন্ডার সংক্রান্ত বিধিমালার কার্যপ্রণালী অংশের ১৬.৩ ধারায় বলা হয়েছে যে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কৃতকার্য দরদাতা পারফরম্যান্স গ্যারান্টি দিতে ব্যর্থ হলে ওই প্রতিষ্ঠানের প্রাথমিক জামানত বাজেয়াপ্ত করা হবে। এছাড়া ওই বিধিমালার দিক নির্দেশনা অংশের ২৫.৪ ধারায় বলা হয়েছে, স্থানীয় পণ্যের জন্য ৪৫ দিনের বেশি এবং আমদানিকৃত পণ্যের জন্য ১০০ দিনের বেশি পণ্য সরবরাহে বিলম্ব হলে ক্রয়াদেশ/চুক্তি বাতিল করা যেতে পারে এবং সেক্ষেত্রে পারফরম্যান্স গ্যারান্টি বাজেয়াপ্ত করা যাবে।
এছাড়া টেন্ডারের ১ নং শর্তে বলা হয়েছে, দরপত্র দাখিলের আগে ক্রয় ইচ্ছুক ব্যক্তিরা/দরপত্র দাতা বর্ণিত জলযান ভালোভাবে দেখতে পারবেন। না দেখার অজুহাতে দরপত্র দাখিলের পর কোনরূপ ওজর আপত্তি গ্রহণযোগ্য হবে না। টেন্ডার কমিটি টেন্ডারের ১ নং শর্ত ভঙ্গ করে এবং খুলনা শিপইয়ার্ডের নিজস্ব ক্রয়/বিক্রয়/টেন্ডার সংক্রান্ত বিধিমালার কার্যপ্রণালী অংশের ১৬.৩ ধারা এবং দিক নির্দেশনা অংশের ২৫.৪ ধারা অনুসরণ না করে নিজেদের উপর অর্পিত ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিশ্বাসভঙ্গ ও প্রতারণার মাধ্যমে মেসার্স এসবি কনস্ট্রাকশনকে তার দাখিলকৃত সর্বোচ্চ দর ৩৫ লাখ ৮৫ হাজার ৫৫০ টাকায় বিক্রি না করে ও তার জামানত বাজেয়াপ্ত না করে এবং নিয়মানুযায়ী দ্বিতীয় বার দরপত্র আহ্বান না করে ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স এসবি কনস্ট্রাকশনের কাছে সংশোধিত দর ২৫ লাখ ১০ হাজার টাকায় বিক্রি করে অবশিষ্ট ১০ লাখ ৭৫ হাজার ৫৫০ টাকা আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে আত্মসাৎ করেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৩ ঘণ্টা, জুলাই ১৪, ২০২৪
এসএমএকে/এমজেএফ