ঢাকা, মঙ্গলবার, ৫ ভাদ্র ১৪৩১, ২০ আগস্ট ২০২৪, ১৪ সফর ১৪৪৬

জাতীয়

পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীকে মাদক মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ

অতিথি করেসপন্ডেন্ট, সাভার (ঢাকা) | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০১ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২০২৪
পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীকে মাদক মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ

সাভার: ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বের জেরে অংশীদারের সঙ্গে হাতাহাতির ঘটনায় পারভেজ হোসেন (৩৫) নামে এক যুবককে আটকের পর মাদক মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে সাভার মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জহুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে।

পারভেজের পকেট থেকে ৭১ হাজার টাকা নিয়ে নেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে এসআই জহুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে।

তিনি আবার ৪০ হাজার টাকা পারভেজকে ফেরতও দিয়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাইফুল ও ইমন নামে দুই অংশীদারের সঙ্গে ব্যবসায় যুক্ত ছিলেন পারভেজ। ব্যবসা নিয়ে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব হলে তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতায় তা সমাধান হয়। এই সমাধানে পারভেজ সন্তুষ্ট ছিলেন না।

গত শনিবার রাত ১২টার দিকে আমিনবাজারের মানিকনগর এলাকার মমতাজ পাম্পের ওপরে হোটেল গ্রিন আবাসিকে গিয়ে ইমনকে মারধরের চেষ্টা করেন পারভেজ। সোহেল রানা নামে পুলিশের এক সোর্সকে কল দিয়ে নিজেকে রক্ষার আকুতি জানা ইমন। রাত আড়াইটা থেকে তিনটার দিকে এসআই জহুরুলসহ ৫/৬ জন পুলিশ হোটেলে এসে পারভেজকে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে আটক করে নিয়ে যায়। এ সময় পারভেজ মদ্যপ ছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, পুলিশ পারভেজকে ধরলেও তার কাছে কোনো ধরনের মাদক পায়নি।

ভুক্তভোগী পারভেজ খন্দকার আমিন বাজার এলাকার জাকির খন্দকারের ছেলে। এসআই জহুরুল সাভার মডেল থানায় কর্মরত।

পারভেজের স্ত্রী লাইজু আক্তার দাবি করেন, অফিস নিয়ে অংশীদারদের সঙ্গে দ্বন্দ্বের কারণে তারা শত্রুতা করে তার স্বামীকে পুলিশে ধরিয়ে দিয়েছেন। হোটেল গ্রিন আবাসিক থেকে ধরে নিয়ে যাওয়ার সময় পারভেজের কাছে ৭১ হাজার টাকা ছিল। সেটি ওই এসআই নিয়ে নেন। অনেক অনুরোধ করে লাইজু সেই টাকা থেকে ৪০ হাজার ফেরত নেন। পারভেজের কাছে কোনো মাদক না পেলেও তাকে ইয়াবা দিয়ে মামলা নেন এসআই জহুরুল।

তিনি আরও জানান, পারভেজ মদ্যপান করেছিলেন ঠিকই। কিন্তু তার কাছে কোনো মাদক ছিল না। প্রত্যক্ষদর্শীরাও একই কথা বলেছেন।

পারভেজের ব্যবসায়িক অংশীদার ইমন নিজেও বাংলানিউজকে এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, শনিবার রাত ১২টার দিকে পারভেজ আমাকে দেশিয় অস্ত্র দিয়ে মারধরের চেষ্টা করেন। হোটেলের কয়েকজন স্টাফকে মারধর করেন। পরে আমি পুলিশের সোর্স সোহেলকে ফোন করে বলি, ভাই আমাকে বাঁচান। রাত আড়াইটা থেকে ৩টার মধ্যে এসআই জহুরুলসহ ৫/৬ পুলিশ হোটেলে আসেন। পরে পারভেজকে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে পুলিশ নিয়ে যায়। তাকে চেক করা হয়নি। তার কাছে থেকে কোনো ধরনের মাদক উদ্ধার করা হয়নি। পুলিশ কোনো ধরনের মাদক দেখাতে পারে নাই। পারভেজের কাছে টাকা ছিল সেগুলো পুলিশ নিয়ে নেয়।

সাভার মডেল থানার এসআই জহুরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, গত শনিবার রাতে পারভেজকে ৫০ পিস ইয়াবাসহ আটক করা হয়। তিনি মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন। তার কাছে যে টাকা ছিল, তার স্ত্রীর কাছে ফেরত দেওয়া হয়েছে।

ঘটনাস্থলে একাধিক ব্যক্তি উপস্থিত ছিল। কিন্তু মাদক উদ্ধারের সাক্ষী না রাখার কারণ জানতে চাইলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, তাদের নিরপেক্ষ মনে হয়নি। এমন কি যাকে বাঁচাতে গিয়েছেন তাকেও নিরপেক্ষ মনে হয়নি।

বিষয়টি নিয়ে কথা বলার পর এসআই জহুরুল ইসলাম এ প্রতিবেদককে বহুবার কল করে সংবাদটি প্রকাশ না করার অনুরোধ জানান।

এ ব্যাপারে ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অবস) আবদুল্লাহিল কাফি বাংলানিউজকে বলেন, মাদক মামলা হয়েছিল কিনা আমার জানা নেই। বিষয়টি জানার চেষ্টা করছি।

বাংলাদেশ সময়: ২০০০ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২০২৪
এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।