বগুড়া: বগুড়ায় কোটা সংস্কারের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে আন্দোলনকারীরা। এসময় পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) দুপুর থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত বগুড়া শহরের সাতমাথায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
সরেজমিনে দেখা যায়, দুপুর থেকে আন্দোলনকারীরা সাতমাথা এলাকায় অবস্থিত হেড পোস্ট অফিস, মুজিব মঞ্চ ও বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভাঙচুর, অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্পে হামলা চালিয়ে অগ্নিসংযোগ করে এবং জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুর করে। এসময় অন্তত আটটি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এসময় পুলিশ, সাংবাদিক ও পথচারীসহ অন্তত অর্ধশত মানুষ আহত হয়েছেন।
এর আগে সকালে সরকারি আজিজুল হক কলেজে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমর্থকরা সড়ক অবরোধ করে। এসময় ককটেল হামলার ঘটনা ঘটলে কলেজের চাজন শিক্ষার্থী আহত হন। এছাড়া বগুড়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে ঢাকা-রংপুর মহাসড়ক অবরোধ করতে যাওয়ার পথে সরকারি শাহ সুলতার কলেজে হামলা চালানো হয়।
আহত শিক্ষার্থীরা হলেন—সরকারি আজিজুল হক কলেজের ফিন্যান্স বিভাগের তৃতীয় বর্ষের তাফসির, পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের সুমন, অর্থনীতি বিভাগের মামুন ও মিলন। তারা চারজন বর্তমানে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
একই সময়ে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের (শজিমেক) শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে মহাসড়কে আধাঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। দুপুরে বাম গণতান্ত্রিক ছাত্রজোট ঢাকায় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করে।
বিষয়টি জানার পর বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সজিব সাহা ও সাধারণ সম্পাদক আল মাহিদুল ইসলাম জয়ের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাদের ধাওয়া করে। এসময় জিলা স্কুল কর্তৃপক্ষ মূল ফটক গেট তালাবদ্ধ করে দেওয়া হয়। এ সময় ওই স্কুলের ভেতরে আটকা পড়ে আন্দোলনকারীরা সমর্থকরা।
কোটা সংস্কার আন্দোলনে থাকা শিক্ষার্থীরা জানায়, সকাল সাড়ে ১০টার পর কোটা সংস্কার দাবিতে বগুড়া আজিজুল হক কলেজে সামনে রাস্তা অবরোধ করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বেলা সোয়া ১১টার দিকে তারা সড়ক থেকে কর্মসূচি শেষ করে যে যার বিভাগের দিকে যায়। সাড়ে ১১টার দিকে কলেজ ক্যাম্পাসে এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। এ ঘটনায় চার শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। আহতদের উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সজীব সাহা বলেন, ছাত্রলীগের কেউ কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপরে হামলা করেনি। তারা বিনা উসকানিতে প্রথমে শাহ সুলতান কলেজে এবং পরে সাতমাথায় এসে আওয়ামী লীগ কার্যালয়সহ বিভিন্ন সরকারি ও রাষ্ট্রীয় স্থাপনায় হামলা করে অগ্নিসংযোগ করেছে। তিনি আরও বলেন, এটা কোটা আন্দোলনকারীদের কাজ নয়। শিবির ও ছাত্রদল মিলে এই হামলা ও অগ্নিসংযোগ চালিয়ে।
বগুড়ার পুলিশ সুপার জাকির হাসান বলেন, আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। যে কোনো প্রকার অপ্রীতিকর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০০১ ঘণ্টা, জুলাই ১৬, ২০২৪
কেইউএ/এসএম