শরীয়তপুর: অভাব অটনের সংসারে বড় হওয়া ব্যাংক কর্মকর্তা দুলাল মাহমুদ (৩৮)। এক যুগ হলো সুখের দেখা পায়।
পরে গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার চরখাগুটিয়া চৌকিদার কান্দি এলাকায় তার দাফন হয়। দুলাল ওই গ্রামের সিদ্দিক খালাসীর ছেলে।
সোমবার (২৯ জুলাই) দুপুরে প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে এ কথাগুলো বলছিলেন দুলালের ছোটভাই জসিম খালাসী।
জসিম আরও জানান, ঘর করার জন্য দুলাল গ্রামে এক টুকরো জমি কিনেছিলেন। বাবা-মা, স্ত্রী আর দুটি ফুটফুটে সন্তানকে নিয়ে পেতেছিলেন সুখের সংসার। তবে সেসব আজ শুধুই স্মৃতি। বুলেটের আঘাত কেড়ে নিয়েছে গোটা পরিবারের হাসি।
ছেলেকে হারিয়ে পাগলপ্রায় মা জুলেখা বিবি। তিনি বলেন, আমার বাবা আর আসবে না। মা বলে ডাকবে। এই ছেলে অনেক বড় হয়েছে। আমার ছেলে কোনো দোষ করে নাই। ছেলের হত্যাকারীদের বিচার চাই।
বাবা সিদ্দিক খালাসী বলেন, আমার ছেলেকে কেন মারলো আমরা বিচার চাই। আমার নাতি-নাতনিদের কেন এতিম করল! এদের কী হবে? সরকারের সহযোগিতা চাই।
জানা গেছে, দুলাল ২০০১ সালে পূর্ব নাওডোবা পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পাস করেন। পরে অভাবে গ্রাম ছেড়ে পাড়ি জমান মুন্সিগঞ্জ জেলায়। সেখানে একটি বাড়িতে লজিং থেকে শেষ করেন উচ্চ মাধ্যমিক। এরপর ঢাকায় শুরু করেন চাকরির সন্ধান। ১৪ বছর আগে স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংকে চাকরি হয় তার। সুদিন ফিরে আসে। আট বছর আগে বিয়ে করেন। বর্তমানে তার সংসারে সাত বছরের আদিয়াত ও সাড়ে তিন বছরের আরিশা নামের দুটি সন্তান রয়েছে।
পূর্ব নাওডোবা পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক ইদ্রিস আলী বলেন, ‘আমরা ওকে (দুলাল) কখনো দেখিনি রাজনীতি করতে বা কারো সঙ্গে উচ্চবাচ্চে কথা বলতে। অনেক গরিব পরিবারের সন্তান ছিল দুলাল। আমাদের স্কুল থেকে পাস করার পর একপর্যায়ে শুধু ভাতের অভাবে ও পড়াশোনার জন্য মুন্সিগঞ্জে চলে যায়। সেখানে লজিং মাস্টার থেকে পড়াশোনা শেষ করে এখন একটা ভালো অবস্থানে এসেছিল। হঠাৎ করে এমন ঘটনা আমাদের হৃদয় নাড়িয়ে দিয়েছে। আমরা চাই সরকার পরিবারটির পাশে দাঁড়াক।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০১ ঘণ্টা, জুলাই ২৯, ২০২৪
এসএএইচ