ঢাকা: রাজধানীতে পৃথক স্থান থেকে দুই তরুণীসহ তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। কামরাঙ্গীরচর থেকে টিপু সুলতান (২৫), কদমতলী থেকে মাহি (২০) ও যাত্রাবাড়ী থেকে আয়েশা বেগম (২৫) নামে এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
বুধবার (৩১ জুলাই) পরে তিনজনের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। দুপুরে মরদেহগুলোর ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। তাদের মৃত্যুর সঠিক কারণ জানার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসকের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশের পক্ষ থেকে।
কামরাঙ্গীরচর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নাজমুন নাহার স্বপ্না সুরতহাল প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, মৃত টিপু সুলতানের বাবার নাম তাজউদ্দীন এবং মা নাজমা বেগম। তার বাড়ি শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলায়। তিনি পেশায় শ্রমিক। বর্তমানে পরিবার নিয়ে কামরাঙ্গীরচর কয়লাঘাট তারা মসজিদ এলাকার জামালের বাড়ির চতুর্থ তলায় ভাড়া থাকতেন। খবর পেয়ে বুধবার ভোর সাড়ে চারটায় ওই বাসা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পারিবারিক অশান্তির কারণে তিনি ফ্যানের সঙ্গে ওড়না দিয়ে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ।
মাহির মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদনে কদমতলী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জিনাত রেহানা উল্লেখ করেন, মাহির বাবার নাম হুমায়ুন কবির এবং মা সালমা মরিয়ম। তার বাড়ি কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানার দৈয়ারা গ্রামে। বর্তমানে কদমতলী খানকা শরীফ রোড জাহাঙ্গীরের বাড়ির ভাড়াটিয়া ছিল। তার স্বামীর নাম আব্দুল সালাম। বুধবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ওই বাসা থেকে মাহির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মানসিকভাবে তিনি অসুস্থ ছিলেন কারণে-অকারণে রেগে যেতেন। মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে রাগ করে তিনি বাসার বারান্দায় গিয়ে রুমের দরজা লাগিয়ে দেন। এরপর বারান্দায় গ্রিলের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
অপরদিকে, আয়েশার মৃতদেহের সুরতহালে যাত্রাবাড়ী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফারজানা আক্তার উল্লেখ করেন, ফারজানার বাবার নাম মো. হানিফ এবং মা রোজিনা বেগম। তার বাড়ি কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলার বাকেরবাড়ী গ্রামে। বর্তমানে দক্ষিণ যাত্রাবাড়ী চৌদ্দ কলোনি ৩০৫/৩ নম্বর বাড়িতে ভাড়া থাকেন। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৯টার দিকে ওই বাসা থেকে তার নিথর দেহ উদ্ধার করা হয়। তার গলায় কালো দাগ রয়েছে।
তবে মৃত আয়েশার মা রোজিনা বেগম অভিযোগ করেন, পাঁচ বছর আগে গার্মেন্টস কর্মী আয়শা প্রেমের সম্পর্কে বিয়ে করেন নাজমুল মোল্লা নামে এক যুবককে। তাদের সংসারে ৩ বছর বয়সী একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। তবে গত দুই বছর আগে নাজমুল আরেকটি বিয়ে করে। এরপর থেকে তাদের পারিবারিক কলহ সৃষ্টি শুরু হতে থাকে। এক মাস আগে দক্ষিণ যাত্রাবাড়ীর ওই বাসায় দুই স্ত্রীকে নিয়েই ওঠেন নাজমুল। পারিবারিক কলহের জেরে নাজমুল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আয়েশাকে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে তার মরদেহ ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রেখেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০৯ ঘণ্টা, জুলাই ৩১, ২০২৪
এজেডএস/জেএইচ