ঢাকা: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন কালে বনশ্রীর সড়ক রঙিন হয়ে উঠেছে শিক্ষার্থীদের শান্তিপ্রিয় বিক্ষোভের গ্রাফিতিতে। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়ে সড়কের দেয়ালে শান্তি, সহিষ্ণুতা ও গণতন্ত্রের বার্তা লিখেছেন।
শিক্ষার্থীরা জানায়, তারা তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন এবং তারা একটি শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ কামনা করে। গ্রাফিতির মাধ্যমে তারা তাদের মতামত সকলের কাছে পৌঁছে দিতে চায়।
শনিবার (৩ আগস্ট) বেলা ১১ টায় সরেজমিনে রামপুরা বনশ্রী এলাকার ইউলুপ থেকে ডি ব্লক আইডিয়াল স্কুল পর্যন্ত ও দক্ষিণ বনশ্রী এলাকায় দশতলা থেকে ফালগুনি চেক পর্যন্ত ও মেরাদিয়া হাট থেকে কাজী বাড়ি সড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থী সড়কে গ্রাফিতি আকছেন ও শান্তি প্রিয় বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছেন।
শান্তিপূর্ণ এই বিক্ষোভে শিক্ষার্থীরা রঙিন ও চিত্রকর্মের মাধ্যমে তাদের মতামত প্রকাশ করেছে। এসময় বনশ্রী
এলাকার সাধারণ মানুষ, অভিভাবকসহ ছোট- বড় সব বয়সের মানুষ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে অংশ নেয়।
শিক্ষার্থীদের আকা গ্রাফিতিতে শিক্ষার মান উন্নয়ন, দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলন, পরিবেশ সুরক্ষা এবং অন্যান্য সমসাময়িক বিষয়গুলোকে উঠে আসতে দেখা গেছে।
এদিকে খোজ নিয়ে জানাযায়, বনশ্রী এলাকায় বিক্ষোভে ইস্ট ওয়েস্ট, ব্রাকসহ ঢাকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ও স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। অনেকের বিশ্ববিদ্যালয় বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দূরে হলেও বনশ্রী থাকার সুবাসে সে সকল শিক্ষার্থীরাও বিক্ষোভে অংশ নেয়।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে গ্রাফিতি আকতে দক্ষিণ বনশ্রী এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা গৃহিণী ফাতিমা বেগম সঙ্গে তার স্কুলে পড়ুয়া ছোট মেয়ে ও বোনকে নিয়ে দক্ষিণ বনশ্রী এলাকার দশতলা মার্কেটের সামনে আসেন।
কথা হলে ফাতিমা বেগম বাংলানিউজকে বলেন, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একত্বতা প্রকাশ করতে আমাদের এখানে আসা। শিক্ষার্থীরা আমাদেরই সন্তান, আমরা তাদের অভিভাবক। অভিভাবকের দায়িত্ব বোধ থেকে কেউ যেন আমাদের সন্তানদের উপর হামলা করতে না পারে এবং তাদেরকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে দুষ্কৃতকারী না বানাতে পারে সে জন্য আসা। আন্দোলনে বহু শিক্ষার্থীসহ সাধারণ জনগণকে জীবন দিতে হয়েছে। অধিকারের কথা বলতে গিয়ে যেখানে বাধাপেতে হয় এমন দেশ আমরা চাইনা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী বাংলানিউজকে বলেন, আমরা শুধু বিক্ষোভ করতে চাই না, আমরা আমাদের কথা বলতে চাই। গ্রাফিতি আমাদের জন্য সেই মাধ্যম। আমরা চাই আমাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে সরকার সচেতন হোক। এই গ্রাফিতি আমাদের সেই চেষ্টার একটি প্রকাশ।
এদিকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ডাকা বিক্ষোভ কর্মসূচিকে ঘিরে রাজধানীর সড়ক গুলো ছিল অনেকটাই ফাকা। গণপরিবহন চললেও অন্যদিনে তুলনায় সড়কে মানুষের সংখ্যা ছিল কম। সড়কে অন্য সময়ের তুলনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সংখ্যা ছিল খুবই সামান্য। রামপুরা আবুল হোটেল থেকে কুড়িল বিশ্বরোড পর্যন্ত প্রগতি সড়ণি সড়কে কোন ট্রাফিক পুলিশকে দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায় নি। এ পথে কোথাও শিক্ষার্থীদের প্রধান সড়ক অবরোধ করেতে দেখা যায়নি।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৭ ঘণ্টা,আগস্ট ৩,২০২৪
ইএসএস/এমএম