খুলনা: কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় পুলিশ সদস্য নিহত হওয়ার পর থেকে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে খুলনায়। শুক্রবার (২ আগস্ট) সন্ধ্যায় মোহাম্মদনগর এলাকায় আন্দোলনকারীদের পিটুনিতে নিহত হন সুমন ঘরামী।
এ ঘটনার পর থেকে পুলিশের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। শনিবার (৩ আগস্ট) বিকেল ৪ টা পর্যন্ত খুলনার গুরুত্বপূর্ণ মোড় কিংবা সড়কে পুলিশের কোনো উপস্থিতি নেই। ট্রাফিক পুলিশও সড়কে দায়িত্বপালন করছেন না।
কোটা আন্দোলনে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে যেখানে এতদিন খুলনার মোড়ে মোড়ে সাঁজোয়া যান, জলকামানসহ প্রস্তুত দেখা গেছে পুলিশকে, সেখানে শনিবারের চিত্র ভিন্ন।
কেন পুলিশের কোনো কার্যকলাপ নেই সে ব্যাপারে বাহিনীর কোনো কর্মকর্তা বক্তব্য দেননি।
নিরালা এলাকার ইজিবাইক চালক মো. এজাজ বলেন, সকাল থেকে গল্লামারী, নিরালা, ময়লাপোতা, রূপসা, শিববাড়ি মোড়, সোনাডাঙ্গা বাস স্ট্যান্ড এলাকায় যাত্রী নিয়ে কয়েক দফা যাওয়া আসা করেছি। বিকেল ৪টা পর্যন্ত সড়কে পুলিশ সদস্যদের দায়িত্ব পালন করতে দেখিনি।
কোটা আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও হত্যার প্রতিবাদে বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে খুলনার শিববাড়ির মোড়ে মানববন্ধন করেছেন নর্দার্ন ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির ছাত্র ও শিক্ষকরা। এসময় তারা ছাত্রছাত্রীদের বুকে আর যেন একটা গুলি না করা হয় সে আহ্বান জানান।
এর আগে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় খুলনায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশ কনস্টেবল সুমন ঘরামীকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় শুক্রবার (২ আগস্ট) রাতে লবণচরা থানার এসআই মোস্তফা সাকলাইন বাদী হয়ে মামলা করেছেন। এ মামলায় অজ্ঞাত পরিচয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
লবণচরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমতাজুল হক বলেন, এ মামলায় কেউ গ্রেপ্তার নেই।
নিহত সুমন ঘরামীর মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। শনিবার বিকেলে খুলনা পুলিশ লাইনে নিহত সুমনের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি) কমিশনার মো. মোজাম্মেল হকসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এরপর সুমন ঘরামীর গ্রামের বাড়ি বাগেরহাট জেলার কচুয়ায় তার শেষকৃত্য সম্পন্ন করতে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয়।
শনিবার বিকেল ৪টায় সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের খুলনার জিরো পয়েন্ট এলাকায় জড়ো হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৩ ঘণ্টা, আগস্ট ৩, ২০২৪
এমআরএম/এমজে