ফেনী: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা সরকার পতনের এক দফা কর্মসূচির সমর্থনে ফেনীতে ছাত্র-জনতার অবস্থান কর্মসূচিতে হামলা চালিয়েছে আওয়ামী লীগ। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত (বিকেল ৬টা) এতে ৭ জন নিহত হয়েছেন।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী, পথচারী ও সাংবাদিকসহ আহত হয়েছেন আরও দুই শতাধিক। ফেনী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. আসিফ ইকবাল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
রোববার (৪ আগস্ট) দুপুর দেড়টা থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মহিপাল এলাকায় এ সংঘর্ষ শুরু হয়।
নিহত সাতজন হলেন, ফেনী সরকারি কলেজে অনার্স ভর্তিচ্ছু ইশতিয়াক আহমেদ শ্রাবণ, সদর উপজেলার ফাজিলপুর কলাতলী গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে ছাইদুল ইসলাম, পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ কাশিমপুর এলাকার সিরাজুল ইসলামের ছেলে শিহাব উদ্দিন, দাগনভূঞা থানার জয় লস্কর এলাকার সারওয়ান জাহান টিপুর ছেলে সরওয়ার জাহান মাসুদ, সোনাগাজী উপজেলার দেলোয়ার হোসেন চরমজলিশ পুর মান্দারি গ্রামের শাকিব, লক্ষ্মীপুর এলাকার মালেকের ছেলে সাইফুল ইসলাম ও আরাফাত।
সরেজমিনে দেখা যায়, দুপুর দেড়টার দিকে শহরের ট্রাংক রোড থেকে দলবল নিয়ে শহীদ শহিদুল্লাহ কায়সার সড়ক হয়ে মহিপাল যান আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় সড়কে গুলি তাক করে সাংবাদিকদের একটি ব্যাংকের ভেতর তাড়া করে মোবাইল, প্রেস জ্যাকেট ও আইডি কার্ড কেড়ে নিয়ে মারধর করেন তারা। পরে মহিপাল এলাকায় পৌঁছালে ছাত্র-জনতার ওপর অতর্কিত গুলি ও হামলা চালায় নেতা-কর্মীরা। এক পর্যায়ে ক্ষমতাসীন দলের আরেকটি পক্ষ শহরের ইসলামপুর রোডে বিএনপি নেতা-কর্মীদের লক্ষ্য করে গুলি ও হামলা করে।
এর আগে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে মহিপাল ফ্লাইওভারের নিচে অবস্থান নেন ছাত্র-জনতা। একপর্যায়ে আন্দোলনকারীদের একটি অংশ মহিপাল ফ্লাইওভারের দক্ষিণাংশে অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করেন। বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা ক্ষমতাসীন দলের বিভিন্ন ব্যানার- ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলেন তারা। সড়ক অবরোধ করায় বন্ধ থাকে যানচলাচল।
রেজাউল করিম নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা প্রকাশ্যে গুলি নিয়ে এসে হামলা চালিয়েছে। অনেকে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আপাতত আর কিছু বলতে পারছি না।
প্রসঙ্গত, শনিবার (৩ আগস্ট) সরকার পতনের একদফা দাবি ঘোষণা করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এর আগে, রোববার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনের ডাকও দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৮ ঘণ্টা, আগস্ট ৪, ২০২৪
এসএইচডি/এইচএ/এসএএইচ