গাজীপুর: শ্রীপুর উপজেলার মুলাইদ এলাকার সংঘর্ষে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) এক সদস্যসহ সাতজন নিহত হয়েছেন। অর্ধশতাধিক আন্দোলনকারী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
সোমবার (৫ আগস্ট) সকাল থেকে বিকেল রাত পর্যন্ত এ ঘটনা ঘটেছে।
নিহতদের মধ্যে পাঁচজনের নাম জানা গেছে। তারা হলেন- কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার মৃত আসাদের ছেলে সিফাতউল্লাহ (২২), শ্রীপুর পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের দারগারচালা গ্রামের শুক্কুর আলমের ছেলে শরীফ আহমেদ (২০), ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার তাজুল ইসলামের ছেলে কাওসার (২৮), ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল উপজেলার আব্দুল হাইয়ের ছেলে জুয়েল মৃধা (৩০) ও বিজিবির নায়েক মোহাম্মদ আব্দুল আলিম শেখ (৪৬)।
গুলিবিদ্ধরা হলেন- আজাহার (৩০), ফারুক (২৬), মারুফ (১৯), ইদ্রিস (৩০), রিয়াজ (২৪), স্বপন (৩৫), বাবুল (২১), জাকির (৫২), শামীম (৩০), রায়হানসহ (২৮) অজ্ঞাত অর্ধ শতাধিক। এছাড়া বিজিবির দাবি, এতে তাদের ১০ সদস্য গুরুতর আহত হয়েছেন।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সকাল ১০টার দিকে ময়মনসিংহ বিভাগে নিয়োজিত বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যরা কয়েকটি বাসে করে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ধরে ঢাকায় যাচ্ছিলেন। আন্দোলনকারী ছাত্র ও জনতা দুটি বাসে থাকা প্রায় ৮০ বিজিবি সদস্যকে মুলাইদ এলাকার আটকে দেয়। এ সময় আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতা তাদের ভারতীয় পুলিশ বা বিএসএফ সদস্য ও তারা হিন্দি কথা বলে প্রচার করে। একপর্যায়ে বিজিবি সদস্যের কাছে থাকা কিছু অস্ত্রসহ গোলাবারুদ আন্দোলনকারী ছাত্র ও জনতা বস্তায় ভরে তাদের নিয়ন্ত্রণে নেয়। এরপর আন্দোলনকারী ছাত্র ও জনতা বিজিবি সদস্যদের ওপর চড়াও হয়। এসময় বিজিবি সদস্যরা আত্মরক্ষার্থে গুলি করে। দুপুর থেকে কয়েক ধাপে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এ সময় ছয় আন্দোলনকারী ও এক বিজিবি সদস্য নিহত হন। গুলিবিদ্ধ হন অর্ধশতাধিক।
অবরুদ্ধ থাকার খবর পেয়ে আশপাশের ক্যান্টনমেন্ট থেকে সেনাবাহিনীর কয়েকটি টিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বিজিবি সদস্যদের উদ্ধারে কাজ শুরু করে। তারা আন্দোলনকারীদের বুঝিয়ে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। বিজিবি সদস্যদের উদ্ধারে বিকেলে কয়েকটি হেলিকপ্টারও আকাশে চক্কর দেয়। রাত সাড়ে ৮টার দিকে আশপাশের পরিবেশ থমথমে অবস্থা বিরাজ করে।
মাওনা চৌরাস্তার আলহেরা মেডিকেল সেন্টারের ব্যবস্থাপক মো. ওবায়দুল্লাহ বলেন, এ পর্যন্ত হাসপাতালে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত অবস্থায় পাঁচজনের মরদেহ এসেছে। তাদের মধ্যে তিনজনের নাম পরিচয় জানা গেছে। এছাড়াও অপর দুজনের পরিচয় শনাক্ত হয়নি। একজনের মরদেহ উপজেলা মাওনা এলাকায় তার আত্মীয় বাড়িতে নেওয়া হয়েছে। গুলিবিদ্ধ ২২ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। দুপুরের পর থেকে গুলিবিদ্ধ ২২ জনসহ মোট ৫০ জনকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. জারিন ফারা বলেন, বিকেলের দিকে ৪ ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে এসে চিকিৎসা নিয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩২ ঘণ্টা, আগস্ট ৫, ২০২৪
আরএস/এমজে