ঢাকা: নতুন সরকারে থাকার বিষয়ে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক এবং ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেডের চেয়ারম্যান আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, এখন পর্যন্ত আমাকে কেউ কিছু বলেনি, ডাক পেলে দেখা যাবে। তবে সেখানে কারা কারা আছেন, কীভাবে থাকবেন, তারা কতখানি গ্রহণযোগ্যতা পাবেন—এসব কিছুর ওপর নির্ভর করবে।
সোমবার (০৫ আগস্ট) রাতে বাংলানিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।
আহসান এইচ মনসুর বলেন, আমার মতে পরবর্তী সরকার গঠন করতে হলে সেখানে কিছু পলিটিক্যাল এক্সপার্ট থাকবেন, তারা সংসদীয় কিছু বিষয় রিভিউ করবেন। আর কিছু লোক থাকবেন যারা অর্থনীতি নিয়ে কাজ করবেন।
নতুন যে সরকার হবে সেখানে আপনার নাম শোনা যাচ্ছে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমিও একটি তালিকা দেখেছি, শুনেছি। এখানে আমার কোনো মতামত নেই। দেখলাম, শুনলাম। তবে তালিকায় যে লোকগুলোর নাম দেখলাম আমার কাছে মনে হয়েছে তারা সম্মানিত ব্যক্তি। তারা যদি আসেন তাহলে দেশের জন্য ভালো হবে বলে আমি মনে করি।
ডাক পেলে যাবেন কি না জানতে চাইলে আহসান এইচ মনসুর বলেন, এখন পর্যন্ত আমাকে কেউ কিছু বলেনি, ডাক পেলে দেখা যাবে। এই মুহূর্তে এ বিষয়ে কিছু বলতে পারছি না। তবে এ বিষয়ে সব কিছু নির্ভর করবে সেখানে কারা কারা আছেন, কীভাবে থাকবেন, তারা কতখানি গ্রহণযোগ্যতা পাবেন। আসলে সব কিছু একটা টিমওয়ার্কের মতো। সবার সমমনা হতে হবে, কে অর্থনীতির বিষয়, কে রাজনীতির বিষয়, কে আন্তর্জাতিক বিষয় দেখবে।
তিনি বলেন, দেশের অর্থনীতি ভালো হওয়াটা স্বাভাবিক হবে, যদি কিছুটা দুর্নীতি কমে, টেকনোক্র্যাটিভ সরকারের নেচার যদি তারা দেখাতে পারে তাহলে দেশ ঘুড়ে দাঁড়াবে। সেটা নির্ভর করবে সরকারের ওপর। সরকার কী করতে চায়, ভেতরের লোকজন কীরকম, তারা কতখানি দক্ষ, কতখানি রাষ্ট্রীয় কার্যকলাপ সম্পর্কে অবহিত, সেটার ওপর। কাজটা কঠিন তবে করা সম্ভব।
সরকার পতনের পর রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করা হচ্ছে, বিষয়টিকে কীভাবে দেখছেন জানতে চাইলে এই অর্থনীতিবিদ বলেন, এটা মোটেও কাম্য নয়, এখানে সামরিক বাহীনির সুরক্ষা দেওয়া উচিৎ ছিল। একই সাথে রাষ্ট্রীয় কোন ভবন যেমন, গণভবন, সংসদভবন এগুলো সব আমাদের রাষ্ট্রীয় সম্পদ। কোনোভাবেই এগুলো ধ্বংস করতে দেওয়া উচিৎ নয়। আমি ব্যক্তিগতভাবে দুঃখিত, কারণ এগুলি আমাদের রাষ্ট্রীয় সম্পদ। গণভবন তো শেখ হাসিনার নয়, এটা আমাদের রাষ্ট্রীয় সম্পদ, সংসদ ভবন আমাদের ঐতিহ্যবাহী সম্পদ, মন্দির, মসজিদ ধ্বংস এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
তিনি বলেন, সামরিক বাহিনীকে এসব বিষয়ে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। কোনো মতেই কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা সরকারি প্রতিষ্ঠানের জানমাল ধ্বংস বা লুট করতে দেওয়া যাবে না। এখনই সেনাপ্রধানকে এসব বিষয়ে কঠোরভাবে বক্তব্য দেওয়া উচিৎ। তাদের আরও তৎপর হতে হবে, তাদের ইন্টেলিজেন্সি দিয়ে।
আহসান এইচ মনসুর বলেন, পুলিশ কিন্তু এখন গায়েব হয়ে গেছে। এই পুলিশ বাহিনীকে আমাদের পুনরায় সাজাতে হবে। প্রয়োজনে কিছু লোককে বাদ দিতে হবে। কেননা আমাদের পুলিশ বাহিনী লাগবে। এখন যেমন প্রফেশনাল আর্মি ফোর্স আছে সেরকম প্রফেশনাল পুলিশ ফোর্স তৈরি করতে হবে। পার্টিভিত্তিক পুলিশ কাম্য নয়। আইন মেনে দ্রুত একটি পুলিশ ফোর্স করতেই হবে। থানা পোড়ানো, ভবনে আগুন ইত্যাদি এখন আর কাম্য নয়। যেহেতু সরকার পতন হয়ে গেছে, সামরিক বাহিনীকে এ ব্যাপারে কঠোর হতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০১০০ ঘণ্টা, আগস্ট ০৬, ২০২৪
জিসিজি/এমজেএফ