ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

‘দুনিয়া তো শান্ত হয়েছে,আমার মনিরে কেউ ফিরায় দিতি পারবা’

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৮ ঘণ্টা, আগস্ট ৬, ২০২৪
‘দুনিয়া তো শান্ত হয়েছে,আমার মনিরে কেউ ফিরায় দিতি পারবা’

মাগুরা: ‘আমার মনি দুনিয়া ছেড়ে চলে গেল কেন? আমি কেমন বাচে থাকবো? পুলিশ আমার মনির বুকটা গুলি করে ঝাজরা করে দিছে। আমার মনি কোন মিটিং মিছিলে যায় না।

আমার মনিরে কেউ ফিরায় দিতে পারবা?’ এই কান্না জড়িত কণ্ঠে ছেলে নিহত বিলাপ করেছিলেন মা খাজিদা আক্তার মালা।

নিহত মিঠু বিশ্বাস মারুফ মাগুরা সদর উপজেলা আলাইপুর গ্রামের মো: শাহাজান ইসলাম ছেলে। কর্মসূত্রে তিনি পরিবার নিয়ে দীর্ঘ দিন ঢাকা সাভার এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। পরিবার ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, গতকাল সোমবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে শেখ হাসিনার পদ ত্যাগের কথা শুনে ঘর থেকে বের হয়। বাসার কাছে থাকা একটি মসজিদে জোহরের নামাজ আদায় শেষে ফেরার পথে পুলিশ এলোপাতাড়ি গুলি ছড়ে। এতে মিঠু বুকে গুলি বৃদ্ধ হয়ে মাটিয়ে লুটিয়ে পড়ে। তারপর তাকে ধরে অস্ত্র ঠেকিয়ে আবারও একটি গুলি করা হয়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে সাভার এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তার মৃত ঘষোণা করেন।

আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় সদর উপজেলা আলাইপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে মিঠুর নামাজের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

এদিকে আরেক ঘটনায় মাগুরা শহরের বরুনাতৈল পশ্চিম পাড়া এলাকার আলামিন বিশ্বাস (৪০) নামের এক ব্যাক্তি পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছে। নিহত আলামিন বরুনাতৈল এলাকার আলেক বিশ্বাসে ছেলে। নিহত আলামিন দীর্ঘ দিন ধরে ঢাকার সভার এলাকায় হকারির ব্যবসা করেছিলেন।

নজরুল ইসলামের নামের এক ব্যাক্তি জানান, শেখ হাসিনার দেশ ত্যাগের কথা শুনে সভার এলাকায় আনন্দ উল্লাস শুরু হয়। এ সময় আলামিন রাস্তার পাশে ফুটপাতে দাড়িয়ে ছিল। পুলিশ হঠাৎই এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে থাকে। এতে আলামিনের পেটের নিচে অংশে গুলি লাগে। স্থানীরা তাকে উদ্ধার করে সভার এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে তার মৃত্যু হয়। তিনি আরো বলেন, অভিভাবক না থাকায় হাসপাতালের বারান্দায় শুয়ে রাখা হয়। এ কারণে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় মাগুরা এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৯ জন। নিহতরা হলেন জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক মেহেদী হাসান রাব্বী (২৮), মহম্মদপুরের বালিদিয়া গ্রামের কালু মিয়ার ছেলে মো. সুমন শেখ (২৮), শ্রীপুর উপজেলার রায়নগর গ্রামের মস্তোফার ছেলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালের ইসলামী ইতিহাস বিভাগের ছাত্র মো. ফরাহাদ হোসেন (২৫) ও  মহম্মদপুর উপজেলা সদরের ইউনুস আলীর ছেলে আহাদ হোসেন (১৮)। মাগুরা সদর উপজেলা আযমপুর গ্রামের আবু কালাম মোল্ল্যার ছেলে রাজু আহমেদ (২৬) শ্রীপুর উপজেলা  দ্বারিয়াপুর ইউনিয়ন বরই চারা গ্রামের মৃত আক্কাস মোল্লার ছেলে মো: মোত্তাকিন বিল্লাহ (২৮) অপর দিকে শ্রীপুর উপজেলা সব্দালপুর ইউনিয়ন নহোটা গ্রামে এম এ রাজ্জাকের ছেলে আসিফ ইকবাল (২৯) কোটা আনন্দোল ছাত্রদের ঢাকা বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে নিহতের ৯জনের সংখ্যা পাওয়া গেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৮ ঘণ্টা, আগস্ট ০৬,২০২৪
এমএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।