ঢাকা: সরকার পতন হয়েছে। নতুন করে দেশ গড়ার প্রত্যয় তরুণদের।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাজধানীর মিরপুর-১০ নম্বরে সড়কের শৃঙ্খলা রক্ষা ও গ্রাফিতি আঁকা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলাপ করে এ কথা জানা গেছে।
শিক্ষার্থীরা জানান, সকাল থেকে তারা সড়কের শৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করছেন। তাদের মধ্যে অনেকে মিরপুর ১০ থেকে ১২ নম্বর এলাকার বিভিন্ন দেয়াল, সড়কের ডিভাইডার, ব্যারিকেড ও মেট্রোরেলের পিলারগুলোয় গ্রাফিতি আঁকছেন।
তারা বলেন, দেয়াল, ডিভাইডার, ব্যারিকেড ও মেট্রোরেলের পিলারগুলোয় আমাদের কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় নানা মন্তব্য, স্লোগান লেখা হয়েছিল। এগুলো স্বাধিকার আন্দোলনের একটি অংশ ছিল। আমরা জনতাকে সঙ্গে দিয়ে নতুন করে দেশ স্বাধীন করেছি। স্বৈরাচারের পতন হয়েছে। এখন আর এই মন্তব্যগুলোর প্রয়োজন নেই। দেশ এগিয়ে যাবে, আমরা নিয়ে যাবো। যে কারণে এই লেখাগুলো মুছে দিয়ে আমরা গ্রাফিতি আঁকছি।
রাজধানীর ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ইউআইইউ) শিক্ষার্থী ফাইজান বলেন, গত কয়েকদিনের কালো অতীত মুছে আমরা নতুন দিগন্ত লেখার চেষ্টা করছি। আমরা যা চেয়েছি, অনেকাংশে তা পেয়েছি। এখন সামনে এগিয়ে যাওয়ার দিন। এ দিনগুলোয় কোনো বাজে কথা আমরা আর মেনে নেব না।
গ্রাফিতি আঁকা নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থী ফারহানা খন্দকার বলেন, চারুকলার ছাত্রী হিসেবে আসিনি। এসেছি একজন বাংলাদেশি হিসেবে। এ দেশ আমার, আমাদের। কোটা সংস্কার থেকে শুরু করে স্বৈরাচার সরকার পতনের আন্দোলনে পতিত ক্ষমতাধারীরা আমাদের সঙ্গে যা করেছে, তা বাঙালির মনে গেঁথে থাকবে। কিন্তু, আমাদের তো রাষ্ট্র সংস্কার করতে হবে। যে কারণে আমরা আমাদের বিভিন্ন লেখা দেয়ালগুলো থেকে মুছে ফেলছি। আমাদের প্রত্যয় আমাদের মেধা-মনন থেকে আসবে। নতুন কোনো স্বৈরাচারের জন্ম না হোক, তা যেন মানুষ আমাদের গ্রাফিতি আর্ট দেখে মনে রাখে।
নাসির উদ্দিন নামে এক পথচারী বলেন, ছাত্রদের এমন কর্মকাণ্ড অবশ্যই প্রশংসার। তারা এতদিন একটা যুদ্ধে ছিল। তারাই এখন দেশ সংস্কার করছে। তারা রাস্তা পরিষ্কার করেছে। বিভিন্ন স্থাপনা পরিষ্কার করেছে। এখন গ্রাফিতি আঁকছে, এটাই তো দেশের মানুষের বিকাশের উদাহরণ। এতদিন যা হয়েছে, তা কালো অধ্যায়। শিক্ষার্থীরা সেসব মুছে ফেলে নতুন দিগন্তে লাল-সবুজের পতাকা ওড়াবে।
এর আগে, বেশ কয়েকদিন ধরে চলা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের এক দফা দাবির মুখে সোমবার (৫ আগস্ট) পদত্যাগ করেন শেখ হাসিনা। এরপর বেলা আড়াইটার দিকে বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে দেশ ছাড়েন তিনি। এদিকে দেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের প্রক্রিয়া চলছে। নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন হবে। বৃহস্পতিবার রাতেই এ সরকারের শপথ নেওয়ার কথা রয়েছে। শপথ অনুষ্ঠান হবে বঙ্গভবনে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫০০ ঘণ্টা, আগস্ট ৮, ২০২৪
এমজে