ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

শহীদদের নাম না নেওয়ায় ক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা, সতর্ক করলেন বিএনপি-কেএমপি কমিশনারকে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১৩ ঘণ্টা, আগস্ট ৯, ২০২৪
শহীদদের নাম না নেওয়ায় ক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা, সতর্ক করলেন বিএনপি-কেএমপি কমিশনারকে

খুলনা: খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) সদর দপ্তরে খুলনার রাজনীতিবিদ ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত সভার প্রথমে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদদের নাম না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন শিক্ষার্থীরা।

সমন্বয়ক সাজ্জাদুল ইসলাম আজাদ বলেন, আবু সাঈদ ভাই, মুগ্ধ ভাইসহ অন্যান্য শহীদদের নাম না নিয়ে কীভাবে মিটিং শুরু করতে পারলেন। প্রয়োজনে ২০ বছর এ জাতীয় সরকার থাকবে। তবে বিএনপি বা আওয়ামী লীগের মতো দলকে আমরা ক্ষমতায় চাই না। আওয়ামী লীগ ক্ষমতা ছাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তারা লুটপাট শুরু করে দিয়েছে। আমরা এ দেশটা সাজাতে চাই, নষ্ট করতে চাই না।

খুলনা শহরে নৈরাজ্য, চাঁদাবাজি ও লুটপাটের বিষয়ে বিএনপি নেতাদের নাম শোনা যাচ্ছে এমন অভিযোগ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা বলেছেন, আপনারা ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেন, সতর্ক হয়ে যান। না হলে আপনাদের অবস্থাও আওয়ামী লীগের মতো হবে। এ সময় শিক্ষার্থীরা খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি) কমিশনার মোজাম্মেল হকের পদত্যাগ দাবি করেন।

এর পরিপ্রেক্ষিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনে পুলিশের কর্মকাণ্ডের জন্য শিক্ষার্থীদের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চান কেএমপি কমিশনার মো. মোজাম্মেল হক।

এ সময় শিক্ষার্থীদের নানামুখী প্রশ্নের পরিপ্রেক্ষিতে মোজাম্মেল হক বলেন, আমাদের কেন এগুলো করতে হয়েছিল, এই আইনের অধীনে থাকলে তোমরা বুঝতে। এ নিয়ে আমি তোমাদের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চাই।

সভায় উপস্থিত ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আল মুজাহিদ আকাশ। তিনি পুলিশ কমিশনারের কাছে প্রশ্ন করেন, স্বাধীন বাংলাদেশে কেন আপনারা আমাদের ওপর গুলি চালালেন। ছাত্র-জনতার ওপরে গুলি চালানোর আপনারা কে? কার নির্দেশে আপনারা আমাদের ওপর গুলি চালালেন?

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি শফিকুল আলম মনা ও সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম তুহিন। পুলিশের সঙ্গে সভায় তারা উপস্থিত থাকায় ক্ষোভ জানান শিক্ষার্থীরা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সহ-সমন্বয়ক সাজিদুল ইসলাম বাপ্পি বলেন, আগামীর দিনগুলো আমাদের সঠিকভাবে সাজিয়ে নিতে হবে।

সমন্বয়ক তানভীর বলেন, আপনারা এতদিন একটি রাজনৈতিক দলের হয়ে কাজ করেছেন। এখন আরেকটা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বসে আমাদের সঙ্গে সভা করার জন্য ডেকেছেন। আপনাদের চাটুকারিতা কমেনি। আমরা আপনাদের চাটুকার পুলিশ কর্মকর্তাদের বদলি চাই। আপনারা নিজ বিভাগের মধ্যে সংস্কার করেন। চাটুকারিতা বাদ দেন।

ছাত্রদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপির শফিকুল আলম মনা বলেন, সাম্প্রতিক যেসব সহিংসতা ঘটেছে, এতে যদি বিএনপির কোনো কর্মী জড়িত থাকে, তবে তাদের বিচার করা হবে।

এক পর্যায়ে সভা শেষ না হওয়ার আগেই বিদায় নিতে চান পুলিশ কমিশনার। তিনি শিক্ষার্থীদের কাছে অনুরোধ করে বলেন, রাত ৯টায় যশোর ক্যান্টনমেন্টে জিওসির সঙ্গে আমার বৈঠক করতে হবে। বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) আবারও আমরা সভায় বসব। এ সময় ছাত্ররা তার কথায় সম্মতি জানান।

বাংলাদেশ সময়: ১০০২ ঘণ্টা, আগস্ট ০৯, ২০২৪
এমআরএম/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।