বরিশাল: মৃত্যুর চারদিন পর শনাক্ত হয়েছে মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও নগরের ১৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর গাজী নইমুল হোসেন লিটুর মরদেহ।
গত সোমবার রাত আটটার দিকে বরিশাল নগরের কালিবাড়ি রোডের সেরনিয়াবাত ভবন (সাবেক মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর বাসভবন) থেকে অগ্নিদগ্ধ তিন মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।
শুক্রবার (০৯ আগস্ট) দুপুরে সেই মরদেহটি কাউন্সিলর গাজী নইমুল হোসেন লিটুর বলে শনাক্ত করেছে স্বজনরা।
কাউন্সিলর লিটু (৫৫) নগরের নতুন বাজার এলাকার বাসিন্দা ও ভাষা সৈনিক মরহুম অধ্যক্ষ হোসেন আলীর ছেলে। নগরের নতুন বাজার পাবলিক স্কুলের সাবেক সহকারী শিক্ষক লিটু ১৯ নম্বর ওয়ার্ড থেকে টানা পাঁচবারের নির্বাচিত কাউন্সিলর।
জানা গেছে, সরকার পতনের পর বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর বাসভবনে বেলা তিনটার দিকে আগুন দেয় বিক্ষুব্ধরা। কয়েক ঘণ্টার চেষ্টায় ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার পর রাতে ওই বাসা থেকে তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে জমা দেয়। এর মধ্যে ওই রাতে নগরের নাজির মহল্লা এলাকার বাসিন্দা কাঞ্চন ফরাজীর ছেলে নুর ইসলাম নুরু (৪৫) ও বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার সঠিখোলা গ্রামের বাসিন্দা মজিবর রহমান জোমাদ্দারের ছেলে মঈন জোমাদ্দার (৪৫)। তবে একটি মরদেহ পরিচয় কেউ শনাক্ত করেনি।
বরিশাল শেরই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার আবুল কালাম বলেন, একটি মরদেহের পরিচয় শনাক্ত না হওয়ায় সোমবার রাত থেকে মর্গের হিমাগারের ছিল। মরদেহের পরিচয় শনাক্তসহ যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কাগজপত্র পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান জানান, কাউন্সিলর লিটুর পরিবার মরদেহ শনাক্ত করেছে। যার ময়নাতদন্ত শেষে সন্ধ্যায় পরিবারের কাছে মরদেহ বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।
কাউন্সিলর লিটুর ভাই গাজী মঞ্জুরুল হোসেন বরুণ জানান, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর সঙ্গে তার বাসভবনে ছিল। ওই বাসভবনে হামলা ও আগুন দেওয়ার পর থেকে লিটুর সঙ্গে স্বজনদের কেউ যোগাযোগ করতে পারেনি। পরের দিন যোগাযোগ করার চেষ্টা করে তার খোঁজ পায়নি। আওয়ামী লীগের অন্যান্য নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা জানিয়েছে সে নিরাপদ রয়েছে। কিন্তু শুক্রবার সকালে আওয়ামী লীগ সমর্থিত সব কাউন্সিলরের খোঁজ পেলেও একমাত্র তার (লিটু) কোনো খোঁজ ছিল না।
পরে শুক্রবার সকালে মর্গ থেকে মরদেহটি আমাদের পরিবারকে একবার দেখার জন্য বলা হয়। খবর পেয়ে লিটুর স্ত্রী নাজমা ও ভাইয়ের ছেলে তুষার প্রথমে মর্গে আসেন এবং এসেই মরদেহ শনাক্ত করেন।
তুষার বলেন, মরদেহের হাতের ব্রেসলেট, ঘড়ি এবং পায়ের ব্যান্ডেজ দেখেই আমরা নিশ্চিত হই এটি গাজী নইমুল হোসেন লিটুর। এরপর তার কাপড়ের ভেতর থেকে মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৬ ঘণ্টা, আগস্ট ০৯, ২০২৪
এমএস/জেএইচ