ঢাকা, শুক্রবার, ১৬ কার্তিক ১৪৩১, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

যশোরে রাজনৈতিক দ্বন্দ্বে প্রবাস ফেরত যুবককে গুলি করে হত্যা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১০, ২০২৪
যশোরে রাজনৈতিক দ্বন্দ্বে প্রবাস ফেরত যুবককে গুলি করে হত্যা মর্গের সামনে স্বজনদের অপেক্ষা

যশোর: যশোরে মেহের আলী নামে প্রবাস ফেরত এক যুবককে মাথায় গুলি করে হত্যা করেছে দুবৃর্ত্তরা।

শুক্রবার (৯ আগস্ট) রাত ১১টার দিকে সদর উপজেলার চুড়ামনকাটি ইউনিয়নের বাদিয়াটোলা পশ্চিম পাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

 

নিহত মেহের আলী ওই এলাকার আব্দুল মালেক মণ্ডলের ছেলে। তিনি গত ২৬ জুলাই কুয়েত থেকে দেশে ফিরেছেন। সেখানে দেশটির হাদিয়া নামক স্থানে একটি প্রতিষ্ঠান কাজ করতেন। বিদেশ যাওয়ার আগে তিনি স্থানীয় ইউনিয়ন বিএনপির সংক্রিয় কর্মী ছিলেন। পরিবারের স্বজনের দাবি,  চাঁদাবাজি ও রাজনৈতিক কোন্দলে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।  

নিহত স্বজনেরা জানান, গত দুইদিন ধরে নিহত মেহের আলী যশোর বাহাদুর এলাকার আনোয়ার হোসেন নামে তার এক খালু শ্বশুরেরবাড়িতে ছিলেন। ঘটনার দিন শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে মেহের তার বাড়িতে ফেরেন। এদিন বাড়িতে রাতে খাওয়া দাওয়া শেষে বাড়ির কলাপসিবল গেটে তালা মারতে আসেন। এ সময় আগে থেকেই অপেক্ষা করা দুবৃর্ত্তরা গেটের সামনে এসেই মাথায় গুলি করে পালিয়ে যান। গুলির শব্দ শুনেই স্বজনরা দ্রুত উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে আনলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।  

রাত দেড়টার দিকে হাসপাতালের মর্গের সামনে আহাজারি করতে দেখা যায় নিহতের ছোট ভাই আবু আব্দুল্লাহকে।  

তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমার ভাই মেহের আলীসহ তিন ভাই বিদেশে থাকি। বিদেশ যাওয়ার আগে ভাই বিএনপির রাজনীতি করতো। স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা মিথ্যা মামলা দিয়ে বিভিন্ন সময়ে জেলও খাটিয়েছে। বিভিন্ন সময়ে ভাইয়ের কাছে নেতাকর্মীরা চাঁদাও দাবি করতো। কিন্তু ভাই দিতে চাইতো না। তাই স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কিছু দ্বন্দ্ব ছিল। এর মধ্যে দীর্ঘদিন পর গত ২৬ জুলাই আমার ভাই দেশে ফিরেছে। আমি ফিরেছি তার মাস খানিক আগে।  

সর্বশেষ গত সোমবার আওয়ামী লীগ সরকার পতন হলে সেসব নেতাদের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয়েছে শুনেছি। এসব রাজনৈতিক দ্বদ্বের জেরে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করছি। এ হত্যা পূর্বপরিকল্পিত। কেননা আমার ভাইয়ের বাড়ির চারপাশে সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে। তবে যারা মেরেছে, তারা আগে থেকে সিসিটিভি ক্যামেরা কেটে দিয়েছে। ধারণা করেন- হত্যার করার জন্য হত্যাকারীরা বাড়ির গেটের সামনে গোপনে আগে থেকেই অপেক্ষা করছিলেন।  

আহাজারি করতে করতে তিনি বলেন, আমার ভাইয়ের পাঁচ বছর ও দেড় বছর বয়সী দুই শিশু সন্তান রয়েছে। তাদের কি হবে, তারা যে বাবা হারিয়েছে। তারা কারে বাবা বলে ডাকবে। ভাই হত্যার বিচার চাই? আমার ভাইকে কেন মারল। বারবার ভাই ভাই বলে বুক চাপড়াতে চাপড়াতে বিলাপ করতে দেখা যায় ভাই হারানো আবু আব্দুল্লাহকে।  

যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. খন্দকার রেজয়ান উদ দারাইম জানান, গুলিবিদ্ধ মেহের আলীকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনেন স্বজনেরা। তার মাথার পেছনের দিকে ডান সাইটে গুলি লেগেছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়েছে। মরদেহ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে।  

যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক বলেন, কি কারণে হত্যা করা হয়েছে, সুনির্দিষ্টভাবে বলা যাচ্ছে না। পুলিশ তদন্ত করছে। এ ঘটনায় কাউকে আটক করা যায়নি। অভিযান চলছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১০, ২০২৪
ইউজি/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।