ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৫ কার্তিক ১৪৩১, ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ২৭ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

দেশে গুম-খুনের মতো মানবাধিকার লঙ্ঘন আর সহ্য করা হবে না: মায়ের ডাক

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১৪, ২০২৪
দেশে গুম-খুনের মতো মানবাধিকার লঙ্ঘন আর সহ্য করা হবে না: মায়ের ডাক

ঢাকা: মায়ের ডাকের সমন্বয়ক সানজিদা ইসলাম বলেছেন, দেশে গুম-খুনের মতো বড় মানবাধিকার লঙ্ঘন আর সহ্য করা হবে না। আয়নাঘরের মতো গুম করে রাখার যতগুলো ঘর আছে, সেগুলোতে আমাদের যত ভাইয়েরা বন্দি আছেন তাদেরকে ফেরত দিতে হবে এবং এইসব আয়নাঘর ভেঙে দিতে হবে।

 

বুধবার (১৪ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ‘মায়ের ডাক’ আয়োজিত এক মানববন্ধনে তিনি এ কথা বলেন। এসময় গুম হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের ও স্বজনসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও রাজনৈতিক নেতারাও বক্তব্য দেন।

মায়ের ডাকের সমন্বয়ক সানজিদা ইসলাম বলেন, গতকাল প্রধান উপদেষ্টার সাথে আমাদের বৈঠক হয়েছে এবং তিনি আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জিয়াউল আহসানের মতো, তারেক সিদ্দিকীর মতো যারা এই সমস্ত গুম খুনের সাথে জড়িত তাদেরকে গ্রেফতার করে তাদের জবানবন্দি নিতে হবে, তাদেরকে বিচারের আওতায় আনতে হবে। তাদের কাছ থেকে তথ্য নিয়েই আমাদেরকে দিতে হবে। দেশে আর কোনো আয়নাঘর থাকবে না। গুম-খুনের মতো বড় মানবাধিকার লঙ্ঘন আমরা আর সহ্য করব না।

তিনি আরও বলেন, প্রত্যেকটা মা যতজন সন্তানকে হারিয়েছে, আমরা যতজন ভাইকে হারিয়েছি, এর প্রত্যেকটার বিচার করতে হবে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আমাদের আল্টিমেটাম সরকারের কাছে, প্রশাসনের কাছে। শিগগিরই আপনারা এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিন। তা না হলে আপনারা দেখেছেন কিভাবে স্বাধীনতা আনতে হয়।  

মানববন্ধনে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, শেখ হাসিনা এবং তার সরকার সারা দেশের প্রশাসনসহ সমস্ত জায়গায় বিষবৃক্ষ রোপন করেছে। এদের তুলে ফেলতে, একটা সুন্দর প্রশাসন তৈরি করতে সময় প্রয়োজন।  

তিনি আরও বলেন, আমি জানি না তাদের নাম কী বলা যায়। যারা মূলত টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং করে। মাঝখানে যখন পেগাসাস আনা হয়েছিলো, সেটা নিয়ে প্রচুর কথা হয়েছিল। সেটা নিয়ে রাজনৈতিক নেতাকর্মীসহ সমাজকর্মীদের যেভাবে নজরদারি করা হয়েছিলো, এখন পর্যন্ত এই সরকার সে পর্যন্ত হাত দিতে পারেনি। তবে আমি বিশ্বাস করি, এখন যারা ক্ষমতায় আছেন তারা ছাত্র-জনতার যে আকাঙ্ক্ষা, তার সঙ্গেই তারা আছেন। এটা হতেই পারে তাদের যে প্রশাসনিক যোগ্যতা, আমরা যতটুকু চাই ততটুকু হচ্ছে না, এটা হতেই পারে এখন যে কাজগুলো করা দরকার তারা তার থেকেও জরুরি কাজে ব্যস্ত আছেন। আমি যতটুকু জানি তারা দিনরাত কাজ করছেন, পরিশ্রম করছেন। তারা গতকাল বলেছেন, আমরাতো আপনাদেরই লোক আপনাদের কাজ করবার জন্যই এখানে এসেছি। আমি তাদের এই দৃষ্টিভঙ্গিকে এপ্রিশিয়েট করি, সাধুবাদ জানাই। কিন্তু যোগ্যতা, গতির কোনো বিকল্প নাই। আমরা চাই তারা পুরো বাংলাদেশের খোলস পালটে যতখানি পারেন সাজিয়ে গড়ে তোলেন। সেই কাজের মধ্য দিয়ে তারা এই দাবি-দাওয়া পূর্ণ করবে। যারা গুম খুনের সাথে জড়িত তাদের অনতিবিলম্বে বিচারের আওতায় আনতে হবে। মায়েয় ডাক মানে মায়ের আকুতি, এই আকুতি শুনতে হবে।  

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক তারেক রেজা বলেন, এই সরকার আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন যারা গ্রেফতার হয়ে আছেন তাদের মুক্তি দেওয়া হবে। কিন্তু আজকে ছয়দিন হয়ে গেলেও তাদের ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে না কেন? তাদেরকে কি খুন করা হয়েছে? যদি তাই হয় তাহলে খুনিরা কই? আমরা বলতে চাই, যত দ্রুত সম্ভব আমাদের গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের মুক্তি দেওয়া হোক।  

শোরগোলের সম্পাদক ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক জাহিদ বলেন, ঢাকা এবং ঢাকার বাইরে যত সিক্রেট হাউস আছে সবগুলোর তালা ভেঙে সবাইকে মুক্ত করতে হবে। যতদিন আমাদের সবাই ফিরে না আসবে, আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো। আমরা জুলুমের অবসান চাই।

জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ফয়জুল হাকিম লালা বলেন, গত ১৫ বছরে শেখ হাসিনার সরকার যাদের গুম করেছে তাদের বিচার করতে হবে। এর সঙ্গে যেসব সেনা কর্মকর্তা জড়িত তাদেরও বিচার করতে হবে। আমাদের যে ছাত্রদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, হেলিকপ্টার থেকে গুলি করা হয়েছে তাদের বিচার করতে হবে। আমরা আশা করব এই সরকার এর বিচার দ্রুতই করবেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৪, ২০২৪
ইএসএস/নিউজ ডেস্ক

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।