রাজশাহী: ‘ফ্যাসিবাদী আওয়ামী মহাজোট, প্রশাসন, বিদেশি দূতাবাসসহ বিভিন্ন জায়গায় থেকে যারা আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছে এবং এ দেশের ছাত্র-জনতার বিজয়কে নস্যাৎ করার স্বপ্ন দেখছে তাদের ইঁদুরের গর্ত থেকে বের করে বিচার করা হবে। ’
সপ্তাহব্যাপী ‘রেজিস্ট্যান্স উইক’ এর অংশ হিসেবে তৃতীয় দিন বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) দুপুরে রাজশাহী নগরীর জিরোপয়েন্টে অনুষ্ঠিত বিশাল সমাবেশে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক গোলাম কিবরিয়া মেশকাত চৌধুরী মিশু এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, সারা দেশের ছাত্র-জনতা আজ জেগে উঠেছে। ফ্যাসিবাদকে ক্ষমতা থেকে টেনে-হিঁচড়ে নামানোর যে অভিজ্ঞতা আমাদের হয়েছে তা সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে দেব। এশিয়া, ইউরোপ, আফ্রিকাসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর যেখানে যেখানে ফ্যাসিবাদ আছে, স্বৈরাচার আছে তাদের আমরা অভিজ্ঞতা শিখিয়ে দেব যে, কীভাবে ফ্যাসিবাদের কবর রচনা করতে হয়।
তিনি আরও বলেন, যারা যারা আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছে, যাদের হাত আমার ভাইদের রক্তে রঞ্জিত হয়েছে তাদের আমরা ছাড়বো না। তারা যেখানেই থাকবে সেখানেই দাঁতভাঙ্গা জবাব দেওয়া হবে। রাসেলস ভাইপারের কথা মনে আছে। এ সাপ কিন্তু এখনও কোনা-কাঞ্চিতে ছড়িয়ে আছে। এমন রাসেলস ভাইপারদের সবগুলোর বিষদাঁত ভেঙেই তারপর আমরা ঘরে ফিরবো।
এর আগে সপ্তাহব্যাপী ‘রেজিস্ট্যান্স উইক’ এর অংশ হিসেবে তৃতীয় দিনের মতো বৃহস্পতিবার রাজশাহী নগরীর নগরীর তালাইমারী, রেলগেট ও সিঅ্যান্ডবি মোড় থেকে সকাল সাড়ে ১০টায় বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে বেলা ১১টার দিকে সাহেববাজার জিরোপয়েন্ট এ গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়।
এ সময় ‘টুঙ্গিপাড়ার গোলাপি, আর কতকাল জ্বালাবি’, ‘তোমার আমার জান নিতে, খুনি এখন দিল্লিতে’, ‘বিচার বিচার বিচার চাই, খুনি হাসিনার বিচার চাই’, ‘ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই, খুনি হাসিনার ফাঁসি চাই’, ‘লড়াই লড়াই লড়াই চাই, লড়াই করে বাঁচতে চাই’, ‘ভারতের দালালরা, হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘হৈ হৈ রৈ রৈ শেখ হাসিনা গেলি কই’, ‘হিন্দু মুসলিম ভাই ভাই’, ‘খেলা খেলা হবে, রাজপথে খেলা হবে’ এমন সব স্লোগান দিতে থাকেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
রাবি শিক্ষার্থী মোজাহিদ শুভর সঞ্চালনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ফজলে রাব্বি মোহাম্মদ ফাহিম রেজা বলেন, শেখ মুজিব ১৯৭২ সাল পর্যন্ত ছিল বঙ্গবন্ধু। ৭২’র পর থেকে মুজিব ছিল স্বৈরাচারী। স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা আমাদের ভাইদের যে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে সেই শোকে আমরা ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট পালন করতে পারি না। এ দিবসকে আমরা বয়কট করলাম। এ স্বৈরাচার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে অস্ত্রাগার বানিয়েছে। অতিদ্রুত বিশেষ ট্রাইবুনালের মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে ৷ এ ল সমূলে উদ্ঘাটন না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।
রেসিডেন্সিয়াল কলেজের অধ্যক্ষ মামুন হোসেন বুলবুল বলেন, এ হাসিনা সরকার আমার প্রিয় সন্তানদের হত্যা করেছে। একদফার আন্দোলনের মাধ্যমে ছাত্র-জনতা হাসিনার পতন করেছে। তোমাদের অভিভাবক হয়ে আমি গর্বিত। যতদিন হাসিনার পেতাত্মারা এ দেশে থাকবে ততদিন আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। এ সরকার আমাদের পরাধীন জাতিতে পরিণত করেছিল। আজ গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ২৪’র স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। এবার দেশ গড়ার জন্য তোমাদের প্রস্তুতি নিতে হবে।
এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রাবি সমন্বয়ক মেহেদী সজিব, মেহেদী হাসান মুন্না, মোহাম্মদ মাসুদ, সালাউদ্দিন আম্মারসহ, সাংবাদিক রাশেদ রাজন ও রাজশাহী জোলা শাখার সমন্বয়করা বক্তব্য দেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১৫, ২০২৪
এসএস/আরবি