নরসিংদী: হাসপাতালের বিছানায় মৃত্যু যন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে অবশেষে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শহীদদের মিছিলে যোগ দিয়েছে নরসিংদীর মাধবদী থানার মাদরাসাছাত্র মো. সুমন মিয়া (২০)।
শুক্রবার (২৩ আগস্ট) সকাল ৭টায় ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আহত হওয়ার ৩৪ দিন পর তার মৃত্যু হয়।
নিহত সুমন নরসিংদীর মাধবদী পৌর শহরের সিদ্দিকনগর এলাকার মৃত হাসান আলীর ছেলে। মাধবদী জালপট্টি দাখিল মাদরাসার দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল সুমন। সে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় মাধবদী এলাকায় গুরুতর আহত হয় সে।
নিহত সুমনের ভাই জুলহাস মিয়া জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে প্রথম দিক থেকেই সক্রিয়ভাবে অংশ নেয় সুমন। তাকে বারবার আটকানোর চেষ্টা করেও ধরে রাখা যায়নি। নরসিংদীসহ সারাদেশ যখন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে উত্তাল ঠিক তখনই গত ২০ জুলাই মাধবদী থানার সামনে তার পিঠে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়। পরে তাকে ঢাকা কুর্মিটোলা হাসপাতালে নিয়ে আসি। সেখানে চিকিৎসাধীন তার অবস্থার অবনতি হলে পরবর্তীতে তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় প্রত্যাকটা মুহূর্ত মৃত্যু যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকে সুমন অবশেষে সব যন্ত্রণার অবসান করে আজ সকালে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছে।
তিনি আরও বলেন, হয়তো কিছুক্ষণের মধ্যে হাসপাতালের সব কাজ গুছিয়ে আমরা মরদেহ নিয়ে নরসিংদীতে ফিরবো। আমরা দরিদ্র পরিবারের সন্তান হওয়ায় মাদরাসায় পড়াশোনার পাশাপাশি আমার ছোট ভাই সুমন সবজি বিক্রি করে সংসারে সাহায্য করতো। সে আমার মাকে নিয়ে মাধবদী সিদ্দিকনগর এলাকায় ৩ হাজার টাকায় একটি ভাড়া বাসায় থাকতো। তাকে নিয়ে আমাদের অনেক স্বপ্ন ছিল তার এ অকাল মৃত্যুতে আমাদের সে স্বপ্নগুলো শুধু স্বপ্নই রয়ে গেল। আমি আমার ভাইয়ের হত্যার বিচার দাবি করছি।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১০ ঘণ্টা, আগস্ট ২৩, ২০২৪
জেএইচ