নাটোর: নির্বাচনের মাধ্যমে রাজনৈতিক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করাই বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের লক্ষ্য বলে জানিয়েছেন শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।
শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) বিকেলে নাটোরের লালপুর উপজেলার গোপালপুর নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলে চলতি মৌসুমের আখ মাড়াই কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
আদিলুর রহমান খান বলেন, নির্বাচনের মাধ্যমে রাজনৈতিক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করাই বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের লক্ষ্য। বর্তমান সরকার অনেক কিছু করে দেবে, সেটা সম্ভব নয়। সরকারের উদ্দেশ্য নির্বাচনের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা। তখন তারা এগুলো এগিয়ে নেবেন।
তিনি বলেন, আমরা সবাই মিলে পরিবর্তনের ধারা চালু করতে চাই। পরবর্তীতে যারা রাষ্ট্রক্ষমতায় আসবেন তারা তা অব্যাহত রাখবেন।
এ সময় দেশের সব চিনিকল আবারও সচল করা হবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।
শিল্প উপদেষ্টা বলেন, চিনির উৎপাদন বাড়িয়ে আমদানি কমিয়ে আনাই সরকারের লক্ষ্য। এরই মধ্যে ১২০ কোটি টাকা আখের মূল্য পরিশোধের জন্য দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের পিছিয়ে পড়া এলাকাগুলোতে সামাজিকভাবে সবাইকে এগিয়ে এসে সবার জীবন উন্নয়ন করতে হবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন - বিশেষ অতিথি শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জাকিয়া সুলতানা, বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশনের পরিচালক এটিএম কামরুল ইসলাম, নাটোরের জেলা প্রশাসক আসমা শাহীন, পুলিশ সুপার মো. মারুফাত হোসাইন, আখচাষি হাসান রাজা প্রমুখ।
নাটোরের নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলস লিমিটেডে চলতি বছর প্রায় ১৫ হাজার মেট্রিক টন চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে আখ মাড়াই কার্যক্রম শুরু হয়েছে বলে জানান নর্থ বেঙ্গল চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ খবির উদ্দিন।
তিনি বাংলানিউজকে বলেন, মোট ১১৭ আখ মাড়াই দিবসে চিনি আহরণের হার নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। দৈনিক ১ হাজার ৭০০ মেট্রিক টন মাড়াই কর্মক্ষমতা নিয়ে ১১৭ কর্ম দিবসে ১৫ হাজার মেট্রিক টন চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। চিনি আহরণের হার ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ৫ ভাগ। চলতি মৌসুমে এই মিলে ১৭ হাজার ৫০০ একর জমিতে আখ রোপণের নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে মিলের নিজস্ব জমি রয়েছে ২ হাজার ৫০০ একর। গত বৃহস্পতিবার হতে ৩১ টি ক্রয় কেন্দ্রের মাধ্যমে আখ কেনা শুরু হয়েছে। এ বছর প্রতি মন আখের দাম ধরা হয়েছে মিল গেটে ২৪০ এবং ক্রয় কেন্দ্রে ২৩৭ টাকা।
বাংলাদেশ আখচাষি ইউনিয়নের নেতা মো. আনছার আলী দুলাল বাংলানিউজকে বলেন, ১৯৩৩ সালে প্রতিষ্ঠিত এই মিলের জন্য জাভা থেকে পুরোনো যন্ত্রাংশ কিনে এনে মিলটি চালু করা হয়। প্রথম দিকে মিলটি বেশ লাভজনক ছিল। পরে মিলের যন্ত্রাংশগুলো দুর্বল হয়ে পড়ার কারণে সঠিক ভাবে প্রসেসিং হয় না। এতে চিনির পরিবর্তে মুলাসিসের পরিমাণ বেশি হয়। ফলে চিনি উৎপাদনের হার কম হয়। কিন্তু আজ পর্যন্ত মিলের যন্ত্রাংশে আধুনিকায়ন করা হয়নি।
বাংলাদেশ সময়: ২০১৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০২৪
এসএএইচ