মৌলভীবাজার: লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান থেকে তিনটি মূল্যবান সেগুন গাছ চুরি হয়েছে। অসাধু বনকর্মীদের সহায়তায় রাতের আঁধারে গাছচোরচক্র সে গাছগুলো কেটে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
সেই কাটা সেগুন কাঠগুলো অভিনব কায়দায় বিয়ারিংসম্বলিত বিশেষ ট্রলির সাহায্যে রেলপথ দিয়ে অন্যত্র নেওয়া হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, সম্প্রতি লাউয়াছড়া বন বিট অফিসের সংলগ্ন ৩টি কাটা মূল্যবান সেগুন গাছের মোথা (নিম্নাংশ)। কাটা গাছগুলোর মোথা প্রায় ৪ফিট গোলাকার ও ৭০ ফিট উচ্চতার। যার আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় লক্ষাধিক টাকা।
বিশ্বস্ত সূত্রে আরও জানা যায়, লাউয়াছড়ার বন প্রহরী ও কমিউনিটি পেট্রোলিং গ্রুপ (সিপিজি) দিনের বেলায় বন পাহারা না দিয়ে লাউয়াছড়ায় গাইডিং সার্ভিস নিয়ে ব্যস্ত থাকেন সে সুযোগে স্থানীয় চোরচক্র দিনের বেলায় বনের ভেতর প্রবেশ করে গাছ দেখে যায় এবং রাতের বেলায় সুযোগ বুঝে গাছ কেটে পাচার করে। অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় সংঘবদ্ধ চোরচক্রের সঙ্গে বন বিভাগের কিছু অসাধু বন প্রহরী ও সিপিজি সম্পৃক্ত রয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, এ তিনটি সেগুন গাছ বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) ভোরে কাটা হয়েছে এবং বনকর্মীদের সহায়তায় মুন্সিবাজার-শমসেরনগরে পাচার করা হয়েছিল।
মৌলভীবাজার সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) জামিল মোহাম্মদ খান বাংলনিউজকে বলেন, গাছ কাটার বিষয়টি লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের বিট কর্মকর্তা জানার পর সংঘবদ্ধ চোর চক্রকে রাতেই ধাওয়া দেওয়া হয়, তবে তাদের সে সময় ধরা যায়নি। তবে এ ব্যাপারে আমাদের গোপন তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, যারাই এ কাজটি করেছে তারা পেশাদার গাছচোর। গোপনে বনের গাছ কেটে বিয়ারিং দিয়ে তৈরি করা ট্রলির উপর গাছগুলো রেখে তারপর রেললাইন দিয়ে সেগুলো নেওয়া হয়েছিল।
রোববার (২২ ডিসেম্বর) এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) জাহাঙ্গীর আলম বাংলনিউজকে বলেন, এ ঘটনায় আমরা সোর্স লাগিয়ে মুন্সিবাজার এবং শমসেরনগর থেকে চুরি হওয়া সেগুন গাছগুলোর ১৭ টুকরো কাঠ উদ্ধার করেছি। আর এক টুকরো তো আগেই ওখানে (কর্তৃনকৃত স্থানে) ছিল। সব মিলিয়ে চুরিকৃত সেগুন গাছের সবগুলো টুকরোই আমরা উদ্ধার করতে সম্মত হয়েছি।
প্রসঙ্গক্রমে তিনি আরও বলেন, আমার তো রেঞ্জ অফিসার নেই। বিট অফিসার দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে। আগের রেঞ্জ অফিসার তো ভালো ছিল, দৌড়াদৌড়ি করতো। ওর জায়গায় এখন পর্যন্ত কেউ জয়েন করেনি। ফলে জনবল সংকটের কারণে বেশ সমস্যায় আছি।
‘গাছচুরির সঙ্গে বনবিভাগের লোকজন জড়িত’ এ প্রসঙ্গে ডিএফও জাহাঙ্গীর বলেন, আমাদের বনবিভাগের কেউ যদি জড়িত রয়েছেন এবং তার প্রমাণ পাওয়া যায় তবে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০২৪
বিবিবি/জেএইচ