ঢাকা: চারদিন পর প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ে প্রবেশ করতে পেরেছেন সাংবাদিকরা। সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুর ২টার দিকে সীমিত সংখ্যক সাংবাদিককে সচিবালয়ে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়েছে।
তবে আগুন লাগা সাত নম্বর ভবন বন্ধ রয়েছে। এ ভবনে তদন্ত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ছাড়া কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।
প্রসঙ্গত, গত বুধবার রাতে ৭ নম্বর ভবনের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর সাংবাদিকদের সচিবালয়ে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। অস্থায়ী পাশের মাধ্যমে সোমবার থেকে সাংবাদিকরা সচিবালয়ে প্রবেশ করতে পারবেন বলে রোববার (২৯ ডিসেম্বর) সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল। কিন্তু সকাল থেকে প্রবেশের জন্য সাংবাদিকরা সচিবালয়ের গেটে অবস্থান করলেও তারা সচিবালয়ে প্রবেশ করতে পারেননি। সচিবালয়ে প্রবেশের অনুমতি মিলেছে দুপুর ২টায়।
এ সময় সচিবালয় কাভার করা সাংবাদিকদের সংগঠন বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরামের দেওয়া তালিকা অনুযায়ী সীমিত সংখ্যক সাংবাদিক এক ও দুই নম্বর গেটের মধ্যবর্তী স্থান দিয়ে সচিবালয়ে প্রবেশ করেন।
সোমবার সচিবালয়ে সরেজমিনে দেখা গেছে, সচিবালয়ে বেশিরভাগ ভবনের সমনের জায়গা ফাঁকা। কারণ উপদেষ্টা ও সচিব ছাড়া অন্য কোনো গাড়ি সচিবালয়ে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এক ও দুই নম্বর গেটের মধ্যবর্তী দর্শনার্থী কক্ষ এবং পাঁচ নম্বর গেট দিয়ে হেঁটে প্রবেশ করেছেন। ফলে দর্শনার্থী কক্ষে বাড়তি কোনো চাপ ছিল না। গাড়ি প্রবেশ করতে না দেওয়ায় সচিবালয়ের ভেতরের চত্বর প্রায় ফাঁকা পড়ে আছে। এছাড়া আগুন লাগা সাত নম্বর ভবন বন্ধ রয়েছে। এ ভবনে তদন্ত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ছাড়া কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।
এদিকে প্রশাসনের প্রাণ কেন্দ্র সচিবালয়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে সাত নম্বর ভবনে পুড়ে ছাই হয়েছে ছয়টি মন্ত্রণালয়ের সরঞ্জাম, নথিপত্র ও আসবাবপত্র। ফলে বিভিন্ন জায়গায় ক্ষতিগ্রস্ত এসব মন্ত্রণালয় অফিস স্থাপন করে কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।
জানা গেছে, ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের অস্থায়ী অফিসের কার্যক্রম চলছে আব্দুল গণি রোডের রেল ভবনে। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের অফিসের কার্যক্রম চলছে জিরো পয়েন্টের জিপিও ভবনে। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের অস্থায়ী অফিস চলছে ফুলবাড়ীয়ার দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ভবনে।
এছাড়া যুব ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অস্থায়ী অফিস চলছে জাতীয় ক্রিয়া পরিষদ, পুরানো পল্টন বায়তুল মোকাররম গেট। শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অস্থায়ী অফিস চলছে বিজয়নগরের শ্রম ভবনে এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অস্থায়ী অফিস চলছে ১১ নম্বর ভবনে অর্থ উপদেষ্টার দপ্তরে।
গত বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) রাত ১টা ৫০ মিনিটে সচিবালয়ে আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। সচিবালয়ে অবস্থিত ফায়ার সার্ভিসের ইউনিটটি আগুন নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা করে রাত ১টা ৫৪ মিনিট থেকে। আগুনের তীব্রতা বেড়ে গেলে একে একে ১৯টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে। শুরুতে আগুন নিয়ন্ত্রণের জন্য আটটি ইউনিট কাজ করলেও পরে আরও ১১টি ইউনিট যুক্ত হয়।
সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনের ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম ও নবম তলায় থাকা ছয়টি মন্ত্রণালয়ের নথিপত্র পুড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সচিবালয়ের সাত নম্বর ভবনে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়; ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়; ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ; স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ; শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়; অর্থ মন্ত্রণালয়, অর্থ বিভাগ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ; সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০২৪
জিসিজি/আরবি