ঢাকা: সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের জাতীয় পর্যায়ের আলোচনা সভা থেকে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা ও রাজস্ব বৃদ্ধির লক্ষ্যে সিগারেটের স্তর কমানো এবং নিম্নস্তরের সিগারেটের সম্পূরক শুল্ক ও কার্যকর মূল্য বৃদ্ধির দাবি করেছেন বক্তারা।
বুধবার (৭ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে, জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা ও রাজস্ব বৃদ্ধির লক্ষ্যে, তামাকপণ্যের কার্যকর করারোপের দাবিতে স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশন এর আয়োজনে সমাজের সচেতন নাগরিক, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী, একাডেমিক, গবেষক, সিভিল সোসাইটি এবং সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভার মূল প্রবন্ধে জানানো হয়, বাংলাদেশে তামাক ব্যবহারের হার দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৩৫.৩ শতাংশ। প্রতিবছর তামাক ব্যবহারজনিত রোগে প্রায় ১লক্ষ ৬১হাজার প্রাপ্তবয়স্ক অকালে মৃত্ব্য রবণ করে। তাছাড়া, তামাক খাত থেকে সরকার যে পরিমান রাজস্ব আহরন করে তার থেকে ৩৪ শতাংশ বেশি খরচ হয় তামকের কারণে সৃষ্ট রোগের চিকিৎসা বাবদ।
সভায় দেশে তামাক ব্যবহার হ্রাস ও তামকজনিত ক্ষয়ক্ষতি নিরসনে আগামী ২০২৫-২৬ অর্থ-বছরের বাজেটে তামাক-কর ও দাম বৃদ্ধির জন্য যেসব দাবি করা হয় তার মধ্যে অন্যতম- সিগারেটের বর্তমান চারটি স্তরকে কমিয়ে তিনটি স্তরে নামিয়ে আনা অর্থাৎ নিম্ন ও মধ্যম স্তরকে একত্রিত করে একটি স্তর করা এবং এ স্তরের সিগারেটের ১০ শলাকার প্যাকেটের সর্বনিম্ন মূল্য ৮০ টাকা নির্ধারণ করা, এছাড়াও সকল স্তরের সিগারেটের সম্পূরক শুল্ক ৬৭ শতাংশ করার দাবি করা হয়। এছাড়া উচ্চ স্তরের সিগারেটের ১০ শলাকার প্যাকেটের সর্বনিম্ন মূল্য ১৩০ টাকা, এবং প্রিমিয়াম স্তরের সিগারেটের ১০ শলাকার প্যাকেটের সর্বনিম্ন মূল্য ১৮০ টাকা কারার প্রস্তাব দেয়া হয়।
সভা থেকে আরও জানানো হয়, উল্লেখিত তামাক-কর ও দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব বাস্তবায়ন করা হলে প্রায় ১৬ লক্ষ অকালমৃত্ব্য রোধ করা যাবে, প্রায় ১৬ লক্ষ তরুনকে ধূমপান শুরু করা থেকে বিরত রাখা যাবে, প্রায় ২৩ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক ধূমপায়ী ধূমপান ছেড়ে দিতে উৎসাহিত হবে এবং ২০২৫-২৬ অর্থ-বছরে প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আহরিত হবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান ড. নাসিরউদ্দীন আহমেদ, জাতীয় রাজস্ব বোরর্ডের সাবেক সদস্য ড. মো. সহিদুল ইসলাম, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের যুগ্মসচিব রোকসানা খান, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালইয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের যুগ্ম সচিব (জনস্বাস্থ্য অধিশাখা) ডা. মো. শিব্বির আহমেদ ওসমানী, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের যুগ্মসচিব (মহাপরিচালক, অটিজম সেল) মো. মহসীন, স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশন নির্বাহী পরিচালক, চেয়ার, গ্লোবাল এলায়েন্স ফর ভ্যাক্সিন অ্যান্ড ইনিসিয়েটিভ (গ্যাভী), ডা. নিজাম উদ্দীন আহমেদ, বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. গোলাম মহিউদ্দিন ফারুক, বিআইডিএস রিসার্চ ডিরেক্টর ড. এস. এম. জুলফিকার আলী প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৭, ২০২৫
আরকেআর