ঢাকা, শনিবার, ১৩ পৌষ ১৪৩১, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

রামেক হাসপাতালে হাতাহাতির ঘটনায় মামলা, রোগীদের দুর্ভোগ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০১৬
রামেক হাসপাতালে হাতাহাতির ঘটনায় মামলা, রোগীদের দুর্ভোগ রাজশাহী মেডিকেল কলেজের চিত্র

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে রোগীর স্বজনদের সঙ্গে ইন্টার্ন চিকিৎসকের হাতাহাতির ঘটনায় মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ অভিযুক্ত এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে। তাকে বর্তমানে থানায় রাখা হয়েছে।

রাজশাহী: রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে রোগীর স্বজনদের সঙ্গে ইন্টার্ন চিকিৎসকের হাতাহাতির ঘটনায় মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ অভিযুক্ত এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে।

তাকে বর্তমানে থানায় রাখা হয়েছে।

ওই ঘটনায় মঙ্গলবারও (২৭ ডিসেম্বর) হাসপাতালে চিকিৎসকদের কর্মবিরতি অব্যাহত রয়েছে। এতে রোগী ও তাদের স্বজনদের সীমাহীন দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে। ‍

সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এএফএম রফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি চলছে। তবে তাদের সঙ্গে আলোচনা করে কর্মবিরতি প্রত্যাহারের চেষ্টা চলছে। দুপুরের মধ্যে একটা সমঝোতা হবে বলে আশা করেন তিনি।  

এদিকে, ইন্টার্ন চিকিৎসকরা কর্মবিরতিতে যাওয়ায় হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। এর আগে সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) রাত ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত হাসপাতালের জরুরি বিভাগের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ঘটনার প্রতিবাদ জানান। এ সময় হাসপাতালে এক ঘণ্টা ধরে জরুরি সেবা বন্ধ থাকে। পরে জরুরি বিভাগের তালা খুলে দেওয়া হয়। তবে ইন্টার্নদের কর্মবিরতি এখনও চলছে।

সোমবার রাত নয়টার দিকে ২২ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন এক প্রসূতির স্বজনদের সঙ্গে ইন্টার্ন চিকিৎসকের মারামারির ঘটনা ঘটে। এতে রামকের ৫২তম এমবিবিএস’র শিক্ষার্থী ও ইন্টার্ন চিকিৎসক পরাগ হোসেনের (২৮) মাথা ফেটে যায়। এ ঘটনার প্রতিবাদে রাত সাড়ে ১০টা থেকে হাসপাতালে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি শুরু করেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।

রামেক ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি শফিকুল ইসলাম অপু জানান, ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার না করা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। কোনো ইন্টার্ন চিকিৎসক কাজে যোগ দেবেন না বলেও সাংবাদিকদের জানান তিনি।

এদিকে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রামেকের ২২ নম্বর ওয়ার্ডে প্রসূতি রোগী ইতি খাতুনকে (২০) তার স্বজনরা ভর্তি করেন। সোমবার রাত নয়টার দিকে তাকে দেখতে আসেন ভাই শাহীন ও দুলাভাই মিনারুল ইসলাম মিনি।

ওই সময় একই ওয়ার্ডে দায়িত্বে থাকা ইন্টার্ন চিকিৎসক পরাগ রোগীর চিকিৎসা দিতে এসে রোগীর স্বজনদের বাইরে যেতে বলেন। তবে এ নিয়ে শাহীন ও মিনির সঙ্গে কথা কাটকাটি হয়। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।

এতে ইন্টার্ন চিকিৎসক পরাগের মাথা ফেটে যায়। পরে ইতির স্বজনরা আতঙ্কে তাকে হাসপাতাল থেকে নিয়ে চলে যান। এ ঘটনার পর থেকে হাসপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের মাঝে উত্তেজনা বিরাজ করছে। রাতে মূল ফটক বন্ধ করে তারা দফায় দফায় বিক্ষোভ করেন।

রামেক ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি শফিকুল ইসলাম বলেন, একের পর এক তাদের ওপর হামলা হচ্ছে। কিন্তু প্রশাসন এসব নিয়ে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। এতে করে হাসপাতালে চিকিৎসা দিতে গিয়ে তারা চরম নিরাপত্তাহীনতায় পড়ছেন। এর প্রতিবাদে ও হামলাকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে ধর্মঘট ডাকা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

রাজশাহীর রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমান উল্লাহ বাংলানিউজকে জানান, রামেক হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে। হাসপাতাল প্রশাসনের পক্ষ থেকে অ্যাডমিন অফিসার ইসমাইল মজুমদার বাদী হয়ে শাহীন ও জিমি নামে দুই ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা করেছেন। আসামিরা রোগীর ভাই। এদের মধ্যে জিমিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে বলেও জানান ওসি।

**ফের রামেক হাসপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি

বাংলাদেশ সময়: ১১৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০১৬
এসএস/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।