ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

জেলা পরিষদ নির্বাচন

সিলেটে চার স্তরের নিরাপত্তায় ভোট উৎসব

নাসির উদ্দিন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৮, ২০১৬
সিলেটে চার স্তরের নিরাপত্তায় ভোট উৎসব জেলা পরিষদ নির্বাচন

সিলেটে জেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণে এরই মধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন। কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছেছে স্বচ্ছ ব্যালট বক্সসহ নির্বাচনী সরঞ্জাম। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে স্বতস্ফূর্তভাবে ভোট গ্রহণের লক্ষ্যে প্রশাসনের তরফ থেকে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। 

সিলেট: সিলেটে জেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণে এরই মধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন। কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছেছে স্বচ্ছ ব্যালট বক্সসহ নির্বাচনী সরঞ্জাম।

অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে স্বতস্ফূর্তভাবে ভোট গ্রহণের লক্ষ্যে প্রশাসনের তরফ থেকে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।  

শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণের লক্ষ্যে সিলেটে প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রশাসন তথা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা।  

এই চার স্তরের নিরাপত্তায় মোতায়েন থাকবেন কেন্দ্রের অভ্যন্তরে পুলিশ ও আনসার এবং কেন্দ্রের বাইরে পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, স্ট্রাইকিং ফোর্স ও মোবাইল টিমসহ পোশাকে-সাদা পোশাকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।  

সিলেট জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুজ্ঞান চাকমা বলেন, সিলেট জেলার ১৩টি কেন্দ্রে প্রায় সাড়ে আট শতাধিক পুলিশ ফোর্স মোতায়েন থাকবে। এর মধ্যে প্রতিটি কেন্দ্রের অভ্যন্তরে আটজন পুলিশ ও ১৭ জন আনসার সদস্য মোতায়েন রাখা হবে। কেন্দ্রপ্রতি থাকবে একটি করে স্ট্রাইকিং ফোর্স, ২টি মোবাইল টিম ও রিজার্ভ ফোর্স। সেই সঙ্গে র‌্যাব-বিজিবি সদস্যরা-তো থাকছেনই।  

সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) জেদান আল মুছা বলেন, সিলেট মহানগর এলাকায় মদন মোহন কলেজ ও দক্ষিণ সুরমায় হাজি ইসরাব আলী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হবে। এ দু’টি কেন্দ্রের অভ্যন্তরে প্রায় ৪০ জন পুলিশ ও আনসার সদস্য মোতায়েন থাকবে। প্রতিটি কেন্দ্রে চার স্তরের নিরাপত্তায় বিজিবি, র‌্যাব ছাড়াও পোশাকে-সাদা পোশাকে কেন্দ্রপ্রতি দুই শতাধিক পুলিশ মোতায়েন রাখা হবে।    

সিলেট জেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক জয়নাল আবেদীন বলেন, নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে প্রতি কেন্দ্রে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোতায়েন থাকবে। তাদের তদারকির জন্য চার জন এডিসি সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবেন।  

তিনি বলেন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় আনসার, পুলিশ ও র‌্যাবের পাশাপাশি আট প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন থাকবে। এর মধ্যে বিজিবি-৫ ব্যাটালিয়ন মহানগরী এলাকা এবং বিজিবি-৪১ ব্যাটালিয়ন উপজেলা পর্যায়ের কেন্দ্রগুলোতে মোতায়েন থাকবে।  

এদিকে, সিলেটের সিনিয়র জেলা নির্বাচনী কর্মকর্তা ও সহকারী নির্বাচনী কর্মকর্তা আজিজুল ইসলাম বলেন, সিলেটের ১৫টি কেন্দ্রের মধ্যে ১৩টি কেন্দ্রের নির্বাচনী সরঞ্জাম পৌঁছানো হয়েছে। তবে মহানগরী এলাকায় অবস্থিত দু’টি কেন্দ্র মদন মোহন কলেজ ও ইসরাব আলী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) নির্বাচনের দিন সকালে পৌঁছানো হবে। এছাড়া পুরুষ সদস্য পদে ৫টি ওয়ার্ডে নির্বাচন স্থগিত করার বিষয়টিও নিশ্চিত করেন তিনি।  

নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, প্রথমবারের মতো জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে চারজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত অ্যাডভোকেট লুৎফুর রহামান, ড. সর্দার এনামুল হক, জিয়াউদ্দিন আহমদ লালা ও ফখরুল ইসলাম। সংরক্ষিত ৫টি আসনে নারী সদস্য পদে ২৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।  

সিলেটে সদস্য পদে ১৫টি ওয়ার্ডে ১শ ১০ জন প্রার্থী থাকলেও ৫টি ওয়ার্ডের (১, ৩, ৮, ৯ ও ১৪) পুরুষ পদে নির্বাচন স্থগিত হওয়ায় ৩০ জন প্রার্থী আপাতত নির্বাচন করতে পারছেন না। যে কারণে ১০টি ওয়ার্ডে পুরুষ সদস্য পদে ৮০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। নির্বাচনে ১৫টি কেন্দ্রে ৩০ কক্ষে ভোট দেবেন এক হাজার ৪শ ৩৭ জন ভোটার। এরমধ্যে পুরুষ এক হাজার ১০২ এবং নারী ৩শ ৩৫ জন। নির্বাচনে প্রিজাইডিং অফিসার ১৫ জন, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ৩০ জন এবং পোলিং অফিসার হিসাবে দায়িত্বে পালন করবেন ৬০ জন কর্মকর্তা।

এর আগে চেয়ারম্যান পদে চারজন এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ২৮ জনসহ ১শ ৬০ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। চেয়ারম্যান ও সংরক্ষিতে ওয়ার্ড ছাড়া সদস্য পদে বাছাই ও প্রত্যাহার শেষে ১শ ১০ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য বহাল থাকেন।  

ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিলো পহেলা ডিসেম্বর। যাচাই-বাছাই হয় ০৩ ও ০৪ ডিসেম্বর। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ছিল ১১ ডিসেম্বর ও এরপর ১২ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ হয়।

জনপ্রতিনিধিদের ভোটে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং ১৫ জন সাধারণ ও পাঁচজন সংরক্ষিত নারী সদস্য নির্বাচিত হবেন। এ নির্বাচনে ভোট দেবেন সিটি ও পৌর মেয়র-কাউন্সিলর, উপজেলা পরিষদের চেয়ার‌ম্যান-ভাইস চেয়ারম্যান এবং ইউনিয়নে পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যরা।  

বাংলাদেশ সময়: ০৬২৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৮, ২০১৬
এনইউ/এসএনএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।