ঢাকা, শনিবার, ১৩ পৌষ ১৪৩১, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

লিটন হত্যায় বিএনপি-জামায়াতকেই দায়ী করছেন প্রধানমন্ত্রী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৪, ২০১৭
লিটন হত্যায় বিএনপি-জামায়াতকেই দায়ী করছেন প্রধানমন্ত্রী আ’লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ ও উপদেষ্টা পরিষদের যৌথসভায় বক্তব্য রাখাছেন প্রধানমন্ত্রী

গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের নির্বাচিত সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন হত্যায় বিএনপি-জামায়াতকেই ‍দায়ী করছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিএনপি সরকার উৎখাতে ব্যর্থ হয়ে গুপ্তহত্যা করছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

বুধবার (০৪ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ ও উপদেষ্টা পরিষদের যৌথসভার সূচনা বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।

বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলনের সহিংসতার বিরুদ্ধে মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনের শক্ত অবস্থানের কথা উল্লেখ করে তার হত্যাকাণ্ডের জন্য বিএনপি জামায়াতের দিকেই অভিযোগ তোলেন তিনি।

২০১৩, ২০১৪, ২০১৫ সালে বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলনে সহিংসতার কথা তুলে ধরে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন তাণ্ডবের বিরুদ্ধে স্বাধীনতার পক্ষে শক্তভাবে অবস্থান নিয়েছিলেন, যে কারণে আজকে তাকে জীবনটা দিতে হলো।

বিএনপি জামায়াতের বিরুদ্ধে গুপ্ত হত্যার অভিযোগ তুলে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, তারা নির্বাচনে অংশ নিলো না। নির্বাচন ঠেকাতেও পারেনি। এরপর সরকার উৎখাতের আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে এখন গুপ্তহত্যা করছে। খুন করাটাই তাদের চরিত্র।

বিগত সময়ে আওয়ামী লীগ নেতা সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া, গাজীপুরের সংসদ সদস্য আহসান উল্লাহ মাস্টার হত্যা ও ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, হত্যা করা, খুন করা, খুনিদের প্রশ্রয় দেওয়া বিএনপির চরিত্র। তাদের সর্ম্পকে দেশবাসীকে সতর্ক থাকতে হবে।

তিনি বলেন, ক্ষমতায় থাক আর বিরোধী দলে থাক, হত্যা তারা করেই যাবে। ওই একটা কাজে তারা সফলতা দেখাতে পারে। দেশের উন্নয়ন তারা করতে পারে না।

বিএনপি-জামায়াতের বিষয়ে সবাইকে সর্তক থাকার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জানি না, ওদের আরও কী পরিকল্পনা আছে।

শেখ হাসিনা বলেন, গাইবান্ধা এমন একটা জায়গা, বিশেষ করে সুন্দরগঞ্জ। এখানে একেবারে জামায়াতের একটা সন্ত্রাসী এলাকা। ওই এলাকাতে একসময় জামায়াতের এমপিও ছিলো। সেখানে আওয়ামী লীগ করা যায় এমন অবস্থা ছিলো না। সেখান থেকে লিটন নির্বাচিত প্রতিনিধি হয়ে এসেছে।
 
তিনি বলেন, গোলাম আজম ওখানে মিটিং করতে চেয়েছিলো, সেই মিটিং ও (লিটন) করতে দেয়নি। সেই থেকে জামায়াতের একটা ক্ষোভ ওর ওপর ছিলো। ওকে বেশ কয়েকবার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। আর অবশেষে তারা সেই হত্যাকাণ্ডটা ঘটালো।

লিটন হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই হত্যা মেনে নিতে পারি না। যারা এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত, তাদের যেভাবে হোক খুঁজে বের করে শাস্তি দিতে হবে।

লিটনের ওপর বারবার হামলা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, মাঝে একটা ঘটনা ঘটে গেলো। ওকে মারার জন্য ‘অ্যাম্বুশ’ করে রাখা হয়েছিলো। ও সবসময় সতর্ক ছিলো কাজেই কেনোমতে সেখান থেকে বেঁচে আসে। এ ঘটনায় একটা বাচ্চা ওর গুলিতে আহত হয়।

সংবাদ মাধ্যমের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পত্র-পত্রিকা এমনভাবে লেখালেখি করলো। ঘটনা যেটা ঘটলো, সেটা আর কেউ তুলে ধরলো না। এমনভাবে লেখা হয়, তার বিরুদ্ধে মামলা হয়, তার বন্দুকের লাইসেন্স জব্দ করা হয়। তার কাছ থেকে লাইসেন্সকৃত অস্ত্র নিয়ে নেওয়া হয়। তারপর থেকে সে আতঙ্কে থাকতো সবসময়, কখন তার ওপর হামলা হয়। শেষ পর্যন্ত তা-ই হলো, বাড়িতে ঢুকে তাকে হত্যা করা হলো।

বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, খালেদা জিয়ার চরিত্র হচ্ছে অপরাধীদের মদদ দেওয়া। খালেদা জিয়া অন্যায় শুধু নিজে করে নাই, আরও অন্যায়কারীদের আশ্রয়ও দিয়েছে। দেশবাসীর কাছে বিচার চাই।

সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে আরও সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ দেশের মাটিতে কোনো জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদের স্থান হবে না।

যৌথসভায় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ উপদেষ্টা ও কার্যনির্বাহী সংসদের অধিকাংশ সদস্য উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, গত শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনকে উপজেলার সর্বানন্দ ইউনিয়নের শাহাবাজ গ্রামে নিজ বাড়িতে ঢুকে গুলি করে সন্ত্রাসীরা। ঘটনার পরপরই রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি মারা যান।

বাংলাদেশ সময়: ২২৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৪, ২০১৬
এমইউএম/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।