ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

ঋত্বিক ঘটকের পৈতৃক ভিটাকে ‘হেরিটেজ’ ঘোষণার দাবি 

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২১৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০১৯
ঋত্বিক ঘটকের পৈতৃক ভিটাকে ‘হেরিটেজ’ ঘোষণার দাবি 

রাজশাহী: আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বাঙালি চলচ্চিত্রকার ঋত্বিক কুমার ঘটকের পৈতৃক ভিটাকে ‘হেরিটেজ’ হিসেবে ঘোষণা করার দাবি জানিয়েছেন রাজশাহীর তরুণ-তরুণীরা। এ দাবিতে বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে স্মারকলিপিও দিয়েছেন তারা। 

সকালে রাজশাহীর বিভাগীয় কমিশনার (অতিরিক্ত সচিব) মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকারের মাধ্যমে তরুণদের সংগঠন ইয়ুথ অ্যাকশন ফর সোস্যাল চেঞ্জ-‘ইয়্যাস’র এর নেতারা এ স্মারকলিপি জমা দেন।  

এ সময় রাজশাহীর তরুণ সংগঠন ইয়্যাস-এর সভাপতি
শামীউল আলীম, সাধারণ সম্পাদক নাজমুল ইসলাম, আকাশ ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক সুবাস কুমার শুভ উপস্থিত ছিলেন।

স্মারকলিপির অনুলিপি রেজিস্ট্রি ডাকযোগে পরিকল্পনামন্ত্রী, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ও সচিব, প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও আঞ্চলিক পরিচালক (রাজশাহী ও রংপুর বিভাগ), প্ল্যানিং কমিশন (জিইডি) এ সিনিয়র সচিবের কাছেও পাঠানো হয়েছে।

পরে একই দাবিতে সংগঠনটির পক্ষ থেকে রাজশাহীর জেলা প্রশাসক, সিটি মেয়র, রাজশাহী মহানগর পুলিশের কমিশনার এবং রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (আরডিএ) এর চেয়ারম্যানকে আলাদাভাবে স্মারকলিপি দেওয়া  হয়।  

এর আগে রাজশাহীর সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও চলচ্চিত্রপ্রেমীরা মিঞাপাড়ায় অবস্থিত ঋত্বিক ঘটকের পৈত্রিক ভিটা সংরক্ষণের দাবিতে রাজশাহী জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেয় প্রগতিশীল ১৩টি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তী ঋত্বিক কুমার ঘটকের রাজশাহী মহানগরীর মিঞাপাড়ার বাড়িতে শৈশব, কৈশোর ও তারুণ্যের একটি অংশ কেটেছে। এই বাড়িতে কিছু সময় বসবাস করেছেন উপমহাদেশের প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক মহাশ্বেতা দেবীও।

এ বাড়িতে থাকার সময়ই ঋত্বিক ঘটক রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল ও রাজশাহী কলেজে পড়েছেন। তিনি রাজশাহী কলেজ এবং মিঞাপাড়ার সাধারণ গ্রন্থাগার মাঠে প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়কে সঙ্গে নিয়ে নাট্যচর্চা করেছেন।  

ঋত্বিক ঘটক এই সময় রাজশাহীতে ‘অভিধারা’ পত্রিকা সম্পাদন করেছেন। বিলুপ্ত কল্পনা হলের ‘ভাবীকাল’ নামে একটি চলচ্চিত্রের ব্যানারও এঁকেছেন বলে জানা যায়। রাজশাহীর তৎকালীন সাংস্কৃতিক জগতে তিনি যৌবনকালে সবার মধ্যমণি হয়ে উঠেছিলেন। ওই সময়ে নাট্যান্দোলন ও সাহিত্য সম্পাদনা করেছেন।

সেই বাড়িটিই এরশাদ সরকারের আমলে ১৯৮৯ সালে নামমাত্র মূল্যে রাজশাহী হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজকে ইজারা দেওয়া হয়। তারাই এখন সম্পূর্ণ বাড়িটি ব্যবহার করছে।  

বাড়িটির এক অংশে ইতোমধ্যে বহুতল ভবন করছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। আরেক অংশে যেসব কক্ষে ঋত্বিকরা থাকতেন সেসব কক্ষও ব্যবহার করছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। তারই এক অংশ ভেঙে অস্থায়ী সাইকেল গ্যারেজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।  

সবাই এর তীব্র নিন্দা জানিয়ে অতি দ্রুত তা বন্ধ করে ঋত্বিকের পৈত্রিক ভিটা সংরক্ষণ করে হেরিটেজ হিসেবে ঘোষণার দাবি জানান।  

একই সঙ্গে এই ভিটায় ঋত্বিক ঘটক স্মৃতি জাদুঘরও গড়ে তোলার দাবি জানিয়েছেন তারা।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০১৯
এসএস/এমএ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।