ঢাকা, রবিবার, ১৪ পৌষ ১৪৩১, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

অন্যের সন্তানকে বাঁচানো মিরাজ খোঁজ পাচ্ছেন না বাবার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৫৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০২১
অন্যের সন্তানকে বাঁচানো মিরাজ খোঁজ পাচ্ছেন না বাবার বাবার অপেক্ষায় মিরাজ, বাবা মো. ইদ্রিস খান (ইনসেটে)

বরিশাল: এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সুগন্ধা নদীতে ডুবতে থাকা অন্যের সন্তানকে আগলে ধরে তার মায়ের বুকে ফিরিয়ে দিয়েছেন বরগুনা সদরের মাইঠা চৌমুহনী এলাকার মিরাজ। তবে, সন্ধান পাচ্ছেন না নিজের বাবা মো. ইদ্রিস খানের।

বাবার সন্ধান না পেয়ে কান্নায় বার বার মুর্চা যাচ্ছেন তিনি।

স্বজনরা জানান, বাবা-মাকে চিকিৎসা করাতে গত ১৭ ডিসেম্বর বরগুনা থেকে ঢাকায় যান মিরাজ। সঙ্গে স্ত্রী লামিয়া ও শিশু সন্তানকেও নিয়ে যান। বৃহষ্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) রাতে সবাই মিলে এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে চেপে বরগুনায় আসছিলেন। ভোররাতে লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের সময় মিরাজের পরিবারের সবাই উদ্ধার হলেও বাবা ইদ্রিস খানের কোনো সন্ধান মিলছে না।

মিরাজের বরাত দিয়ে স্বজনরা আরও জানান, বরগুনা আসার জন্য লঞ্চের নিচতলার ডেকে ছিলেন তারা সবাই। কিছুক্ষণ পরে পরিচিত একজন তার বাবা ইদ্রিস খানকে দোতলায় নিয়ে যান, তার সঙ্গে রাখার জন্য। লঞ্চে যখন আগুন লাগে তখন স্ত্রী ও মাকে বাঁচাতে লঞ্চ থেকে ধাক্কা দিয়ে নদীতে ফেলে দেন মিরাজ। পানি কম থাকায় মিরাজের মা নদীতে দাঁড়াতে পারায় ছেলের বউকে সন্তানসহ লাফ দিতে বলেন।

মিরাজ বলেন, ওই সময় পানির মধ্যে একটি শিশু আমার হাতে বাধে। তাকে আগলে ধরে টেনে তুলি। তখন তার মায়ের সন্তান হারানোর চিৎকার শুনতে পেয়ে শিশুটিকে তার কোলে তুলে দেই।

তিনি বলেন, আমরা সবাই ভালোভাবে তীর উঠতে পারলেও বাবার সন্ধান আর পাইনি। তবে বাবা যার কাছে ছিলেন তিনিও প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন। গোটা একটা দিন ও রাত পার হলেও ভষ্মিভূত লঞ্চ থেকে শুরু করে, হাসপাতাল, থানাসহ সব জায়গাতে খোঁজ নিয়েও বাবার সন্ধান পাচ্ছি না।

স্বজনরা জানান, শুক্রবার ভোররাত থেকেই মিরাজ ঝালকাঠির সুগন্ধার তীরে বিভিন্ন জায়গাতে বাবাকে খুঁজে বেড়াচ্ছেন। কিছুতেই তার আহাজারি থামছে না।

বাংলাদেশ সময়: ১০৫৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫,২০২১
এমএস/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।