ঢাকা, রবিবার, ২৫ কার্তিক ১৪৩১, ১০ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

আবদুর রব সেরনিয়াবাত স্টেডিয়াম হচ্ছে আন্তর্জাতিক মানের

মুশফিক সৌরভ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৯, ২০২২
আবদুর রব সেরনিয়াবাত স্টেডিয়াম হচ্ছে আন্তর্জাতিক মানের আবদুর রব সেরনিয়াবাত স্টেডিয়ামের কাজ চলছে। ছবি: বাংলানিউজ

বরিশাল: বরিশালের শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত স্টেডিয়ামকে আন্তর্জাতিক মানে তৈরিতে ব্যাপক উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এরই মধ্যে প্রায় অর্ধশত কোটি টাকা (৪৯ কোটি টাকার কিছু বেশি) বরাদ্দ হয়েছে।

এর মধ্যে প্রথম ধাপে পাঁচটি প্যাকেজের কাজ শুরুও হয়েছে। আর গোটা কাজ শেষ হলে এ স্টেডিয়ামটিতে আন্তর্জাতিক খেলাধূলা বিশেষ করে আন্তর্জাতিক মানে ক্রিকেট খেলা অনুষ্ঠিত হতে পারবে নির্বিঘ্নে। এর মধ্য দিয়ে বরিশাল বিভাগে আন্তর্জাতিক খেলাধূলার সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে মনে করছেন ক্রীড়াপ্রেমীরা।  

শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত স্টেডিয়াম বরিশালকে আন্তর্জাতিক মানের আধুনিকায়ন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রায় অর্ধশত কোটি টাকার এই প্রকল্পে আমূল পরিবর্তন আসবে ইনডোর ও আউটডোর স্টেডিয়ামে। সেসঙ্গে সুইমিং পুলের সংকটও নিরসন হবে। আর এতে দক্ষিণাঞ্চলে ক্রিকেট খেলার অবকাঠামোতেও আমূল পরিবর্তন ঘটবে। প্রকল্পের আওতায় আন্তর্জাতিক মানসম্মত ক্রিকেট মাঠ, পাঁচটি পিচ, গ্যালারিতে চেয়ার সিটিং ও আচ্ছাদন নির্মাণ, জিমনেসিয়াম, ইনডোর নেট প্র্যাকটিসের যাবতীয় ফেসিলিটি স্থাপন, প্যাভিলিয়ন ভবন, মিডিয়া ভবন, প্লেয়ার্স ড্রেসিং রুম, ডরমেটরি তৈরি, ফ্লাড লাইট, গার্ডেনিংসহ একাধিক উন্নয়ন কাজ করা হবে। তবে, প্রথম ধাপে পাঁচ প্যাকেজে প্যাভিলিয়ন ভবন ও মিডিয়া ভবন, চাপকলসহ ডরমেটরি নির্মাণ, ইনডোর নেট প্র্যাকটিসের ব্যবস্থা, খেলোয়াড়দের ড্রেসিং রুম, আন্তর্জাতিক সিস্টেমে মাঠ তৈরি ও গ্যালারিতে আচ্ছাদন দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে।

এদিকে দুই বছর মেয়াদী (২৩ সালের জুন মাস পর্যন্ত) প্রকল্পের পাঁচ প্যাকেজের কাজ গত মাসে শুরু হলেও সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, কোভিডের কারণে কাজ শুরু করতে দেরি হওয়ায় নির্ধারিত সময়ের থেকে কিছুটা সময় বেশি লাগতে পারে উন্নয়ন প্রকল্প শেষ করতে। এছাড়া বর্তমানেও স্বাধীনভাবে স্টেডিয়ামের সব জায়গা প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা ব্যবহার করতে পারছেন। যে বিষয়টি ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসনকেও মৌখিকভাবে অবগত করা হয়েছে। যদিও জেলা প্রশাসন আশ্বাস দিয়েছেন স্বাধীনভাবে প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের কাজ করার ব্যবস্থা করে দেওয়ার। অপরদিকে প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের মতে, এই স্টেডিয়ামটি এমনভাবে আধুনিকায়ন করা হচ্ছে, যাতে আন্তর্জাতিক মানে স্টেডিয়াম বা ভেনুতে বসে দেশি-বিদেশি খেলোয়াড়দের খেলা উপভোগ করতে পারবেন বরিশালবাসী। আর বরিশালের ক্রীড়াপ্রেমীরাও বলছেন, ন্যাশনাল স্পোর্টস কাউন্সিলের বাস্তবায়নে এটি বরিশাল বিভাগের সবচেয়ে বড় প্রকল্প, এর মাধ্যমেই বরিশাল আন্তর্জাতিক খেলাধূলার নতুন ভেন্যু হিসেবে পরিচিতি লাভ করবে।

বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সম্পাদক আলমগীর হোসেন আলো জানান, এর ফলে বরিশাল আন্তর্জাতিক খেলাধূলার সুযোগ সৃষ্টি হবে। ঢাকার সঙ্গে সঙ্গে এখানেও সিলেট-রাজশাহীর মতো অন্তর্জাতিক খেলাধূলার সুযোগ সৃষ্টি হবে। শুধু একটি স্টেডিয়াম নয়, এর সঙ্গে ইনডোর স্টেডিয়াম, আউটডোর আরেকটি ভেন্যু ছাড়াও লাইটিং ও সুইমিং পুল চালু হতে যাচ্ছে, যা বরিশালে কোনো দিনই চালু ছিল না।

প্রকল্প পরিচালক মো. শাহ আলম সরদার জানান, আবদুর রব সেরনিয়াবাত স্টেডিয়ামটি আন্তর্জাতিক মানে উন্নতিকরণ এবং জেলা সুইমিংপুলের উন্নয়ন প্রকল্প নামে প্রকল্পটি ৪৯ কোটি ৯৮ লাখ টাকার। ২০২৩ সালে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও শেষ হতে একটু বিলম্ব হবে, এর কারণ কোভিডের কারণে নির্ধারিত সময়ে এটি শুরু করা যায়নি। তবে, এটি দ্রুত করার এখন চেষ্টা চলছে।  

প্রকল্পের কার্যক্রম তদারকিতে এসেছেন প্রকল্প প্রকৌশলী শিবু লাল খাসকেল জানান, এখন ১৬ ধাপের গ্যালারি সংবলিত এই স্টেডিয়ামটি আর্ন্তজাতিক মানের করতে চাহিদা অনুযায়ী মাঠের কাজের শুরু হয়েছে। মাঠের মাটি ও পিচ তৈরির কাজ ছাড়াও আউটার স্টেডিয়ামের খোলোয়াড়দের ড্রেসিংরুম নির্মাণ পুরোদমে চলছে। সাধারণত আন্তর্জাতিক মানে মাঠ তৈরি করতে হলে চারিদিকে ৪শ ৫০ ফিট মাঠ দরকার এখানে তা ৪শ ৮০ ফিট, অনেক ক্ষেত্রে তার থেকেও বেশি রয়েছে। এছাড়া স্প্রিং ল্যাব সিস্টেমে মাঠ তৈরি ও গ্যালারিতে আচ্ছাদনের কার্যক্রম চলছে।

এ বিষয়ে বরিশাল জেলা ক্রীড়া সংস্থার যুগ্ম সম্পাদক মাহাবুব মোর্শেদ শামীম জানান, বরিশালে অবকাঠামো উন্নয়ন সূচনায় প্রভাব পড়বে এর খেলাধূলায়, এর ফলে গতি বাড়বে খেলাধূলায়।

বরিশালের জেলা প্রশাসক মো. জসীম উদ্দীন হায়দার জানান, এই উন্নয়ন কাজ সমাপ্ত হলে বরিশাল একটি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ভেন্যু হিসেবে গড়ে উঠবে। এদিকে সুইমিং পুলটির জন্য দেড় কোটি টাকা বরাদ্দ হলেও এটি সংস্কার করে তেমন লাভ নেই বলছেন সংশ্লিষ্টরা। তাই নতুন করে করতে হবে, এই কারণে হয়তো এর ডিপিপি চেঞ্জ হলে সময়সীমা ও খরচ দুটোই বাড়বে।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৯, ২০২২
এমএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।