ফেনী: উত্তরের বাতাসকে ব্যাকফুটে ফেলে জলীয়বাষ্পকে সঙ্গে করে ক্রমশ ঢুকতে শুরু করেছে পূবালী বাতাস। আর পূবালী হাওয়ার দাপট বাড়তে থাকা মানেইতো শীতের বিদায়, বসন্তের আগমন।
ফাগুন, হাওয়ায় হাওয়ায় করেছি যে দান-
তোমার হাওয়ায় হাওয়ায় করেছি যে দান-
আমার আপনহারা প্রাণ, আমার বাঁধন-ছেঁড়া প্রাণ।
শীতের জীর্ণ-রুক্ষতাকে পেছনে ফেলে প্রকৃতিকে আবার নতুন রূপে সাজিয়ে তোলার শুভেচ্ছা বার্তা নিয়ে আসছে ঋতুরাজ বসন্ত। শীতের রুক্ষ প্রকৃতির গাছে গাছে আসছে নতুন পাতা। আম-লিচু গাছে আসছে মুকুল। বাতাসে মুকুলের মোহনীয় ঘ্রাণ। মন পাগল করা সুরে পাখি গায় গান। আর বাতাসে ভাসে নানা রংয়ের মিষ্টি ফুলের ঘ্রাণ। প্রজাপতিরা রঙিন ডানা মেলে জানায় ঋতুরাজের আসার খবর।
বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম বসন্তের আগমনকে ঘিরে লিখেছিলেন, ‘এলো বনান্তে পাগল বসন্ত/বনে বনে মনে মনে রং সে ছড়ায় রে, চঞ্চল তরুণ দুরন্ত। ’
বসন্ত শুধু চারপাশের প্রকৃতিতেই নয়, মানুষের মনেও জাগায় প্রাণের ছোঁয়া। তাই বসন্তের প্রথম দিনটিকে উদযাপন করতে সবাই মেতে ওঠে উৎসবে। নিজেকে সাজিয়ে তোলে বসন্তের রংয়ে। চলতি বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি ফাল্গুন মাসের ১ তারিখ। এ দিনেই কাগজে-কলমে আগমন ঘটবে বসন্তের।
ফাল্গুনের প্রথম দিন লাল আর হলুদে বসন্ত বরণে মেতে ওঠে বাঙালি। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা ও জনপদে ছড়িয়ে পড়তো বাঙালির উৎসব। সার্বজনীন উৎসবের মধ্যে পহেলা বৈশাখের পর পহেলা ফাল্গুনই বাঙালির অন্যতম বড় উৎসব। এদিন আমরা জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মেতে উঠি উৎসবে। কিন্তু গত কয়েক বছর করোনা ভাইরাসের প্রকোপ দেখা দেওয়ায় উৎসব পালিত হচ্ছে সীমিত পরিসরে। তবে মানুষের মনে কিন্তু বসন্তের দোলা লেগেই থাকে। ফুলের ঘ্রাণ, সবুজ পাতা দেখে উৎফুল্ল হয়ে ওঠে মনো-প্রাণ।
বাংলা ফাল্গুন ও চৈত্র, এ দুটি মাস নিয়ে ঋতুরাজ বসন্ত। ফাল্গুন বাংলা বছরের ১১তম মাস। মাসটিতে গাছে গাছে ফোটে শিমুল, সোনালু, পলাশ, গাঁদা, আম, লিচুর মুকুলসহ নানা জাতের রঙিন ফুল। শীতের শুষ্কতায় ম্লান প্রকৃতিকে সজীব করে তুলতে মানুষের মনে সজীবতা দিতে বসন্তের প্রয়োজন পড়ে। মধুর বসন্ত আসে শীতের জীর্ণতা থেকে বের করে প্রশান্তি দিতে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২২
এসএইচডি/আরবি