ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৮ আষাঢ় ১৪৩১, ০২ জুলাই ২০২৪, ২৪ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

জোরে গান বাজাতে নিষেধ করেন বাবা, রাগে ছেলেকে হত্যা!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২২
জোরে গান বাজাতে নিষেধ করেন বাবা, রাগে ছেলেকে হত্যা! আসামি মোমিন ইনসেটে আবু হোরায়রা

চুয়াডাঙ্গা: চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার তালতলা গ্রামে নিখোঁজের ২৫ দিন পর তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র আবু হুরায়রার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে ওই গ্রামের কবরস্থান থেকে তার অর্ধগলিত হাত পা বাঁধা মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

 

পুলিশ জানায়, শত্রুতার জেরে প্রতিবেশী মোমিন নামে এক যুবক গলাটিপে তাকে হত্যা করে পুরাতন কবরের মধ্যে পুঁতে রাখেন। হত্যার পর বাড়িতে চিরকুট পাঠিয়ে চাঁদা দাবিও করেন হত্যাকারীরা। এ ঘটনার ২৫ দিন পর মরদেহের সন্ধান পায় পুলিশ। পরিবারের সর্ব কনিষ্ঠ সদস্যকে হারিয়ে পাগলপ্রায় আবু হুরায়রার স্বজনরা। তাদের মুখে কেবলই শিশু হত্যার বিচারের দাবি।

পুলিশ বলছে, দুই বছর আগে গ্রামে উচ্চ শব্দে গান বাজাতে নিষেধ করেছিলেন আবু হুরায়রার বাবা আব্দুল বারেক। সেসময় একটি সাউন্ড সিস্টেম ভেঙে গেলে ক্ষুব্ধ হয় মোমিন। এরই প্রতিশোধ নিতে টার্গেট করা হয় শিশু আবু হুরায়রাকে। গত ১৯ জানুয়ারি তাকে একা পেয়ে খরগোশ ছানা দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে কবরস্থানের মধ্যে নিয়ে যায় মোমিন। সেখানেই গলাটিপে হত্যা করা হয় তাকে। এরপর মরদেহ গুম করতে একটি পুরাতন কবরস্থানে মাটিচাপা দেওয়া হয়। এরপর ১০ লাখ টাকা দাবি করে একটি চিরকুট পাঠানো হয় শিশুটির বাড়িতে। টাকা দাবি করে মোবাইলে কলও দেন হত্যাকারী। এরই সূত্র ধরে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

চিরকুট

চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আবু তারেক ব্রিফিংয়ে বলেন, হত্যাকারী শিশুকে হত্যার ১৭ দিনের মাথায় চাঁদা দাবি করে একটি চিরকুট পাঠায়। সেখানে ১০ লাখ টাকা দাবি করা হয়। এরপর শিশুর বাবার মোবাইলে ফোন কলের মাধ্যমেও চাওয়া হয় চাঁদা। ওই নম্বরের সূত্র ধরে গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে নির্মাণ শ্রমিক মোমিনকে আটক করে পুলিশ। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে তার স্বীকারোক্তি মোতাবেক কবরস্থানের ভেতর থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু তারেক আরও বলেন, এ ঘটনায় পাঁচজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার অন্য আসামিদের ধরতে অভিযান চলছে।

এদিকে ৬ বোনের একমাত্র আদরের ভাইকে হারিয়ে পাগলপ্রায় তারা। শোকে স্তব্ধ গোটা এলাকা। তাদের চোখে মুখে কেবলই শিশু হত্যার সর্বোচ্চ বিচারের দাবি। যাতে আর কেউ এমন অপরাধ করতে না পারে তেমন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি এলাকাবাসীর।

গত ১৯ জানুয়ারি প্রাইভেট পড়তে গিয়ে নিখোঁজ হয় শিশু আবু হুরায়রা। এরপর ২৬ জানুয়ারি প্রাইভেট শিক্ষকসহ ৫ জনকে আসামি করে অপহরণ মামলা করেন তার বাবা। সে মামলায় প্রাইভেট শিক্ষক রনজু ও তার ভাই মনজু কারাগারে রয়েছেন।

এদিকে আজকের হত্যা মামলার প্রধান অভিযুক্ত তালতলা গ্রামের মোমিনকে গ্রেফতার দেখিয়েছে পুলিশ।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।