ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৩ কার্তিক ১৪৩১, ২৯ অক্টোবর ২০২৪, ২৫ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

পরিকল্পিত ফিজিক্যাল প্ল্যানিংয়ে স্থপতি ইনস্টিটিউট অগ্রগামী ভূমিকা রাখবে

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০০৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২২
পরিকল্পিত ফিজিক্যাল প্ল্যানিংয়ে স্থপতি ইনস্টিটিউট অগ্রগামী ভূমিকা রাখবে

ঢাকা: সারাদেশে পরিকল্পিত ফিজিক্যাল প্ল্যানিংয়ের যে প্রয়োজনীয়তার কথা বঙ্গবন্ধু বলেছেন তার বাস্তবায়নেও বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউট অগ্রগামী ভূমিকা নেবে বলে প্রত্যাশা করেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।

বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউটের ৫০ বছরপূর্তি নিয়ে শুক্রবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে আইএবি সেন্টারে একটি অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।

১৯৭২ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি স্থাপত্যাচার্য্য মাজহারুল ইসলামের নেতৃত্বে গঠিত হয়ে দেশের স্থপতিদের সংগঠন হিসেবে বাংলাদেশ স্থপতি ইন্স্টিটিউট আজ তার সৃষ্টিশীল ও কর্মমুখর অর্ধশতকের পথচলা পূর্ণ করল।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে অনলাইনে যুক্ত ছিলেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন পর্ষদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা সম্মানী সম্পাদক এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান।

শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি আমাদের জল মাটির ছোঁয়ায় স্থাপত্যকীর্তি তৈরির জন্য একটা তাগিদে স্থপতিরা এগিয়ে যাবেন এই প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন এবং সারাদেশে পরিকল্পিত ফিজিক্যাল প্ল্যানিংয়ের যে প্রয়োজনীয়তার কথা বঙ্গবন্ধু বলেছেন তার বাস্তবায়নেও স্থপতি ইনস্টিটিউট অগ্রগামী ভূমিকা নেবে বলে প্রত্যাশা করেন।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশের অর্থবহ এগিয়ে যাওয়ার স্বার্থে জাতির জনকের ভাবাদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে স্থপতিদের অগ্রগামী ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হবে।

স্থাপত্য পেশার উন্নয়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশ স্থপতি ইন্স্টিটিউট-এর আন্তরিক ও যুগোপযোগী দিকনির্দেশনা ও কর্মকান্ডের ফলে বাংলাদেশী স্থপতিরা পেশাগত উৎকর্ষতার মাধ্যমে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন এবং সম্মান বয়ে এনেছেন। এদেশের অনন্য ভৌগলিক, সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকারকে সমুন্নত রেখে শৈল্পিক ও প্রযুক্তি প্রসূত উৎকর্ষতার সমন্বয়ে স্থাপত্য সৃষ্টির মাধ্যমে তারা দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছেন।

এই প্রেক্ষাপটে, বাংলাদেশ স্থপতি ইন্স্টিটিউটের সূবর্ণ জয়ন্তীর বছর হিসেবে ২০২২ সালটিকে স্মরণীয় করতে বছরব্যাপী বিবিধ ও বহুমাত্রিক উৎসব ও অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে, যা স্থাপত্য অঙ্গনের অর্জন ও ভবিষ্যতের অগ্রযাত্রার প্রতিশ্রুত পরিকল্পনার প্রতিবিম্ব দেশবাসীর সামনে উপস্থাপিত হবে বলে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে বাংলাদেশ স্থপতি ইন্স্টিটিউট।

প্রতিষ্ঠার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউটের গৌরবময় অর্জনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয় এবং এই উপলক্ষে নেয়া সারাবছরের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচির ঘোষণা করা হয়।

বিগত ৫০ বছর প্রায় তিন হাজার স্নাতক ডিগ্রিধারী স্থপতিদের একমাত্র সংগঠন হিসেবে বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউট দায়িত্বশীল আর সংবেদনশীল পেশাদারীত্বের চর্চা নিশ্চিতকরণের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। সরকারের বিভিন্ন টেকসই উন্নয়ন উদ্যোগের পাশাপাশি জনসম্পৃক্ততায় সকলের সংগে মিলে সবার অন্তর্ভুক্তিতায় দেশ গঠনের জন্যে সংগঠনের সকল সদস্যদের নিয়ে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।

অনুষ্ঠানে সম্প্রতি বিশ্ব সেরা স্থাপত্যের জন্যে 'রয়েল ইনস্টিটিউট অব ব্রিটিশ আর্কিটেক্টস' কর্তৃক স্বীকৃত বিশ্ব বরেণ্য বাংলাদেশী স্থপতি কাশেফ চৌধুরী প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

এ অঞ্চলের স্থাপত্যের কাব্যতা আর শক্তির উন্মেষ নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার গৌরবময় পটভূমি আর তার বিস্তারের উপস্থাপনের মাধ্যমে তিনি আত্মবিশ্বাস আর আত্মনির্ভরশীলতায় নিজ স্বরূপ সন্ধানী অর্থবহ টেকসই উন্নয়ন স্থাপত্য চর্চার যথার্থতা তুলে ধরেন।

স্থপতি ইনস্টিটিউটের প্রেসিডেন্ট স্থপতি মোবাশ্বের হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সুবর্ণ জয়ন্তি উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক কাজী মোহাম্মদ আরিফ।

মোবাশ্বের হোসেন বলেন, আগামী দিনের দেশ গঠনের অভিযাত্রায় বিগত ৫০ বছরের ন্যায় স্থপতিরা সর্বোচ্চ মননশীলতায় আর দায়িত্বশীলতায় কর্তব্যনিষ্ঠ থাকবে, এটিই অঙ্গীকার।

অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, জনমানুষের জন্য অগ্রাধিকার স্থাপত্যচিন্তার প্রয়োজন। গণপরিসরভিত্তিক স্থাপত্যচর্চা আর প্রকৃতিবান্ধবতায় পরিসর ও বাস্তুকলার উন্নয়ন প্রত্যাশিত। অন্তর্ভুক্তিতায় আর বিশ্লেষণধর্মী মনোভাবের সংমিশ্রণে বাস্তুসংস্থানের প্রয়োজনকে জোর দিতে হবে।

অধ্যাপক আইনুন নিশাত বলেন, জল নির্ভরতা আর জলের সাথে সমঝোতার মাধ্যমে যথাযথ স্থাপত্যধারা তৈরির তাগিদ তৈরি হচ্ছে। জলবায়ু আর বৈশ্বিক পরিবর্তনের ধারায় আমাদের আরও সংবেদনশীল স্থাপত্যনির্মাণশৈলী খুঁজে বের করতে হবে। অভিযোজন ধারণায় তাঁর পরিশুদ্ধতার প্রক্রিয়াও আমাদের বের করা প্রয়োজন।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউটের সদস্য ও কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ০০০৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২২
এমআইএইচ/আরইউ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।