ঢাকা: রমজানে দ্রব্যমূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) সারাদেশে ২০ মার্চ থেকে দুই দফায় ১ কোটি নিম্ন আয়ের পরিবারের কাছে ফ্যামিলি কার্ডের ভিত্তিতে পণ্য বিক্রয় করা হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
শুক্রবার (১৮ মার্চ) কাওরান বাজারের টিসিবি কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় পবিত্র রমজান উপলক্ষে ভর্তুকি মূল্যে নিম্ন আয়ের এক কোটি পরিবারের মধ্যে টিসিবির পণ্য সরবরাহ কার্যক্রম সংক্রান্ত বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় পবিত্র রমজান উপলক্ষে ১ কোটি নিম্ন আয়ের পরিবারের মধ্যে জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে ফ্যামিলি কার্ডের ভিত্তিতে টিসিবির পণ্য বিক্রি চলবে। আমরা টিসিবির যে পরিমাণ কর্মসূচি ছিল ডাবল করে চালাতে চেয়েছিলেন কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এটা এক কোটি করা হয়েছে। স্থানীয় প্রতিনিধি নিয়েই এই কার্যক্রম ঢাকা শহরে চলবে। ঢাকার বাইরে ৫৭ লাখসহ ৮৭ লাখ মানে প্রায় ৫ কোটি লোক প্রত্যক্ষ ভাবে এই সহায়তা পাবে। ঢাকা শহরে ১২ লাখ পরিবারকে এটা দেওয়া হবে। তবে পেঁয়াজ নিয়ে খুব একটা চিন্তা নেই। রমজানের পর যদি এটা চলমান রাখতে হয় তাও করা হবে।
তিনি আরো বলেন, ৩০ লাখ পরিবার আগে থেকেই লিস্ট করা ৫৭ লাখ সেটা চেষ্টা করেছি প্রপারলি পৌঁছাতে পারবো। যা ভর্তুকি লাগবে তাই দেওয়া হবে। প্রপার কার্ড হোল্ডাররা এটা পাবে। আশা করছি দাম ধরে রাখতে হবে। এটা চলমান করবো সেই রকম নির্দেশনা নেই তবে ট্রাকে যেভাবে দেওয়া হচ্ছিল সেটা চলবে।
তিনি বলেন, রমজান শুরুর আগেই আমাদের মানসিকতা থাকে পণ্য রিজার্ভ করতে এটা প্রচারের মাধ্যমে জানানো যায় পণ্য পর্যাপ্ত আছে। যাতে সাপ্লাই চেইনের উপর চাপ না পড়ে এটা সবার খেয়াল রাখতে হবে।
তিনি আরো বলেন, করোনাকালীন বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষকে নগদ সহায়তা দেওয়ার যে ডাটাবেজ প্রণয়ন করা হয়। তার মধ্যে ৩০ লাখ পরিবার, সারাদেশে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও জেলা প্রশাসনের সহায়তায় ৫৭ লাখ ১০ হাজার উপকারভোগী পরিবারের জন্য ফ্যামিলি কার্ড বিতরণ করা হয়েছে। এর বাইরে ঢাকা সিটি করপোরেশনে ১২ লাখ এবং বরিশাল সিটি করপোরেশনে ৯০ হাজার উপকারভোগী রয়েছে। যাদের মধ্যে টিসিবি ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে পণ্য বিক্রি করা হবে।
তিনি বলেন, উপকারভোগী নির্ধারণের ক্ষেত্রে স্থানীয় জনসংখ্যা, দারিদ্রের সূচক বিবেচনা করা হয়েছে। পণ্য বিক্রয়ের ক্ষেত্রে প্রাথমিক প্রস্তুতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। ২০ মার্চ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত প্রথম পর্বে ০১ কোটি উপকারভোগী পরিবারের মধ্যে ২ লিটার সয়াবিন তেল ১১০ টাকা/লিটার, ২ কেজি চিনি ৫৫ টাকা ও ২ কেজি মসুর ডাল ৬৫ টাকা এবং দ্বিতীয় পর্যায় ৩ এপ্রিল থেকে উক্ত ৩টি পণ্যের সঙ্গে ২ কেজি ছোলা ৫০ টাকা কেজি দরে যুক্ত হবে।
মন্ত্রী বলেন, এই মানবিক কার্যক্রম বাস্তবায়নের সঙ্গে জনপ্রতিনিধি ও জেলা প্রশাসন সম্পৃক্ত থাকবে। বিগত ৮ মার্চ থেকে সংশ্লিষ্ট জেলাসমূহে পণ্য পাঠানো শুরু হয়েছে এবং প্রতিটি জেলায় টিসিবির পণ্য পর্যাপ্ত পরিমাণ পৌঁছে গেছে। জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে প্রতিটি জেলায় খাদ্য অধিদপ্তর, বিএডিসি ও নির্ধারিত গুদামে টিসিবি'র পণ্যসমূহ গ্রহণ, প্যাকিং চলছে। ২০ মার্চ থেকে পণ্য বিক্রির যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
তিনি বলেন, টিসিবির পণ্যসমূহ সুষ্ঠুভাবে বিতরণের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসন কর্তৃক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক/সমপর্যায়ের কর্মকর্তাকে নিয়োগ করেছেন এবং কাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা/কর্মচারী পদায়ন করা হয়েছে। কার্যক্রম তদারকির জন্য ট্যাগ অফিসার নিয়োগসহ সংশ্লিষ্ট প্রয়োজনীয় কমিটি স্থানীয় প্রশাসন কর্তৃক গঠন করা হয়েছে।
সচিব বলেন, দুই কিস্তিতে দুই বার প্যাকেজ দেওয়া হবে। শুধু ঢাকায় খেজুর দেওয়া হবে। কার্ডের মাধ্যমে এই পণ্য দেওয়া হবে। কোনো পণ্যই খোলা দেওয়া হবে না।
টিসিবির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আরিফুল হাসানের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৪ ঘণ্টা, মার্চ ১৮, ২০২২
এসএমএকে/কেএআর