ঢাকা, শুক্রবার, ১৬ কার্তিক ১৪৩১, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

রংপুরে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের ধর্মঘটে বিপাক মানুষ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৫ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০২২
রংপুরে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের ধর্মঘটে বিপাক মানুষ

রংপুর: পুলিশের হয়রানি বন্ধ ও ভাড়া বাড়ানোসহ আট দফা দাবিতে ধর্মঘট পালন করছেন রংপুরের ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকরা।

সোমবার (২১ মার্চ) ভোর ৬টা থেকে শুরু হওয়া এ ধর্মঘট টানা আট ঘণ্টা চলে শেষ হবে দুপুর ২টায়।

এতে বিপাকে পড়েছে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরা সহ সাধারণ মানুষজন। ফলে বিকল্প বাস সার্ভিস চালু করা হয়েছে।

শ্রমিকদের ৮ দফা দাবি হলো- নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে রিকশা, ভ্যান ও ব্যাটারিচালিত রিকশাভ্যানের ভাড়া বৃদ্ধি করে নগরের বিশেষ বিশেষ জায়গায় তালিকা টাঙানো, শ্রমিকদের ওপর অন্যায়ভাবে পুলিশের চাপিয়ে দেওয়া জরিমানা আদায় বন্ধ, ব্যাটারিচালিত রিকশার দুই হাজার নতুন লাইসেন্স দেওয়া, নগরের শাপলা চত্বর থেকে জিলা স্কুল মোড় পর্যন্ত প্রধান সড়কে রঙ দিয়ে চিহ্নিত করে অটোরিকশা ও ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচলে পৃথক লেন, রিকশাভ্যান ও ব্যাটারিচালিত রিকশা চুরি, ছিনতাই ও প্রতারণা করে অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে বিচার এবং ফুটপাত থেকে অবৈধ দোকান উচ্ছেদ করা।

অটোরিকশার এ ধর্মঘটে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন চলমান অনার্স তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষার্থীরা। সেই সঙ্গে দুর্ভোগে পোহাতে হচ্ছে অন্যান্য স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীসহ সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত চাকরিজীবীদের। সঠিক সময়ে গন্তব্যে পৌঁছানো নিয়ে ভোগান্তির শিকার হয়েছেন তারা। এ নিয়ে চাপা ক্ষোভ তৈরি হয়েছে তাদের মধ্যে

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক তমাল জানান, শহরে থেকে তাকে ক্যাম্পাসে যেতে হয়। ধর্মঘটে অটো না চলায় বাধ্য হয়ে বিকল্প পথে তাকে যেতে হচ্ছে।

শিক্ষার্থী সামিনা ইসলাম জানান, তিনি কলেজে যাবেন, কিন্তু কোনো অটোরিকশা নেই। বাড়ি থেকে কলেজের দূরত্ব অনেক। হেঁটে যাওয়া কষ্টকর।

নগরীর জলকরের রমজান আলী জানান, সন্তানকে নিয়ে দীর্ঘক্ষণ অটোরিকশার জন্য অপেক্ষা শেষে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। হঠাৎ অটোরিকশা চালকদের ধর্মঘটের কারনে এই বিড়ম্বনায় পরেছেন তিনি।

চাকরিজীবী আবেদ হোসেন বলেন, গতকাল মাইকিং শুনেছি, তাই হাতে সময় নিয়ে বেড়িয়েছি। হেঁটেই অফিস যাচ্ছি।

তবে তিনি অভিযোগ করে বলেন, অটোরিকশা চালকরা এমনিতেই ভাড়া বেশি নেয়। অনিয়ন্ত্রিতভাবে চলাচল করে। রংপুর শহর অটোর শহর মনে হয়। যানজটে চলাচল করা খুব মুশকিল।

ধর্মঘট বিষয়ে জাতীয় শ্রমিকনেতা তোফা জানান, পুলিশের হয়রানি ও দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদসহ আট দফা দাবিতে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। দাবি আমলে নেয়নি। অনেকের কষ্ট হলেও করার কিছু নাই। ধর্মঘটে সবাই সাড়া দিয়েছে। আমাদের দাবি না মানলে আমরা আরও কঠোর আন্দোলনের ডাক দিবো।

এদিকে চলমান ধর্মঘটে মানুষের ভোগান্তি কমাতে বিকল্প বাস সার্ভিস চালু করা হয়েছে। অনেকটা অটোর ভাড়ার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বাসগুলো শহরের ভিতরে যাত্রী পরিবহন করছে। শহরের বিভিন্ন স্টপেজে নির্দিষ্ট সময় পরপর যাত্রী নিয়ে এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে ছুটে চলছে বাসগুলো।

রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা জানান, সিটি করপোরেশন থেকে ৮ হাজার ২৪০টি ব্যাটারিচালিত চার্জার রিকশা ও অটোরিকশার নিবন্ধন দেওয়া হয়েছে। অথচ রংপুরে অনেক বেশি অটোরিকশা ও চার্জার রিকশা চলাচল করছে। ধর্মঘটের ৮ দফার অনেক বিষয় আমাদের এখতিয়ারভুক্ত নয়।

ধর্মঘট নিয়ে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মেনহাজুল আলম জানান, অটোশ্রমিকদের দাবিগুলো অধিকাংশই আমাদের সংশ্লিষ্ট না। তবে একটি দাবি আমাদের সংশ্লিষ্ট। পুলিশ পেশাদারির বাহিরে কাউকে হয়রানি করে না। রংপুরে অবৈধভাবে অনেক অটো চলে, অবৈধ অটোরিকশার বিরুদ্ধে পুলিশের তৎপরতা চলমান থাকবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৯ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০২২
এনএইচআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।