চাঁপাইনবাবগঞ্জ: চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল পৌরসভার সাপ্তাহিক রোববারের হাটে অতিরিক্ত খাজনা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। সরকারি নির্ধারিত খাজনার চেয়ে চারগুন বেশি হারে খাজনা নেওয়া হচ্ছে।
পৌরসভার অর্ন্তগত পুরোনো ঐতিহ্যবাহী সাপ্তাহিক রোববারের হাট। সপ্তাহে প্রতি রোববার এখানে সবজি, মাছ, মসলা, কাপড়, কাঠ বিভিন্ন পণ্য ক্রয়-বিক্রয় হয়। এই হাটে পার্শ্ববর্তী গোমস্তাপুর, নিয়ামতপুর, তানোর, আমনুরাসহ নাচোল উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের ব্যবসায়ীরা তাদের উৎপাদিত পণ্য ক্রয়-বিক্রয় করেন। রয়েছে তিন শতাধিক দোকান রয়েছে। কিন্তু হাটে সরকারের নির্ধারিত মূল্যের চাইতে কয়েকগুন অতিরিক্ত খাজনা আদায় করছেন হাট ইজারাদার।
রোববার বিকেলে হাটে দেখা যায় নিয়ামতপুর উপজেলার তুলার বন এলাকার আব্দুল সোনার ছেলে বুলন (৪০) শসা (ক্ষীরা) বিক্রেতা অতিরিক্ত খাজনা নেওয়ার জন্য ইজারাদারের সঙ্গে তর্কে জড়ায়।
বিক্রেতা বুলন জানায়, আমি একজন শসা ব্যবসায়ী, নিয়ামতপুর উপজেলা থেকে নাচোল রোববারের হাটে শসা বিক্রি করতে এসেছি। ইজারাদার (সাব) হানিফ ও তার দলবল প্রতি হাটে আমার কাছে সরকারি নির্ধারিত খাজনার চেয়ে ১৫০ টাকা নেন। আজ আমি শসা নিয়ে এসেছি দেড় মন। আজও ইজারাদার ১৫০ টাকা খাজনা জোর করে নেন আমার কাছে। প্রতিবাদ করতে গেলে ইজারাদার উল্টো আমাকে মারধর করে।
অপর এক শসা ও আলু ব্যবসায়ী দুলাল অভিযোগ করে বলেন, প্রতি রোববার হাটে ইজারাদার আমার কাছে এক মণ করে শশা ও আলুর ইজারা মূল্য ৪০ টাকার জায়গায় ১৫০ টাকা করে খাজনা নেন। প্রতিবাদ করতে গেলে ইজারাদার আমাদের হাটে আসতে মানা করে।
সবজি ব্যবসায়ী আলম বাংলানিউজকে জানান, ইজারাদার সরকারি মূল্যের চেয়ে চারগুন বেশি ৮০ টাকা খাজনা আদায় করছে। তার দাবি সরকারি মূল্য হিসেবে প্রতি মণ শশার খাজনা ২০ টাকা হলেও তার কাছে নেয়া হয়েছে ৮০ টাকা।
এদিকে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ইজারাদারকে সরকার নির্ধারিত খাজনা আদায়ের মূল্য তালিকা হাটে টাঙ্গিয়ে রাখার নিয়ম হলেও এ হাটে এর কোনো বালাই নেই। যার ফলে ইচ্ছামত খাজনা আদায় করছে ইজারাদার। আর অতিরিক্ত খাজনা আদায়ের প্রভাব পড়ছে ব্যবসায়ী ও ক্রেতা-বিক্রেতার উপর। আর এর প্রভাবে বাজারে বাড়ছে প্রয়োজনীয় পণ্যের।
এ বিষয়ে হাটের ইজারাদার কাজলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন আমি তো খাজনা আদায় করিনা, হানিফ নামে এক ব্যক্তি খাজনা আদায় করে দেয়। তার নির্দেশের বাইরে কেন বেশি খাজনা নেয়া হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন অতিরিক্ত খাজনা না আদায় করতে হানিফকে নির্দেশ দিবো।
এ বিষয়ে নাচোল পৌরসভার মেয়র আব্দুর রশিদ খাঁন ঝালু বলেন, এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ না দেয়ায় বিষয়টি জানা নাই। তারপরও বিষয়টি তদন্ত করে সত্যতা মিললে ইজারাদারের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নাচোল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শরিফ আহম্মেদ বলেন, বিষয়টি যেহেতু জেলা প্রশাসকের আন্ডারে সেহেতু সেখানে যোগাযোগ করুন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মহসিন মৃধা বলেন,অতিরিক্ত খাজনা আদায়ের কোনো সুযোগ নেই। বিষয়টি তদন্তের জন্য নাচোল ইউএনওকে বলব।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৯ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০২২
এনটি