ঢাকা: রাজধানীর প্রধান প্রধান সড়কসহ ছোট-বড় সব সড়কেই যানবাহন ও পথচারীর চলাচল রয়েছে। তবে শুক্রবার বাদে সপ্তাহের বাকি ৬ দিনই যানজট নাকাল থাকে সব সড়ক।
এদিকে, সকাল থেকে কর্মব্যস্ত মানুষের চলাচল শুরু হয়। সঙ্গে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরাও বের হন। তীব্র যানজটের কারণে গন্তব্যে সময়মত পৌঁছানোটাই সবার বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়।
সকালে শান্তির ঘুম থেকে উঠে সতেজ মন নিয়ে বাসা থেকে বের হন সবাই। কিন্তু সকালের যানজট কর্মব্যস্ত মানুষের কর্মচাঞ্চল্যকে বিষাদ করে তোলে। যার ধকল সারাদিন বহন করে কাজ করতে হচ্ছে তাদের। তবে এই চিত্র এক/দুইদিনের নয়, নিত্যদিনের।
রাজধানীর সড়কগুলোতে যানজট নিয়ন্ত্রণে পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের সদস্যরা প্রাণপন চেষ্টা করলেও কমছে না ভোগান্তি। তবে এই যানজট না কমার পেছনে কয়েকটি কারণ খুঁজে বের করলেও জোরাদার কোনো পদক্ষেপ নেই।
যানজটের বেশ কিছু কারণ খুঁজে দেখা যায়, একটি রাজধানীর জন্য যে পরিমাণ সড়ক থাকা প্রয়োজন তা ঢাকায় নেই। অপরদিকে, সড়কে যাত্রীর তুলনায় পরিবহনের সংখ্যা অনেক বেশি। আর গণপরিবহন থেকে ব্যক্তিগত যানবাহনের সংখ্যা অনেক বেশি রয়েছে। মূল সড়কের দুই পাশে বড় বড় অনেক দালান বা ভবন রয়েছে ঠিকই। কিন্তু নেই পার্কিংয়ের ব্যবস্থা।
এদিকে গণপরিবহন চালকরা সড়কের নির্দিষ্ট স্থান ছাড়াও যত্রতত্র যাত্রী ওঠানামানো করছেন। একারণে গণপরিবহনের পেছনে থাকা সব যানবাহন আটকে পড়ে সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। এছাড়াও যানজটের অনেক কারণ রয়েছে। অপরদিকে উত্তরা, মিরপুর আগারগাঁওয়ে চলছে মেট্রোরেল ও বাস র্যাপিড ট্রানজিট প্রকল্প নির্মাণের কাজ। সব মিলিয়ে সপ্তাহের শুক্রবার ছাড়া বাকি দিনগুলোতে রাজধানীর সড়কগুলোতে থাকছে প্রচণ্ড যানজট।
প্রতিদিনের মত বুধবার (৩০ মার্চ) সকালে মোহাম্মদপুরের বাসা থেকে রামপুরায় অফিসের উদ্দেশ্যে বের হন সোহাগ হাওলাদার। তিনি মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে আলিফ পরিবহনের বাসে ওঠেন। কিন্তু বাসটি সড়কে যানজট ঠেলে খুব ধীরগতিতে চলছে। দুই ঘণ্টারও বেশি সময় পর তিনি রামপুরা আসতে পারলেও অফিসে পৌঁছাতে দেরি হয় তার।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরিরত সোহাগ হাওলাদার অনেকটা ক্ষোভ ঝেঁড়ে বলেন, সব সড়কে কি এক সঙ্গেই নির্মাণ কাজ ধরতে হবে? আর তাই যদি হয়, তবে নির্মাণ কাজ এত ধীরগতিতে চলছে কেন? আর ট্রাফিক পুলিশও দীর্ঘক্ষণ সিগন্যাল আটকে রাখছে। প্রতিদিন এই যানজট ঠেলে চলাচল খুবই কষ্টসাধ্য বিষয়। সরকারের এ বিষয়ে জোর নজর দেওয়া দরকার।
এদিকে, বাস চালকরা বলছেন, সড়কে সংস্কার কাজ চলছে। তাই আমাদেরও গাড়ি চালাতে কষ্ট হচ্ছে। আর রাস্তায় প্রাইভেটকার অনেক বেশি চলে এখন।
বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজধানীর উত্তরা, হাউজবিল্ডিং জসীমউদ্দিন, বিমানবন্দর, খিলক্ষেত, নতুনবাজার, বাড্ডা, রামপুরা, বনানী, মহাখলী, মালিবাগ, মোহাম্মদপুর, শ্যামলী, কারওয়ান বাজার এলাকায় সরেজমিনে ঘুরে রাজধানীর যানজটের এমন চিত্রই দেখা যায়। এসব এলাকায় খুব ধীরগতিতে যানবাহনগুলো চলাচল করছে।
এদিকে কুড়িল থেকে বাড্ডা, রামপুরা, মালববাগ, মগবাজার, মৌচাক, বাংলামোটর, ফার্মগেটসহ বিভিন্ন এলাকায় তিন চাকার রিকশাও চলতে দেখা যায়। এতে সড়কে যান চলাচলে চালকদের অনেক বেগ পেতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে ডিএমপির মহাখালী ট্রাফিক বক্সের পরিদর্শক মো. সালাহউদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, সকাল ৬টা থেকে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা সড়কে যানজট নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যানজটও বাড়ছে। আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তবে যানজট নিরসনে চালক, যাত্রী ও পথচারী সবাইকে ট্রাফিক আইন মেনে চলতে হবে। সেই সঙ্গে সচেতনতা বাড়লে যানজট নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৮ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০২২
এসজেএ/এমএমজেড