ঢাকা: স্ত্রীর সঙ্গে কলহের জের ধরে দুই বছরের শিশু রিহানকে অপহরণের পর হত্যা করে দুলাভাই ফরিদ। এই ঘটনায় রাজধানী যাত্রাবাড়ী থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের হয়।
বুধবার (০৬ এপ্রিল) এই তথ্য নিশ্চিত করেন যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম।
মানিকগঞ্জ দৌলতপুর চরকাটারী গ্রামের ওমর বাবুর্চির সন্তান রিহান। পরিবারের সঙ্গে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী মাতুয়াইল এলাকায় থাকতো।
এদিকে এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা যাত্রাবাড়ী থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) এরশাদ আলী জানান, সোমবার (০৪ এপ্রিল) সন্ধ্যার মাতুয়াইল বাসা থেকে শিশু রিহানকে অপহরণ করে যশোর নিয়ে যায় তার দুলাভাই মীর আবু বক্কর ফরিদ। যশোর যাওয়ার পথে বাসের ভেতর শিশুটির পুরুষাঙ্গে ও শরীরে আঘাত করে। পরে রিহান অসুস্থ হয়ে পড়লে এক পর্যায়ে যশোর হাসপাতালে তাকে ভর্তি করে। মঙ্গলবার (০৫ এপ্রিল) হাসপাতালে মারা যায় রিহান।
এর আগে শিশুটির পরিবারের পক্ষ গত (০৪ এপ্রিল) সোমবার যাত্রাবাড়ী থানায় একটি অপহরণ মামলা করা হয়। পরে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে যশোর থেকে ফরিদকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় পুলিশ।
দেড় দুই বছর আগে রিহানের বড় বোন তুলিকে বিয়ে করে ইলেকট্রিক মিস্ত্রি ফরিদ। তারাও যাত্রাবাড়ী মাতুয়াইল এলাকার অন্য একটি বাসায় থাকতো। কয়েকদিন যাবৎ স্বামীর সঙ্গে মনোমালিন্য হওয়ার কারণে স্ত্রী চলে যায় বাপের বাড়ি মাতুয়াইলে। এতেই স্ত্রীর উপর ক্ষিপ্ত হয়ে শ্বশুরবাড়ি থেকে শিশু শ্যালককে অপহরণ করে ফরিদ।
তিনি আরো জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ফরিদ জানিয়েছে, তুলীকে প্রেম করে বিয়ে করে সে। তার বাবা-মা বিষয়টি মেনে নেয়নি। সে তার স্ত্রী তুলিকে নিয়ে আলাদা থাকতো। তার মা খালাদের পরামর্শে তুলি তাকে ছেড়ে বাবার বাসায় চলে যায়। এতে তুলিকে ফিরে পাওয়ার আশায় শ্যালক রিহানকে নিয়ে যশোরের উদ্দেশে রওনা দেয় ফরিদ। একপর্যায়ে বাসের ভেতর বিরক্ত হয়ে শিশু রিহানের বুকে ও পেটে চাপ দেয়। পরে রিহান কান্নাকাটি করলে তার পুরুষাঙ্গ ও অন্ডকোষে চাপ দেয়। পরে যশোরে পৌঁছালে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করলে সেখানেই মারা যায়।
বুধবার (০৬ এপ্রিল) যশোর সদর হাসপাতালে শিশুটির ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। ঘাতক ফরিদসহ মৃতদেহ ঢাকায় আনা হয়েছে। পরে পরিবারের কাছে লাশ বুঝিয়ে দেওয়া হয়। অপহরণ মামলাটি এখন হত্যা মামলা হবে বলে জানান ওই পুলিশ কর্মকর্তা।
বাংলদেশ সময়: ২৩২৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৬, ২০২২
এজেডএস/এনএটি