ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৯ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

জুড়ীতে চা শ্রমিকদের সরকারি বরাদ্দের টাকা আত্মসাৎ

ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ৭, ২০২২
জুড়ীতে চা শ্রমিকদের সরকারি বরাদ্দের টাকা আত্মসাৎ

মৌলভীবাজার: মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলায় চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে গত কয়েক বছর থেকে সরকার চা শ্রমিকদেরকে এককালীন প্রতি শ্রমিককে ৫ হাজার টাকা আর্থিক অনুদান দিয়ে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে জুড়ী উপজেলার এলবিন টিলা চা বাগানের তালিকাভুক্ত ১৮৫ জন শ্রমিকের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

জুড়ী উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের কর্মকর্তারা চা বাগানের উপস্থিত হয়ে বরাদ্দকৃত অর্থের চেক বিতরণ করেন। বনামালী ব্যানার্জী, আলতা ব্যানার্জী, বগলু ব্যানার্জী, বিজলী ব্যানার্জী, হরি ব্যানার্জীসহ ৮জন শ্রমিক উপস্থিত না থাকায় বাগান পঞ্চায়েত সভাপতি হরগবিন্দ গোস্বামীর অনুরোধে সমাজ সেবা কর্মকর্তা ৮ জন চা শ্রমিকের চেক পঞ্চায়েত সভাপতিকে হস্তান্তর করেন। তবে চেকগুলো শ্রমিকদের হাতে পৌঁছে দেওয়ার কথা থাকলেও পঞ্চায়েত সভাপতি তা করেননি।

এ নিয়ে কয়েকবার সালিশ বৈঠক করেও শ্রমিকরা চেক ফেরত পায়নি।

সোমবার (৪ এপ্রিল) বলনমালী ব্যানার্জীসহ ৮ জন শ্রমিক পঞ্চায়েত সভাপতি হরগবিন্দ গোস্বামীর বাড়িতে গিয়ে বরাদ্দকৃত অর্থের চেক ফেরত চান। তখন পঞ্চায়েত সভাপতি শ্রমিকদের চেক ফেরত না দিয়ে নানান তালবাহানা শুরু করেন। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়।

ওই দিন রাত ১০ টায় পঞ্চায়েত সভাপতির নেতৃত্বে সাজু গোস্বামী, বিদ্যুৎ গোস্বামী, রামু গোস্বামীসহ ১০জনের একটি দল দা লাটিসোঠা নিয়ে বলনামী ব্যানাজীর বাড়িতে হামলা চালায়। এসময় তারা বাড়ির লোকজনকে মারধর করে ও ব্যাপক ভাংচুর চালায়। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় আহত বনলামী ব্যানার্জীর স্ত্রী মমতা ব্যানার্জীকে জুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় মমতা ব্যানার্জী বাদি হয়ে জুড়ী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।

সরেজমিন জানা যায়, চা শ্রমিকদের জীবন-মান উন্নয়নের তালিকায় নাম তালিকাভুক্ত করার জন্য পঞ্চায়েত সভাপতি হরগবিন্দ গোস্বামী প্রায় ৩০০ চা শ্রমিকের থেকে ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত নিয়েছেন। কিন্তু লিস্টে এসেছে মাত্র ১৮৫ জন শ্রমিকের নাম।

পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি হরগবিন্দ ঘোস্বামী বলেন, যে ৮জন শ্রমিক চেক না পাওয়ার অভিযোগ করেছে সেটি সত্য নয়। যথাসময়ে তাদের চেক পৌঁছে দিয়েছি।

জুড়ী উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা সুমন দেবনাথ বলেন, চা শ্রমিকদের জীবন মান উন্নয়নের এককালীন অর্থের চেক আমাদের অফিসের কর্মকর্তাদের মাধ্যমে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। ৮ জন শ্রমিক অনুপস্থিত থাকায় চা বাগান পঞ্চায়েত সভাপতির অনুরোধে চেক গুলো তার কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে তিনি জানতে পারেন চেক গুলো শ্রমিকরা পাননি।

তদন্ত সাপেক্ষে পঞ্চায়েত সভাপতির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১০৫৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৭, ২০২২
বিবিবি/এনএইচআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।