রাজশাহী: রাজশাহী থেকে স্বাভাবিক হয়েছে ট্রেন চলাচল। বুধবার (১৩ এপ্রিল) দুপুর দেড়টার দিকে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন থেকে ঢাকার উদ্দেশে প্রথমেই ছেড়ে যায় আন্তঃনগর ট্রেন সিল্কসিটি এক্সপ্রেস।
এর আগে বুধবার সকাল ৬টা থেকে হঠাৎ করে রাজশাহী থেকে ঢাকাসহ সারা দেশের ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন থেকে সকালে বনলতা, সিল্কসিটি, সাগরদাঁড়ি ও মধুমতি এক্সপ্রেসসহ সব আন্তঃনগর, কমিউটর ও মালবাহী ট্রেন চলাচল পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই বন্ধ ছিল।
এতে নির্ধারিত সময়ে রেলওয়ে স্টেশনে এসে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েন পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের যাত্রীরা। অনেকে টিকেট ফেরত দিয়ে বিকল্প হিসেবে বাসে করে নিজ নিজ গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা দেন। ভিড় থাকায় অনেকে আবার টিকেটের মূল্য তাৎক্ষণিকভাবে ফেরত পাননি। তদেরকে পরে আসার কথা বলা হয়।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদার জানান, লোকো মাস্টারদের (ট্রেন চালক) আকস্মিক কর্মবিরতির কারণে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সব রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন থেকে আন্তঃনগর, বিরতিহীন, কমিউটার ও মালবাহীসহ মোট ৪০টি ট্রেন চলাচল করে। সবগুলো ট্রেনই বন্ধ ছিল।
এই ঘটনায় রেলমন্ত্রী সকালেই ঢাকার কমলাপুরে ছুটে যান। আলোচনা শেষে মন্ত্রীর আশ্বাসের পর কর্মবিরতি তুলে নেওয়ায় আবারও ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
এতে যাত্রীরা হয়রানির মধ্যে পড়েন। তবে যাত্রা বাতিল হওয়ায় রেলওয়ে আইন অনুযায়ী সব যাত্রীকে টিকেট ফেরত দিয়ে টাকা নেওয়ার কথা জানিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে ভিড় বেশি থাকায় টাকা ফেরতের জন্য সাতদিন পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে। যারা এখনও টিকেটের টাকা ফেরত পাননি তারাও পেয়ে যাবেন।
এদিকে বেতন-ভাতা (মাইলেজ) সংক্রান্ত দাবি মেনে না নেওয়ায় পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়েসহ সারাদেশেই ধর্মঘটে যান লোকো মাস্টাররা (ট্রেন চালক)।
রেলওয়ের রানিং স্টাফ (চালক-গার্ড) ও শ্রমিক-কর্মচারী সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান জানান- অর্থ মন্ত্রণালয় তাদের দাবি মেনে না নেওয়ায় ট্রেনের লোকো মাস্টার ও রানিং স্টাফ কর্মচারীরা কর্ম বিরতিতে গিয়েছিলেন। পরে দাবি পূরণের আশ্বাস পাওয়ায় তারা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন, এখন ট্রেন চলছে।
রেল যোগাযোগ সচল রাখতে সাধারণত একজন চালককে দিনে গড়ে ১৪ থেকে ১৮ ঘণ্টা ট্রেন চালাতে হয়। এজন্য তাদের বাড়তি মজুরি ও পেনশনে ৭৫ শতাংশ টাকা দেওয়া হয়। বেতনের বাইরেও যত মাইল দায়িত্ব পালন করেন এবং অতিরিক্ত সময় কাজ করেন, তার জন্য নির্দিষ্ট হারে ভাতা পেয়ে থাকেন তারা।
এটা রেলে ‘মাইলেজ ভাতা’ হিসেবে পরিচিত। সম্প্রতি রেলের অতিরিক্ত এ সুযোগ-সুবিধা কমিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে অর্থ মন্ত্রণালয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে রেল চালকরা বুধবার থেকে আবারও কর্মবিরতিতে যান। এর আগে ৮ ঘণ্টার বেশি কাজ না করার ঘোষণাও দেন তারা। এ কারণে একবার ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়েরও আশঙ্কা দেখা দিয়েছিল।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০২২
এসএস/এমএমজেড