ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: চারুকলা অনুষদ প্রাঙ্গণজুড়ে চলছে মঙ্গল শোভাযাত্রার নানা কর্মযজ্ঞ। বিগত ১০ দিনের অধিক সময় ধরে তৈরি নানা শিল্পকর্মে চলছে শেষ মুহূর্তের তুলির আঁচড় কিংবা তৈরি করা প্রতিকৃতিগুলোর সজ্জাকার্যক্রম।
সার্বিক দিক বিবেচনায় বর্ষবরণের অধিকাংশ প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি থেকে বের করা হবে বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখের বর্ণাঢ্য আয়োজন মঙ্গল শোভাযাত্রা। সরেজমিনে ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা গেছে, টিএসসি এলাকায় কড়া নিরাপত্তা বলয় তৈরির জন্য সিসিটিভি ক্যামেরা ও কন্ট্রোল রুম তৈরি করা হচ্ছে। চারুকলায় চলছে মঙ্গলশোভাযাত্রার শেষ মুহূর্তের কাজ। চারুকলার শিক্ষক শিশির ভট্টাচার্য শিক্ষার্থীদের নিয়ে কাঠামো বা স্ট্রাকচার তৈরির কাজ করছেন। এবার চারটি স্ট্রাকচার থাকবে। ঘোড়া, টেপা পুতুল, মাছ ও পাখি। চলছে এসব স্ট্রাকচারের সজ্জা কার্যক্রম। এছাড়া উৎসব উপলক্ষে তৈরি করা বিশেষ মুখোশ ক্রয় করছেন আগত দর্শনার্থীরা।
এবার মঙ্গলশোভাযাত্রা আয়োজনের দায়িত্বে রয়েছে অনুষদের ২২ ও ২৩ তম ব্যাচ। জানতে চাইলে ড্রয়িং অ্যান্ড পেইন্টিং বিভাগের ইব্রাহিম খলিল আসমানী বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের প্রস্তুতি প্রায়ই শেষ। রাতেই ফাইনাল হবে সবকিছু। করোনার পর এবার বড় পরিসরে শোভাযাত্রা উদযাপনের আশা করছি। শিক্ষার্থীদের তৈরি করা বিভিন্ন পেইন্টিং, মুখোশ বিক্রির জন্য রাখা হয়েছে। তুহিন পাখি ২৫০, তিন পাখি ৩৫০, ছোট মুখোশ ৩০০, বড় মুখোশ ১৭০০ থেকে ২-৩ হাজারেও বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া একটি সরার দাম ১ হাজার, ছোট বাঘ ২০০, পেঁচা ২০০, ঝুলন্ত পাখি ৫০ করে বিক্রয় হয়। একইসাথে জয়নুল গ্যালারিতেও এসব সৌন্দর্যমন্ডিত জিনিসপত্র প্রদর্শনী ও বিক্রয়ের জন্য রাখা হয়েছে।
মঙ্গলশোভাযাত্রা নিয়ে চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন বলেন, এবারের প্রতিপাদ্য একটি গুরুত্বপূরণ অনেকটা প্রার্থনা সঙ্গীতের একটি অংশ। সেটি হল- ‘নির্মল কর, মঙ্গল করে মলিন মর্ম মুছায়ে’। গানটির এই লাইন থেকে আমরা শুধু প্রথমের ‘তুমি’ শব্দটা বাদ দিয়েছি। ” আমাদের স্বাভাবিক জীবনের যে ছন্দপতন ঘটেছে, যত নেতিবাচক পরিস্থিতি এসেছে সেখান থেকে যেন আমাদের মুক্তি হয়। একইসঙ্গে আগামীর দিনগুলো যেন মঙ্গলময় হয়। সেরকমটা চাই। এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নির্মাণাধীন মেট্রোরেলের কারণে চলাচলের পথ সরু থাকায় বাংলা নববর্ষ-১৪২৯ উদযাপনের জন্য অনুষ্ঠিতব্য মঙ্গল শোভাযাত্রার রুট পরিবর্তন করা হয়েছে। শোভাযাত্রা টিএসসি সড়কদ্বীপ থেকে বের করা হবে। মঙ্গল শোভাযাত্রা স্মৃতি চিরন্তন হয়ে পুনরায় টিএসসিতে গিয়ে শেষ হবে। কোভিড-১৯ বিবেচনায় যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে নির্মাণাধীন মেট্রোরেলের জন্য মঙ্গল শোভাযাত্রায় জনসমাগম সীমিত রাখতে সকলের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানী বাংলানিউজকে বলেন, পহেলা বৈশাখ আমাদের প্রাণের উৎসব। এসময় নিরাপত্তার ইস্যুটিও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ লক্ষে আমরা বেশ কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। আমাদের বিভিন্ন কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রক্টরিয়াল টিম, মোবাইল টিম, শিক্ষকদের টিম, বিএনসিসি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সার্বক্ষণিক নিয়োজিত থাকবে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০২২
এসকেবি