নেত্রকোনা: নেত্রকোনা জেলার বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বাড়া অব্যাহত থাকায় যেকোনো সময় ফসল রক্ষা বাধঁ ভেঙে ফসল হানির আশঙ্কায় হাওরাঞ্চলের কৃষকরা দ্রুত ধান কেটে ঘরে তোলার প্রাণান্তকর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এম এল সৈকত বাংলানিউজকে জানান, ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকায় উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে জেলার প্রধান প্রধান নদীর পানি বাড়া অব্যাহত রয়েছে।
নেত্রকোনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ এফ এম মোবারক আলী জানান, এ বছর নেত্রকোনা জেলায় ১ লাখ ৮৪ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করা হয়। ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ১১ লাখ ৫৬ হাজার ৫৩ মেট্রিক টন।
খালিয়াজুরী, মদন ও মোহনগঞ্জ এই তিন হাওর উপজেলায় ৪৪ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ করা হয়েছে। ভারতের চেরাপুঞ্জিতে অব্যাহত বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে বাঁধ ভেঙে হাওরের ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে। এই আশঙ্কায় হাওরের ধান ৮০ ভাগ পাকলেই সরকার তা কাটার নির্দেশ দিয়েছে। তাই জেলা কৃষিবিভাগও কৃষকদের দ্রুত ধান কাটার পরামর্শ দিচ্ছে।
এদিকে খালিয়াজুরী উপজেলার ধনু নদীর পানি বাড়া অব্যাহত থাকায় হাওরাঞ্চলের কৃষকরা খালিয়াজুরী, মদন ও মোহনগঞ্জের বিভিন্ন হাওরে পুরোধমে ধান কাটা চালিয়ে যাচ্ছেন।
তিনি আরও জানান, হাওরাঞ্চলের তিন উপজেলায় দ্রুত ধান কাটার জন্য ৩৩২টি হারভেস্টার মেশিন ও প্রায় ১০ হাজার কৃষক দিন রাত ধান কাটায় ব্যস্ত রয়েছে। শনিবার পর্যন্ত হাওরের প্রায় ৫০ ভাগ ধান কাটা হয়েছে।
খালিয়াজুরী সদরের কৃষক সবুজ মিয়া জানান, আমাদের এলাকায় বিআর-২৮ ধান কাটা শেষ হয়েছে এখন চলছে হাইব্রিড ধান কাটা যা কয়েকদিনের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে।
গত সপ্তাহে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ধনু নদীর পানি বৃদ্ধির কারণে খালিয়াজুরি ও মদন উপজেলায় ৫শ হেক্টর জমির বোরো ধান পানিতে নিমজ্জিত হয়। এ সময় খালিয়াজুরী উপজেলার কীর্তনখোলা বাঁধের কয়েকটি অংশে ফাটল দেখা দিলে তাৎক্ষণিকভাবে জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় গ্রামবাসীর সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বাঁধ মেরামত করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৭, ২০২২
আরএ