ঢাকা, বুধবার, ২১ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

২ ভাইকে মারধরের মামলায় ইউপি সদস্যের ছেলে গ্রেফতার

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৭, ২০২২
২ ভাইকে মারধরের মামলায় ইউপি সদস্যের ছেলে গ্রেফতার

বাগেরহাট: বাগেরহাটের মোংলায় দুই ভাইকে মারধরের মামলায় ইউপি সদস্য মো. সুলতান হাওলাদারের ছেলে জাকির হাওলাদারকে (৩৫) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।  

রোববার (১৭ এপ্রিল) সকালে মোংলা উপজেলার কানাই নগর এলাকার জোড়া ব্রিজ এলাকা থাকে জাকিরকে গ্রেফতার করা হয়।

এর আগে, শনিবার (১৬ এপ্রিল) রাত পৌনে একটার দিকে নিজের দুই ভাইকে মারধরের অভিযোগ এনে ইউপি সদস্য মো. সুলতান হাওলাদার ও তার ছেলে জাকির হাওলাদারসহ ১৪ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন কুমুদ সরকার। সকালে বিনোদ সরকার ও বিপ্লব সরকারকে মারধর করে জাকির হাওলাদার ও তার লোকজন। পরে দুপুরে বিনোদ সরকার ও বিপ্লব সরকারের লোকেরাও জাকিরদের মারধরের চেষ্টা করে। এসময় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

গ্রেফতার জাকির চাঁদপাই ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য সুলতান হাওলাদারের ছেলে।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ফার্নিচার ব্যবসায়ী কুমুদ সরকারের কাছে কিছু কাঠের আসবাবপত্র বানাতে দিয়েছিলেন ইউপি সদস্য সুলতান হাওলাদার। এজন্য অগ্রীম ২৫ হাজার টাকাও দিয়েছিলেন। কিন্তু দীর্ঘদিন হয়ে যাওয়ার পরেও কুমুদ সরকার ফার্নিচার সরবরাহ না করায় ১৪ এপ্রিল সুলতান হাওলাদার কুমুদ সরকারের দোকানে যায়। ‘ফার্নিচারের দরকার নেই, টাকা ফেরত দেও’। এসব কথার এক পর্যায়ে ইউপি সদস্য সুলতান হাওলাদারকে অপমান অপদস্ত করে কুমুদ সরকার ও তাঁর লোকজন। অপমানের জেরে ইউপি সদস্য সুলতান হাওলাদারের ছেলে জাকির ও তাঁর লোকজন কুমোদ সরকারের ভাই বিনোদ সরকার ও বিপ্লব সরকারকে ধরে নিয়ে মারধর করেন। পরবর্তীকালে কুমোদ সরকারের লোকজনও জাকিরদের মারধরের চেষ্টা করে। এসময় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।

মারধরের শিকার বিনোদ সরকার বাংলানিউজকে বলেন, সুলতান মেম্বরের ছেলে জাকির বাংলাদেশ হোটেলের সামনে থেকে আমাদের ধরে নেয়। পরে তার অফিসে নিয়ে আমাদের মারধর করে।  

দুই পক্ষের সংঘর্ষের কথা জানতে চাইলে বিনোদ সরকার বলেন, আমার বড় ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলেন।

কুমুদ সরকার বলেন, আমার ভাইদের ধরে নিয়ে মারধর করেছে এটাই সত্য এর থেকে বেশি কিছু আমি বলব না।

ইউপি সদস্য সুলতান হাওলাদার বলেন, অগ্রীম টাকা নিয়েও যখন ফার্নিচার দিচ্ছিল না, তখন আমি টাকা ফেরত চাইতে যাওয়ায় কুমুদ আমাকে অপমান করেছে। এই অপমানের জেরে এই মারধরের ঘটনা ঘটেছে। শুধু আমার ছেলে মারেনি, কুমুদ ও তার ভাইরা আমার ছেলেকেও মেরেছে বলে দাবি করেন তিনি।

টর্চার সেলের বিষয়ে জানতে চাইলে সুলতান হাওলাদার বলেন, এলাকায় একজন সামাজিক মানুষ হিসেবে আমাদের বসবাস। টর্চার সেল ও অন্য তকমা লাগিয়ে আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টা চলছে।

মোংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, মূলত সুলতান হাওলাদারকে অপমানের জেরে তার ছেলে কুমোদের ভাইদের মারধর করেছে। কুমোদের লোকজনও আবার তাদের মারধরের চেষ্টা করেছে। কুমোদের করা মামলায় আমরা জাকিরকে গ্রেফতার করেছি। এই মামলায় অন্য যে আসামিরা রয়েছেন, তদন্ত সাপেক্ষে মারধরের ঘটনায় তাদের সংশ্লিষ্টতা পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মোংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কমলেশ মজুমদার বলেন, দুই ভাইকে মারধরের একটি ঘটনা শুনেছি। তবে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের সত্যতা পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় পুলিশ একজনকে গ্রেফতারও করেছে। সুলতান আহমেদ যেহেতু জন প্রতিনিধি আদালত তাকে যদি অপরাধী সাব্যস্ত করে সেক্ষেত্রে আমরা স্থানীয় সরকারের আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।

বাংলাদেশ সময়: ২১৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৭, ২০২২
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।