ভোলা: প্রতিবন্ধীরা বোঝা নয়, তারাও পারে সফলতা অর্জন করতে। কথাটি প্রমাণ করেছে ভোলার প্রতিবন্ধী শিশুরা।
এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো প্রতিবন্ধী স্কুলটি প্রধানমন্ত্রীর পুরস্কার পেল। এদিকে প্রধানমন্ত্রীর পুরস্কার পাওয়ায় আনন্দের বন্যা বইছে স্কুলের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের মধ্যে। তাদের এ সফলতায় গর্বিত শিক্ষকরা। পড়ালেখার পাশাপাশি কারিগরি শিক্ষায় একের পর এক সফলতা বয়ে এনেছে এ প্রতিষ্ঠানটি।
শিক্ষকরা জানান, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের শিক্ষা ও কারিগরি প্রশিক্ষণে সুনামের সঙ্গে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিয়ে আসছে ভোলা'স চিল্ড্রেন স্পেশাল স্কুল বাংলাদেশ। এটি ২০০৬ সালে ভোলা শহরের চরনোয়াবাদ এলাকায় ইউকে অর্থায়নে প্রতিঠিত হয়। ভোলাস চিল্ড্রেন প্রতিবন্ধী স্কুল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই লন্ডলের নাগরিক দিনা উইনার ও ব্রুনা কলম্ব প্রতিষ্ঠানটির অর্থায়ন করে আসছেন।
এ বিদ্যালয়ে বর্তমানে ভোলাসহ দেশের বিভিন্ন জেলার ৮০ জন শিক্ষার্থী অধ্যায়নরত রয়েছেন। যাদের সবাই বাক, শ্রবণ, বুদ্ধি, দৃষ্টি ও শারিরীক প্রতিবন্ধী। ঈশারা ভাষায় তাদের শিক্ষা দিচ্ছেন শিক্ষকরা। পড়াশোনার পাশাপাশি ছবি আঁকাতেও প্রশিক্ষণ গ্রহন করে প্রতিষ্ঠানের শিশুরা। এবার পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও পদ্মা সেতুর ছবি এঁকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুরস্কার পেয়েছেন দুই শিক্ষার্থী শ্রবণ ও বাক প্রতিবন্ধী রাব্বী ও শারিরিক প্রতিবন্ধী ইসমাইল।
রাব্বী নবম শ্রেণিতে পড়ছে। সে সদরের দক্ষিণ দিঘলদী ইউনিয়নের কোড়ালপয়া গ্রাম বাবা নিজাম উদ্দিনের ছেলে।
অন্যদিকে, শারিরিক প্রতিবন্ধী ইসমাইল ভোলা সদরের চর ভেদুরিয়া গ্রামের কৃষক আবুল কাসেমের ছেলে। সে দশম শ্রেণিতে পড়ছে। তারা দুইজনেই হিড বাংলাদেশ টেকনিক্যাল স্কুলে অধ্যায়নরত। গত ১৭ এপ্রিল ছবি আঁকার পুরস্কার হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে তাদের এক লাখ করে দুই লাখ টাকা দেয়া হয়।
প্রতিষ্ঠানের সহকারী শিক্ষক মাহমুদা খানম টুম্পা এবং মাসুমা খানম বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীদের ইশারা ভাষায় পড়াশোনা করানোর পাশাপাশি তাদের ছবি আঁকা শেখানো হয়। সেই ছবি প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা কার্ডে স্থান পেয়েছে এটা আমাদের জন্য অনেক গর্বের। আমরা অনেক খুশি। আমাদের আগ্রহ অনেক বেড়ে গেছে।
এ ব্যাপারে ভোলা চিলন্ড্রেন স্পেশাল স্কুল বাংলাদেশের পরিচালক মো. জাকিরুল হক বাংলানিউজকে বলেন, শিক্ষকদের আন্তরিকতা এবং শিক্ষার্থীদের কঠোর প্রচেষ্টা ছিল বলে আজ এ সফলতা অর্জিত হয়েছে। শিক্ষার্থীদের এমন সফলতায় প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষার্থীরা যেমনি গর্বিত, তেমনি গর্বিত ভোলার মানুষ। আমরা সকলের সহযোগীতায় ভবিষ্যতেও ভোলার সুনাম আরও ছড়িয়ে দিতে চাই। এ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা শিক্ষা গ্রহণের পাশাপাশি বিভিন্ন স্থানে কাজেরও সুযোগ পাচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০২২
এনটি