ঢাকা, সোমবার, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, ০১ জুলাই ২০২৪, ২৩ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

দুর্যোগের চিন্তায় শ্রমিক সংকটেও চলছে ধান কাটা-মাড়াই

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫০ ঘণ্টা, মে ১০, ২০২২
দুর্যোগের চিন্তায় শ্রমিক সংকটেও চলছে ধান কাটা-মাড়াই

নীলফামারী: কখনও রোদ, কখনও শিলাবৃষ্টির আতঙ্কের মধ্যে এখন নতুন করে ঝড়ের শঙ্কায় বোরো চাষিরা। সেই সঙ্গে চলছে শ্রমিক সংকটও।

এমন পরিস্থিতিতেই নীলফামারী জেলায় শুরু হয়েছে বোরো কাটা-মাড়াই।

শঙ্কা ও চিন্তার ভাঁজ কৃষকের কপালে। তাই বাড়তি মজুরি দিয়ে খেতের ধান কাটছেন কৃষকরা। জেলার সর্বত্র কম-বেশি শুরু হয়েছে এই বোরো ধান কাটা-মাড়াই। কেউবা ধান শুকিয়ে চাল করছেন, কেউবা সংসারের প্রয়োজনে শুকানো ধান হাটে তুলছেন।

জেলার ডোমার, ডিমলা, জলঢাকা, কিশোরগঞ্জ, সদর ও সৈয়দপুরের সর্বত্র পুরোদমে বোরো ধান কাটা-মাড়াই শুরু হতে ১০-১৫ দিন সময় লাগবে। তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কথা চিন্তা করে কৃষকরা ধান কাটা-মাড়াই শুরু করেছেন। কারণ এরই মধ্যে দু’দফায় কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ফসলের ক্ষতি হয়েছে। এতে অনেক জায়গাতেই ধান গাছ মাটিতে নুয়ে পড়ে। কষ্টের ফসলের ক্ষতি আর দেখতে চান না কৃষকরা। তাই ধানের গলায় কাস্তে ধরেছেন।  
 
বোরো ধান শ্রমিকদের দিয়ে কাটিয়ে বাড়িতে আনছেন। এরপর মেশিনে মাড়াই করে শুকানোর পর কেউ গোলায় তুলছেন কেউবা সংসারের প্রয়োজনে হাটবাজারে তুলছেন। আর হাটে প্রতি মণ ধান ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকায় বিক্রি করে উৎপাদন খরচও উঠছে না অনেক জেলার কৃষকদের।

জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলার কৃষক আলেনূর রহমান জানান, প্রতিবিঘা জমির (৬০ শতাংশ) ধান কাটতে সাড়ে ৫ হাজার থেকে ৬ হাজার টাকা শ্রমিকদের দিতে হচ্ছে। দুপুরের খাবারে দিতে হচ্ছে পাউরুটি, কলা। আর মেশিনে ধান মাড়াইয়ের জন্য দিতে হচ্ছে বিঘাপ্রতি ৮০০ টাকা। এত কিছুর পরেও এলাকায় শ্রমিক মিলছে না।

জেলার সৈয়দপুর উপজেলার কামারপুকুরের কৃষক হাসান আলী বলেন, আমি প্রায় ১০ বিঘা জমিতে ইরি-বোরো আবাদ করেছি। সার, বীজ, নিড়ানি, সেচ প্রভৃতি কাজে বিরাট অংকের টাকা ব্যয় হয়েছে। জমির ধান বিক্রি করে উৎপাদন খরচও উঠছে না। এছাড়া আগাম টাকা দিয়েও শ্রমিক মিলছে না। ধান কাটার জন্য যেসব শ্রমিক বাইরে গিয়েছিলেন তারা ফিরতে শুরু করেছেন।

ধানকাটা শ্রমিক সর্দার জয়নালের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, আমার দলে মোট ১০ জন শ্রমিক আছেন। এনজিওর কিস্তি ও সংসারের অভাব-অনটনের কারণে প্রতিবিঘা ধান কাটার জন্য সাড়ে ৫ হাজার করে টাকা নেওয়া হয়েছে। আমরা শুধু কেটে কৃষকের উঠানে আনবো।  

তিনি বলেন, প্রতিদিন আমাদের হাজিরা পড়ছে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা।

সদরের ঢেলাপীর হাটে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিমণ বোরো ধান বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ৮২৫ টাকা দরে। দূর-দূরান্ত থেকে আসা পাইকাররা কিনে বস্তাবন্দি করছেন। পরে ট্রাকে সেগুলো মিলারদের কাছে বড় বড় হাটে একটু বেশি দামে বিক্রি করছেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবু বক্কর ছিদ্দিক জানান, এ বছর নীলফামারী জেলার ৬টি উপজেলায় ৮২ হাজার ৬৭০ হেক্টর জমিতে বোরোর আবাদ করা হয়েছে। আর এজন্য উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৬৫ হাজার ২৬৪ মেট্রিক টন ধান।  

বাংলাদেশ সময় ঘণ্টা: ১৪৪৮, মে ১০, ২০২২ 
এসআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।