লক্ষ্মীপুর: নদীতে জোয়ার এলে সেই জোয়ারের পানি ঢোকে খালে বিলে। আর জোয়ারের পানির সঙ্গে খালে চলে আসে মাছ।
সোমবার (১৬ মে) সন্ধ্যার পর থেকে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার মেঘনা নদী সংলগ্ন চররমনী মোহন এলাকার ক্যাম্পের খালে এমন দৃশ্য দেখা গেছে। জেলেদের পেতে রাখা 'ছাইজাল' এ উঠে আসে নদীর ট্যাংরা মাছ।
জেলে হোসেন আলী বলেন, দিনে দুইবার খালে জোয়ার আসে। জোয়ার আসার আগেই আমরা খালে 'ছাইজাল' পেতে রাখি। জোয়ারের পানির সঙ্গে নদী থেকে আসা ট্যাংরা মাছ ওই জালে ঢুকে পড়ে। পানি নেমে গেলে আমরা জাল থেকে মাছগুলো সংগ্রহ করে পুনরায় জাল পেতে রাখি। প্রতিদিন ভোরে এবং রাতে মাছ শিকারের সুযোগ পাই।
জেলে আমির হোসেন বলেন, প্রতি ভাটায় এক জালে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকার মাছ পাওয়া যায়। মজুচৌধুরীর হাটের মাছঘাটে নিয়ে সেগুলো পাইকারি বিক্রি করে দেই। এছাড়া খাল পাড়েও পাইকার এসে মাছ কিনে নিয়ে যায়।
আবদুর রহমান নামে এক পাইকারি ক্রেতা বলেন, খালপাড় থেকে প্রতিকেজি ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা দামে মাছ কিনে নিই। এরপর সেগুলো জেলা শহরসহ বিভিন্ন বাজারে নিয়ে বিক্রি করি।
জেলে মান্নান হাওলাদার বলেন, আপাতত খালে মাছ কমে গেছে। সকালে ১১ কেজি মাছ পেয়েছি। সেগুলো দুই হাজার টাকায় বিক্রি করে দিয়েছি।
জেলে ছবির মাঝি বলেন, সকালের ভাটাতে খালে প্রচুর মাছ ধরা পড়েছে। কিন্তু রাতের ভাটায় মাছ কম ছিল। খালে অতিরিক্ত জোয়ারের পানি থাকায় মাছ ফসলের মাঠ উঠে গেছে।
স্থানীয় রফিকুল মাঝি বলেন, বৈশাখ এবং জৈ্যষ্ঠ দুই মাস মেঘনা নদী থেকে জোয়ারের পানির সঙ্গে প্রচুর পরিমাণে ট্যাংরা মাছ খালে ঢুকে পড়ে। সেগুলো খাল পাড়ের লোকজন বিশেষ একটি জালের মাধ্যমে শিকার করে। প্রতিটি জালের লম্বা ৭০-৮০ ফুট, চওড়া প্রায় এক ফুট।
তিনি বলেন, খালে যখন ভাটা পড়ে, তখন জেলেরা খালের কিনারায় লম্বালম্বিভাবে জাল পেতে রাখে। জালের প্রতি দুই ফুট অন্তর পকেট থাকে। জোয়ারের সময় নদী থেকে আসা ট্যাংরা মাছ পকেট দিয়ে জালের ভেতর ঢুকে পড়ে। সেগুলো আর বের হতে পারে না। জোয়ারের পানি খাল থেকে নামা শুরু করলে জেলেরা মাছ সংগ্রহে নেমে পড়ে। এই সময়টাতে স্থানীয় লোকজনের আয়ের উৎস খালের ট্যাংরা মাছ।
বাংলাদেশ সময়: ১২১৫ ঘণ্টা, মে ১৭, ২০২২
আরএ