ঢাকা: ইউক্রেন ও আফগানিস্তানের ঘটনার প্রেক্ষিতে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তা তহবিলে সঙ্কট হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি। বুধবার ( ২৫ মে) রাজধানীর লা মেরিডিয়ান হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
এক প্রশ্নের উত্তরে ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি বলেন, আমার আহ্বান থাকবে, ভারতসহ অন্যান্য দেশে যেসব রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছেন, সেসব দেশ যেন তাদের প্রতি সদয় হন। রোহিঙ্গারা মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়াসহ বিভিন্ন দেশেও আশ্রয় নিয়েছেন। তবে বাংলাদেশের সঙ্গে কোনো দেশেরই তুলনা করা যায় না। এসব দেশের সরকারের প্রতিও আমার একই ধরনের আহ্বান থাকবে। আসিয়ান দেশগুলোও রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে ভূমিকা রাখতে পারে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
কক্সবাজার ও ভাসান চরের শরণার্থী শিবির পরিদর্শনের পর ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি বলেন, গত পাঁচ বছর ধরে রোহিঙ্গা শরণার্থী ও তাদের আশ্রয় দেওয়া স্থানীয় জনগোষ্ঠী যে সংকট মোকাবিলা করছে, তা বিশ্বকে অবশ্যই মনে রাখতে হবে। শরণার্থীদের জীবন নির্ভর করে তাদের সহায়তায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আচরণের ওপর।
হাইকমিশনার উল্লেখ করেন, মিয়ানমারেই এই সঙ্কটের সমাধান রয়েছে। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর ও ইউএনডিপি মিয়ানমারের সঙ্গে ত্রিপক্ষীয় একটি সমঝোতার মাধ্যমে রাখাইনে কমিউনিটি প্রজেক্টগুলোতে কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু সেখানে সুষ্ঠু, নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবাসনের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরিতে আরও সাহায্য প্রয়োজন।
তিনি বলেন, যত জন রোহিঙ্গা শরণার্থীর কথা বলেছি, সবাই পরিস্থিতি অনুকূল হলেই নিজ দেশ মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার ইচ্ছার কথা আমাকে বারবার মনে করিয়ে দিয়েছেন। রোহিঙ্গাদের বাস্তুচ্যুতির মূল কারণ নিয়ে বিশ্বকে কাজ করতে হবে এবং তাদের নিজ দেশে ফেরার আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবে রূপ দিতে হবে।
তিনি বলেন, কক্সবাজার ও ভাসান চরে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য দক্ষতা বৃদ্ধি ও জীবিকামূলক কর্মকাণ্ড খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এগুলোর মাধ্যমে নিশ্চিত করা যাবে শান্তিপূর্ণ জীবন যাপন, নিরাপদ পরিবেশ এবং টেকসই প্রত্যাবাসন।
হাইকমিশনার জানান, বাংলাদেশ প্রায় দশ লাখ শরণার্থীর মানবিক সহায়তায় নেতৃত্ব দিচ্ছে। সেজন্য বাংলাদেশ আমাদের কাজের খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশীদার রাষ্ট্র। কিন্তু জীবন রক্ষাকারী সহায়তা প্রদান এবং আশানুরূপ ভবিষ্যতের জন্য নিরবিচ্ছিন্ন চলমান আন্তর্জাতিক সহায়তা অতীব প্রয়োজনীয়। সে জন্যেই আমি আজ এখানে। বাংলাদেশ, বাংলাদেশের মানুষ এবং কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের কথা আমি তুলে ধরতে চাই। আর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে মনে করিয়ে দিতে চাই রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনের আগ পর্যন্ত তাদের সুরক্ষায় আন্তর্জাতিক সহায়তার গুরুত্ব।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫০ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০২২
টিআর/এমএমজেড