ঢাকা, শনিবার, ২০ আশ্বিন ১৪৩১, ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ০১ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

চলে গেছেন স্ত্রী, সন্ধান পেতে সহকর্মীর শিশু অপহরণ

স্টাফ করেসপন্ডেন্টট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২২ ঘণ্টা, মে ৩১, ২০২২
চলে গেছেন স্ত্রী, সন্ধান পেতে সহকর্মীর শিশু অপহরণ

ঢাকা: ঢাকার আশুলিয়ায় দেড় বছরের শিশু আঁখিকে অপহরণের তিন মাস পর উদ্ধার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-৪)।

এ সময় আটক করা হয় অপহরণকারী রাশেদুল ইসলামকে (৩০)।

যিনি পালিয়ে যাওয়া স্ত্রীর সন্ধান পেতে স্ত্রীর সহকর্মীর শিশু সন্তান আঁখিকে অপহরণ করেছেন।

সোমবার (৩০ মে) প্রথমে রাশেদুল ইসলামকে আটক করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্য মতে, গাজীপুরের কালিয়াকৈর এলাকার একটি বাসা থেকে রোকসানা (৩৫) নামে এক নারীকে আটক করা হয়। যার কাছ থেকে অপহৃত শিশু আঁখিকে উদ্ধার করা হয়।

মঙ্গলবার (৩১ মে) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র‌্যাব-৪ এর অধিনায়ক উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মোজাম্মেল হক।

তিনি বলেন, গত ৩১ মার্চ সকালে আশুলিয়ার শিমুলিয়ার টেঙ্গুরী এলাকা থেকে দেড় বছরের শিশু আঁখি অপহৃত হয়। শিশুটির বাবা সাদ্দাম হোসেন পেশায় রাজমিস্ত্রি ও মা মিরা আক্তার পোশাক শ্রমিক হিসেবে কর্মরত। ঘটনার পরদিন ১ এপ্রিল এ বিষয়ে আশুলিয়া থানায় একটি শিশু অপহরণ মামলা দায়ের করা হয়।

এ বিষয়ে ছায়া তদন্তের ধারাবাহিকতায় সোমবার রংপুর থেকে অপহরণকারী রাশেদুলকে আটক করা হয়। পরে গাজীপুর থেকে অপহৃত শিশু আঁখিকে উদ্ধারসহ রোকসানা নামে আরেক নারীকে আটক করা হয়।

রাশেদুলকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে তিনি বলেন, রাশেদুলের স্ত্রী নুরজাহান ও অপহৃত শিশুটির মা মিরা আশুলিয়ায় একই গামেন্টসে চাকরি করতেন। যার সুবাদে দুজনের মধ্যে সু-সম্পর্ক ছিল। এক পর্যায়ে রাশেদুলের স্ত্রী সাত বছরের শিশু সন্তানকে রেখে প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে যান। স্ত্রী কার সঙ্গে পালিয়ে কোথায় আছেন এ বিষয়ে মিরা জানেন বলে সন্দেহ করেন রাশেদ। এ বিষয়ে বেশ কয়েকদিন মিরাকে জিজ্ঞাসাও করেন রাশেদ।

কিন্তু নিজের স্ত্রীর বিষয়ে কোনো তথ্য না পেয়ে মিরার শিশু সন্তান আঁখিকে অপহরণের পরিকল্পনা করেন রাশেদ। সে অনুযায়ী গত ৩১ মার্চ সাদ্দাম ও মিরা দম্পতি কাজে চলে যাওয়ার পরে বাসা ভাড়া নেওয়ার কথা বলে তাদের বাড়ি যান রাশেদ। কৌশলে আঁখি ও তার বড় ভাই মিরাজকে ১০ টাকা দিয়ে চকলেট খাওয়ার জন্য পাশের মুদি দোকানে পাঠায় রাশেদ। সেখান থেকে শিশু আঁখিকে কোলে নিয়ে পালিয়ে যান তিনি।

ঘটনার এক সপ্তাহ পরে রাশেদ শিশুটির মা-বাবাকে ফোন করে জানায়, শিশুটি তার হেফাজতে আছে। তার স্ত্রীর সঠিক ঠিকানা জানালে শিশুটিকে ফেরত দেওয়া হবে। এক পর্যায়ে রাশেদ আঁখির বাবা-মার কাছে ৩০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন এবং বিকাশে ২০ হাজার টাকা নেন তিনি।

কিন্তু গ্রেফতারের ভয়ে রাশেদ মুক্তিপণের টাকা না তুলেই মোবাইল বন্ধ করে দেন। এরপর থেকে গ্রেফতারের আগ পর্যন্ত তিনি কোনো মোবাইল ব্যবহার করেননি। ঘটনার দিনই শিশু আঁখিকে গাজীপুরে তার ফুপু রোকসানার কাছে নিয়ে যান এবং নিজের মেয়ে পরিচয় দিয়ে ফুপুর কাছে কিছুদিন রাখতে অনুরোধ করেন। এরপর নিজের গ্রামের বাড়ি রংপুরে গিয়ে আত্মগোপনে যান রাশেদ।

বাংলাদেশ সময়: ১৩২১ ঘণ্টা, মে ৩১, ২০২২
পিএম/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।