ঢাকা: ‘পদ্মা সেতু উদ্বোধন হওয়ার খুশিতে আনন্দে শিহরণে শরীরের লোম দাঁড়িয়ে যাচ্ছে বলে জানান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর মহাসড়ক হাইওয়ে পুলিশের এক কর্মকর্তা। অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে তিনি বলেন, আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছি।
শনিবার (২৫ জুন) দুপুরে বঙ্গবন্ধু মহাসড়কের কর্তব্যরত হাসাড়া হাইওয়ে পুলিশ সার্জেন্ট বাহারুল সোহাগ বাংলানিউজের কাছে অনুভূতি প্রকাশ করেন।
বাহারুল সোহাগ বলেন, ২০১৬ থেকে ’১৮ সাল পর্যন্ত দোগাছি থেকে তেঘরিয়া পর্যন্ত কাজ করেছি। এই রোডে যখন কাজ শুরু হয় কি যে দুর্বিসহ কষ্ট ছিলো এই অঞ্চলের মানুষের সেটা মুখে বলে প্রকাশ করা যাবে না। রাস্তার বেশিরভাগই ভাঙা ছিলো, যানচলাচলে অনেক কষ্ট হতো, দুর্ঘটনা বেশি হতো। প্রায় প্রতিদিনই কিছু না কিছু ঘটতো এই রোডে। কারণ ধূলায় কিছু দেখা যেতো না। সকালে ডিউটিতে বের হলে বিকেলে আমাকে চেনা যেতো না। সে কষ্ট ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না।
শরীয়তপুর জেলার জাজিরার এই বাসিন্দা বলেন, আজ পদ্মা সেতু উদ্বোধন হওয়াতে আমাদের দীর্ঘদিনের চাওয়া পাওয়া পূরণ হলো। খরস্রোতা পদ্মা পাড়ি দিতে অনেক ভয় হতো; বিশেষ করে বর্ষাকালে। আজ সেই ভয়কে জয় করার দিন। তিন বছর এই রোডে কাজ করতে গিয়ে দেখেছি ফেরির জন্য মানুষ ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেছে। ঝড় হলে নদী পাড়াপাড় বন্ধ হয়ে যেতো যাত্রীদের পড়তে হতো দুর্ভোগে। আজকে সেই দু্র্ভোগ ও অপেক্ষার অবসান হলো।
তিনি বলেন, তিন বছর এই এক্সপ্রেসওয়েতে কাজ করার পর আমাকে দেওয়া হয় কাচপুর হাইওয়ে থানায়। সেখান থেকে সাভার হাইওয়ে থানা, তারপর বকশিগঞ্জ হাইওয়ে থানায় ডিউটি করেছি। এখন আবার ১১ মাস হলো হাসাড়া হাইওয়ে থানার দায়িত্বে আছি।
বাহারুল সোহাগ বলেন, বিশ্বের ১১ নম্বর সেতু এই পদ্মা সেতু। আর বাংলাদেশের প্রথম এক্সপ্রেসওয়ে হলো ঢাকা মাওয়া রোডের এই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর মহাসড়ক। এখন তো অনেক সুন্দর অনেক ভালো। যখন এই সড়কের কাজ শুরু হয় তখন মানুষকে অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। দুর্ঘটনায় অনেক মানুষের প্রাণ গেছে। আজকে সকালে যখন এই মহাসড়ক রাউন্ড দিচ্ছিলাম, আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছিলাম।
তিনি বলেন, আজকে আমি আল্লাহ আল্লাহ করছি, মাওয়া থেকে নিমতলা পর্যন্ত মহাসড়ক ঘুরে দেখেছি। এতে আমার খুব ভালো লেগেছে আমি দোয়া করছি এই সড়ক নির্মাণে যে সকল শ্রমিক কাজ করেছেন তাদের জন্য এবং এর সঙ্গে সম্পৃক্ত সবার জন্য। একই সঙ্গে আমাদের ও দেশবাসীকে এরকম একটি সেতু উপহার দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকালে স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেন। পদ্মা বহুমুখী সেতুটি রাজধানী ঢাকা থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত। বাংলাদেশের মুন্সীগঞ্জ, শরীয়তপুর ও মাদারীপুর জেলায় এই সেতু প্রকল্পের অবস্থান। সেতুর উত্তর প্রান্তে মাওয়া, লৌহজং, মুন্সীগঞ্জ এবং দক্ষিণ প্রান্তে জাজিরা, শরীয়তপুর ও শিবচর, মাদারীপুর।
বাংলাদেশ সময় :১৪৫৫ ঘণ্টা, জুন ২৫,২০২২
জিসিজি/এসএ