সাভার (ঢাকা): ঈদ উপলক্ষে মহাসড়কে মোটরসাইকেল চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এক জেলার মোটরসাইকেল অন্য জেলায় যেতে পারবে না তাও বলা হয়েছে।
কিন্তু পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, জরুরি প্রয়োজনে কেউ মোটরসাইকেল নিয়ে যেতে চাইলে পুলিশ বাধা দেবে না। তবে মুভমেন্ট পাস থাকতে হবে। তাছাড়া সব মোটরসাইকেল থামিয়ে যাচাই করা সম্ভব নয় বলেও মনে করে পুলিশ।
আজ থেকে মহাসড়কে মোটরসাইকেল চলাচলে নিয়ন্ত্রণ আরোপের কথা থাকলেও তা হচ্ছে না। অনেকেই মোটরসাইকেলে চেপে মহাসড়কে ছুটে চলেছেন গন্তব্যে। সরেজমিনে এমন দৃশ্যই দেখা গেছে।
বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) দুপুরে সাভার ও আশুলিয়া এলাকা থেকে পশ্চিমবঙ্গের ঢাকা-আরিচা ও উত্তরবঙ্গের নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কে অসংখ্য মোটরসাইকেলের চলাচল দেখা গেছে।
বাইপাইল মোড় এলাকায় আবার মোটরসাইকেলে করে যাত্রী পরিবহন চলছে। ওই এলাকা থেকে মোটরসাইকেল চালকরা যাত্রী নিয়ে চন্দ্রার দিকে যাচ্ছেন। দীর্ঘ সময় পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, পরিবার নিয়েও নিজ গন্তব্যের দিকে যাচ্ছেন বাইকাররা।
অবশ্য, স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় এসব মহাসড়কে মোটরসাইকেলের সংখ্যা কিছুটা কম। আরোহীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অনেকেই নিষেধাজ্ঞার ভয়ে এসব সড়কে চলাচল করছেন না।
নাম প্রকাশ করতে অনিচ্ছুক অনেকেই বলেন, মহাসড়কে পুলিশ থাকলেও বাইক চলাচলে তারা বাধা দিচ্ছেন না। অনেককে থামালেও কারণ শুনে ছেড়ে দিচ্ছেন।
রাজধানীর উত্তরা থেকে ঈদ করতে পরিবার নিয়ে সিরাজগঞ্জ যাচ্ছেন মিল্লাত হোসেন। মোটরসাইকেল নিয়ে বাইপাইল মোড় এসে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। এ সময় কথা হলে বাংলানিউজকে তিনি বলেন, স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বাড়ি যাচ্ছি। বাসা থেকে বের হয়ে বেড়িবাঁধ দিয়ে আসার সময় পুলিশ ধরেছিল। বলেছি বাড়ি যাবো। পরে তিনি তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে আমাকে ছেড়ে দিলেন। এর মধ্যে আর পুলিশ ধরেনি। সামনে কি হবে বলতে পারছি না। তবে আমি বাড়ি যাওয়ার কথাই বলবো। এতে যেতে দিলে দিবে না দিলে স্ত্রী সন্তান নিয়ে রাস্তায় থাকবো।
মোটরসাইকেল চলাচলে বিধিনিষেধ দেওয়ার পরও কেন এভাবে যাচ্ছেন- প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, বুধবার আমার অফিস ছুটি দিয়েছে। ভেবেছিলাম বাসে যাবো। কিন্তু টিকিট তো পাই না। যেটা পেয়েছিলাম তার ভাড়াও অনেক বেশি। মোটরসাইকেলে স্বাধীনভাবে যেতে পারব।
ভাড়ায় মোটরসাইকেলে চালান লিখন মিয়া। সাভারের মধ্যেই তিনি যাত্রী আনা নেওয়া করছেন। এখন পর্যন্ত তাকে ট্রাফিক পুলিশ বা সাধারণ পুলিশ আটকায়নি বলে জানালেন। মহাসড়কে ওঠার ভয়ও আছে তার। বলছেন, ভেতর দিয়ে বাইকে যাত্রী আনা নেওয়া করছি। দূরে কোথায় যাওয়ার ইচ্ছা নেই। পুলিশ ধরলে সব শেষ।
এদিকে মহাসড়কে গণপরিবহনের সংকট প্রকট। দীর্ঘসময় অপেক্ষা করেও গাড়ি পাচ্ছেন না অনেকেই। যাত্রীদের অভিযোগ, প্রথমত গাড়ি নেই। দ্বিতীয়ত, যেগুলো আছে; স্টাফরা অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছেন। কোনো ক্ষেত্রে তিনগুণ ভাড়া নিয়ে যাত্রীদের ভোগান্তির মধ্যে ফেলছে বাস চালক ও স্টাফরা।
সাভার হাইওয়ে থানার পরিদর্শক (ওসি) আতিকুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, আমরা দুই পয়েন্ট মোটরসাইকেলের জন্য চেকপোস্ট বসিয়েছি। সকাল থেকে মহাসড়কে মোটরসাইকেল চলাচল পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
অনুমতি নিয়ে এলে সেই মোটরসাইকেলগুলোর কী করা হচ্ছে জানতে চাইলে ওসি বলেন, এখন পর্যন্ত অনুমোদনসহ কোনো মোটরসাইকেলে পাইনি। পুলিশ সুপারের অনুমতি নিয়ে এলে ছেড়ে দেওয়া হবে। তবে যাদের অনুমতি নেই; তাদের মহাসড়কে চলাচল করতে দেওয়া হবে না।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৭ ঘণ্টা, জুলাই ০৭, ২০২২
এসএফ/এমজে