ঢাকা, শনিবার, ২০ আশ্বিন ১৪৩১, ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ০১ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

৪ কোটি টাকার দরপত্র বাগানোর পাঁয়তারা কালিহাতী পৌর মেয়রের

সুমন কুমার রায়, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৭ ঘণ্টা, জুলাই ২০, ২০২২
৪ কোটি টাকার দরপত্র বাগানোর পাঁয়তারা কালিহাতী পৌর মেয়রের

টাঙ্গাইল: টাঙ্গাইলের কালিহাতী পৌরসভার চার কোটি টাকার টেন্ডার পৌর মেয়র নিজেই তার নিজস্ব লোকজন দিয়ে বাগিয়ে নেওয়ার পাঁয়তারা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে প্রকৃত ঠিকাদারদের লাইসেন্স নবায়ন না করায় থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী ঠিকাদাররা।

তবে পৌরসভার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সময়মতো ঠিকাদাররা লাইসেন্স নবায়নের জন্য জমা দিলেও মেয়র স্বাক্ষর না করায় সেগুলো নবায়ন করা হচ্ছে না।

জানা যায়, কালিহাতী পৌরসভা গত ৬ জুলাই বিভিন্ন রাস্তা উন্নয়নের জন্য একটি নোটিশে দুইটি প্যাকেজে দরপত্র আহ্বান করে। যার আইডি নম্বর ৭১৬২৭৮ এবং ৭১৬২৭৬। আর এ দুইটি প্যাকেজের কাজে ব্যয় ধরা হয় প্রায় চার কোটি টাকা। দরপত্র সংগ্রহের শেষ তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে বুধবার (২০ জুলাই)। তবে দরপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে নবায়নকৃত লাইসেন্সধারীরাই দরপত্র সংগ্রহ করতে পারবেন। এ কারণে ২০ জন তালিকাভুক্ত ঠিকাদার তাদের লাইসেন্স নবায়নের জন্য পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে জমা দেন। জমা দেওয়ার পর লাইসেন্স পরিদর্শক সেগুলোর নবায়ন ফি বাবদ দুই হাজার ৩০০ টাকা ব্যাংকে জমা দেন। কিন্তু তারপরও বেকায়দায় পড়েছেন লাইসেন্স নবায়নের জন্য আবেদন করা ঠিকাদাররা।

ঠিকাদারদের অভিযোগ, তারা সময়মতো নবায়নের জন্য লাইসেন্স পৌরসভায় জমা দিয়েছেন। তাদের টাকাও ব্যাংকে জমা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু পৌরসভার মেয়র নুরুনবী সরকার স্বাক্ষর না করায় তারা দরপত্র সংগ্রহ করতে পারেননি।  

তারা জানান, পৌরসভা তিন/চারজন নিজস্ব লোকের লাইসেন্স নবায়ন করেছে। যাতে ওই তিন/চারজন ছাড়া কেউ দরপত্র সংগ্রহ করতে না পারেন। মেয়র নিজে কাজটি করার জন্য এ পাঁয়তারা শুরু করেছেন।

মেসার্স এস এস ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের সত্ত্বাধিকারী রাজু আহমেদ জানান, পৌর কর্তৃপক্ষ ইপিআর বহির্ভূতভাবে বন্ধের সময় দরপত্র আহ্বান করেছেন। যাতে কেউ লাইসেন্স নবায়ন বা এতে অংশ নিতে না পারেন। লাইসেন্স নবায়নের জন্য ব্যাংকে টাকা জমা দেওয়া থেকে শুরু করে সব কাজ শেষ হলেও পৌর মেয়র স্বাক্ষর না করায় দরপত্র সংগ্রহ করতে পারেননি। বুধবার (২০ জুলাই) বিকেলে ৩টা পর্যন্ত ছিল দরপত্র সংগ্রহের শেষ সময়।

মেসার্স মবিন এন্টারপ্রাইজের সত্ত্বাধিকারী সুমন রহমান জানান, তিনি ১৮ জুলাই ট্রেড লাইসেন্সের ফি বাবদ কালিহাতী পৌরসভার লাইসেন্স পরিদর্শক মো. বাবর হোসেনের কাছে তিন হাজার ৩০০ টাকা এবং লাইসেন্স বই নবায়নের জন্য দুই হাজার ৩০০ টাকা জমা দেন। আজ (২০ জুলাই) দরপত্র সংগ্রহ করার শেষ দিন ছিল। কিন্তু তার নবায়নকৃত ট্রেড লাইসেন্সে পৌর মেয়র স্বাক্ষর না করায় তিনি দপপত্র সংগ্রহ করতে পারেননি।

দকালিহাতী পৌরসভার লাইসেন্স পরিদর্শক মো. বাবর হোসেন জানান, ২০ জন ঠিকাদার তাদের ট্রেড লাইসেন্স নবায়নের জন্য সময়মতোই তার কাছে জমা দিয়েছেন। ব্যাংকেও টাকা জমা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া তিনি আর কিছু জানেন না।

কালিহাতী পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা সীমান্ত দীপ সূত্রধর বাংলানিউজকে জানান, ২০টি ট্রেড লাইসেন্স নবায়নের জন্য তিনি সব কাজ শেষ করেছেন। এখন শুধু মেয়র সাহেবের স্বাক্ষর বাকি রয়েছে।  

কালিহাতী পৌরসভার মেয়র মো. নুরুনবী সরকার বাংলানিউজকে জানান, দরপত্র আহ্বানে কোনো অনিয়ম হয়নি। দুই/তিনজন ঠিকাদার শুধু শুধু অভিযোগ করছেন। সবার ট্রেড লাইসেন্সই নবায়ন করা হয়েছে।  

তবে ২০ জন ঠিকাদারের ট্রেড লাইসেন্সে স্বাক্ষরের বিষয়ে তিনি বলেন, আমি একটু ডাক্তার দেখানোর জন্য ময়মনসিংহ যাচ্ছি। ফিরে এসে সেগুলো স্বাক্ষর করে দেব।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২৫ ঘণ্টা, জুলাই ২০, ২০২২
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।