ফরিদপুর: ভাগ্য ফেরাতে লিবিয়ায় গিয়ে মানবপাচারকারী চক্রের খপ্পড়ে পড়েছেন ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার যুবক জনি মোল্যা। মুক্তিপণ দাবি করে প্রতিদিনই তাকে মারধর ও নির্যাতনের দৃশ্য বাবা-মাকে দেখানো হচ্ছে ভিডিও কলে।
জনির বাড়ি ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার কামালদিয়া ইউনিয়নের চাঁদপুর গ্রামে। পিতার নাম কবির মোল্যা। দুই বোন ও এক ভাই তারা। বিয়ের দুই মাস পর গত বছরের ডিসেম্বরে সে ভাগ্যের সন্ধানে মানবপাচারকারী চক্রের মাধ্যমে লিবিয়ায় যান।
ভুক্তভোগীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত ৮ মাস আগে লিবিয়ার উদ্দেশে পাড়ি জমান জনি। তবে সেখানে গত ২১ দিন ধরে মানবপাচারকারী এক চক্রের কবলে পড়েছেন এই যুবক। জনিকে বেঁধে মারধরের ভিডিও প্রতিনিয়ত পরিবারের কাছে পাঠানোর পাশাপাশি মুক্তিপণ হিসেবে ৩ লাখ টাকা দাবি করে চক্রটি। তাদের পাঠানো একটি অ্যাকাউন্টে সেই টাকা পাঠানোর পর আরও টাকা চাওয়া হচ্ছে বলে ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ। অন্যথায় জনিকে হত্যা করার হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
ছেলেকে বাঁচাতে অবশেষে থানায় মামলা করেছে ভুক্তভোগী পরিবার। অভিযোগ পেয়ে ফেনী থেকে এই চক্রের এক সদস্য মাহাবুবুর রহমান ভুঁইয়া রাজীবকে গ্রেফতার করে পুলিশ। যার অ্যাকাউন্টেই জনির বাবা মুক্তিপণের টাকা পাঠিয়েছিলেন। এই রাজীব মানবপাচারকারী চক্রের মাস্টারমাইন্ডদের একজন বলে পুলিশ জানিয়েছে। তার অ্যাকাউন্টে অস্বাভাবিক রকমের লেনদেনের তথ্য পেয়েছে পুলিশ। এরই মধ্যে রাজীবকে ৩ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।
এদিকে মামলা করায় জনির ওপর নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে অপহরণকারীরা। এখন তাদের দাবি, মামলা তুলে নিতে হবে নতুবা ৬০ লাখ টাকা দিতে হবে জনিকে বাঁচাতে। একই সঙ্গে জনির বাবার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেয়ারও হুমকি দেয়া হচ্ছে।
এ ব্যাপারে ফরিদপুরের মধুখালী সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার সুমন কর বলেন, গত ২৯ জুলাই এ ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে যে অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো হয়েছিল তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সিআইডি এবং ন্যাশনাল ক্রাইম ব্যুরোর (এনসিবি) কাছেও সহায়তা চাওয়া হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনা এবং জনিকে উদ্ধারের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও তিনি জানান।
বাংলাদেশ সময়: ২০০৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১০, ২০২২
ইআর